ডাস্টবিন নয় বাসা থেকেই ময়লা নেবে চসিক

নগরী থেকে ডাস্টবিন সরানোর পরিকল্পনা করেছে চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশন (চসিক)। দুর্গন্ধমুক্ত নগরী গড়ে তুলতে বাসা-বাড়ি থেকেই ময়লা-আবর্জনা সংগ্রহ করা হবে। এ লক্ষ্যে জরিপ কাজও শুরু হয়েছে। এমনটাই জানালেন চসিক মেয়র আ জ ম নাছির উদ্দিন।

তিনি বলেন, ক্লিন সিটি, গ্রিন সিটি প্রকল্পের আওয়তায় নগরীর সৌন্দর্য বর্ধনে বিলবোর্ড উচ্ছেদের পর দুর্গন্ধ ও দূষণমুক্ত নগরী গড়ে তুলতে এবার ডাস্টবিন ব্যবহার না করে বাসা-বাড়িতে গিয়ে ময়লা-আবর্জনা তুলে আনার উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। এ নিয়ে চলছে নানা প্রস্তুতিও।

চসিক সূত্র জানায়, বর্তমানে চট্টগ্রাম মহানগরে প্রায় এক হাজার ৩৫০টি ডাস্টবিন রয়েছে। যেগুলো বসানো হয়েছে খাল-নালার পাশে ফুটপাত এবং সড়কের একাংশে। ডাস্টবিনের কারণে যান চলাচলে ব্যাঘাত ঘটে। ফুটপাত দিয়ে সাধারণ মানুষ হাঁটতে পারেন না।

এসব ডাস্টবিন থেকে প্রতিরাতে তিন শতাধিক ট্রাক আবর্জনা সংগ্রহ করে টিজিতে ফেলা হয়। একাজে নিয়োজিত রয়েছেন চসিকের প্রায় এক হাজার ৮০০ কর্মী। যাদের মধ্যে ৫০ জন প্রতিবন্ধী। এই বিপুল পরিমাণ জনবল এবং গাড়ি ব্যবহার করে সিটি করপোরেশন প্রতিদিন নগরী থেকে আবর্জনা পরিষ্কার করলেও কোথাও না কোথাও থেকে যায়। তাছাড়া ডাস্টবিন থেকে আবর্জনা নিয়ে গেলেও দুর্গন্ধ যায় না। ডাস্টবিন প্রতিনিয়ত খাল-নালায় গড়িয়ে পড়ে আবর্জনা পড়ে তা ভরাট হয়ে যায়। বিষয়টি নজরে আসে সিটি মেয়র আ জ ম নাছির উদ্দিনের। তিনিই ডাস্টবিন ব্যবহার না করে ময়লা-আবর্জনা সরিয়ে নেওয়ার বিষয়ে উদ্যোগ নেন।

আ জ ম নাছির উদ্দিন এ প্রসঙ্গে বলেন, ডাস্টবিন থেকে রাতে যতই ময়লা আবর্জনা সংগ্রহ করা হোক না কেন, কিছু না কিছু আবর্জনা রয়েই যায়। ডাস্টবিনকে শতভাগ দুর্গন্ধমুক্ত করা যায় না। তাছাড়া ডাস্টবিন স্থাপন করতে হয়েছে সড়ক কিংবা ফুটপাতে। এতে পথচারী এবং যানবাহন চলাচল দুটোতেই বিঘœ ঘটে। তাই শহরে আর ডাস্টবিন না রাখার সিদ্ধান্ত নিয়েছি। এ বিষয়ে জরিপ কাজ শুরু হয়েছে। যত তাড়াতাড়ি সম্ভব কার্যক্রম শুরু করা হবে। তুলে আনা হবে সড়ক এবং ফুটপাত থেকে ডাস্টবিন। এতে নগরী দুর্গন্ধমুক্ত হওয়ার পাশাপাশি সড়ক এবং ফুটপাত বাধামুক্ত হবে। এর প্রস্তুতি হিসেবে পরিচ্ছন্ন বিভাগে জনবিন্যাস করা হবে। আগামি দুই মাসের মধ্যে এই কর্মসূচি চালু করা হবে। ছয় মাসের মধ্যে প্রতিটি ওয়ার্ডে কার্যক্রম বাস্তবায়ন করার লক্ষ্য নিয়ে কাজ চলছে বলে জানান তিনি।

জানতে চাইলে চসিকের প্রধান পরিচ্ছন্ন কর্মকর্তা শফিকুল মান্নান সিদ্দিকী ঢাকাটাইমসকে বলেন, প্রতিটি বাসা থেকে আবর্জনা সংগ্রহের প্রস্তুতি চলছে। একেকটি ভ্যান গাড়িতে ৩৫০ থেকে ৪০০ বাসার আবর্জনা সংগ্রহ করা যায় একথা উল্লেখ করে তিনি বলেন, প্রাথমিকভাবে প্রতি ওয়ার্ডের সেকেন্ডারি টেনজিং গ্রাউন্ডে (টিজি) রাখা হবে। সেখান থেকে ট্রাকে করে মূল টিজিতে নিয়ে ফেলা হবে। তবে আগামি জুন-জুলাইয়ের দিকে জাইকা ৩৬টি কমপেক্টর গাড়ি দিবে। ওইসব গাড়িতে আবর্জনা ভরার পর তা কমপেক্ট হয়ে কমে যাবে।

তিনি বলেন, বর্তমানে চার-থেকে পাঁচ টন ধারণ ক্ষমতাস¤পন্ন ট্রাকে দেড় থেকে দুই টন আবর্জনা বহন করা যায়। কারণ আবর্জনা ওজনে অনেক হালকা। কমপেক্ট করে আবর্জনা বহন করা গেলে এই সমস্যা দুর হবে। তাছাড়া তখন আর সেকেন্ডারি টিজির প্রয়োজন হবে না। আবর্জনা বাসা বাড়ি থেকে কমপেক্ট গাড়িতে করে সরাসরি টিজিতে চলে যাবে।



মন্তব্য চালু নেই