ডিভোর্স এড়াতে বাংলার এই ‘অবাক’ মন্দিরে আসেন দম্পতিরা

শিবের মতো স্বামী পেতে সোমবার অনেক কুমারী মেয়ে দিনভর উপোস করেন। শিবের মাথায় ফুল, জল, দুধ ঢেলে ভক্তি ভরে পুজো। এত সবের পরে মহিলা ভক্তরা হয়তো মনের মতো স্বামীও পেলেন, কিন্তু তার পরে? দাম্পত্য সুখের কী গ্যারান্টি আছে? আজকাল আবার বহু সংসারের দাম্পত্য কলহ চলে যাচ্ছে আদালতে। তার পরেই ডিভোর্স।

তাই বলে কি এর কোনও সুরাহা নেই? অবশ্যই আছে। আপনি কি শিব-পার্বতীর মন্দিরে গাঁটবন্ধনের কথা শুনেছেন কখনও? না শুনলে, মহাশিবরাত্রিতে বৈদ্যনাথের মন্দিরে চলে যান। আর বেঁধে আসুন লাল আর হলুদ কাপড়ের ফালি অর্থাৎ গাঁটছড়া। মন্দির চত্বরে পণ্ডারাই তৈরি করছেন এই গাঁটবন্ধন বা গাঁটছড়া। ৫০ মিটারের এই কাপড়ের টুকরোই নাকি গ্যারান্টি দেবে দাম্পত্য সুখের। তাও আবার নাকি ৫০ বছরের জন্য। এমনটাই বিশ্বাস মন্দিরে আগত সমস্ত ভক্তদের।

বাবা বৈদ্যনাথ মন্দিরের চূড়া থেকে জয়দুর্গার মন্দিরের চূড়ায় গাঁটছড়া বাঁধার রেওয়াজ রয়েছে কুসুমডিঙাতে। অর্থাৎ মহাশিবরাত্রির পরের দিন। স্থানীয় ভাষায় পান্নার দিন স্বামী-স্ত্রী বা নবদম্পতি লাল-হলুদের গাঁটবন্ধন বাঁধেন। মানুষের বিশ্বাস, ডিভোর্স এড়াবার মোক্ষম দাওয়াই নাকি এই গাঁটবন্ধন। মন্দিরের পণ্ডা স্বপন চক্রবর্তী জানান, ‘যাঁরা শিব-পার্বতীর মতো চির অমর বন্ধনের মনস্কামনা করেন, বিশেষ মন্ত্রপূতঃ গাঁটছড়া বাঁধলে তাঁদের সেই ইচ্ছে পূরণ হয়।’

আসানসোল থেকে কাছেই বৈদ্যনাথ ধাম। যা ছিল এক সময়ে বাংলার মানভূম জেলার অর্ন্তভুক্ত। পরে তা বিহারে (বর্তমানে ঝাড়খণ্ড) চলে যায়। তবে মন্দিরের মূল পুরোহিত ও পণ্ডারা বংশ পরম্পরায় সকলেই বাঙালি।

মন্দিরটি জয়-দূর্গা নামেও খ্যাত। কথিত আছে, কৈলাশ পর্বত থেকে জ্যোতির্লিঙ্গ লঙ্কায় নিয়ে যাওয়ার পথে লঙ্কেশ্বর রাবণ এখানেই নামিয়ে ফেলেছিলেন। সেই থেকে শিবলিঙ্গটি বৈদ্যনাথ নামে খ্যাত হয়।

এবার মনে হতেই পারে যে কী করে যাবেন এখানে। তাহলে, কলকাতা থেকে ট্রেনে সরাসরি চলে আসুন যশিডি স্টেশনে। সেখান থেকে অটো করে কুড়ি মিনিটের পথ। পুজো দিয়ে আসুন ভক্তি ভরে। উপবাস যদি সহ্য না হয় তবে দিনভর পেড়া খেয়ে পুজো করতে পারেন। এটাই এখানকার রীতি। বিনা চিনির শুদ্ধ কেশর পেড়া নিয়ে যেতে পারেন বাড়ির জন্যও।



মন্তব্য চালু নেই