ড. এমাজউদ্দীন বিএনপির কেউ নন

জামায়াতে ইসলামীকে ২০ দলীয় জোটে না রাখার বিষয়ে বিএনপির চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার সিদ্ধান্তের কথা জানিয়েছেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক ভিসি অধ্যাপক ড. এমাজউদ্দীন আহমদ। তবে এই বক্তব্য সম্পর্কে এখনো নেতারা কিছু না জানলেও তারা বলছেন, ড. এমাজউদ্দীন বিএনপির একজন শুভাকাঙ্ক্ষী হলেও তিনি দলের কেউ নন। সুতরাং তিনি কী বলেছেন, সেটা তিনিই ভালো বলতে পারবেন।

মঙ্গলবার দুপুরে জাতীয় প্রেসক্লাবে এক মতবিনিময় সভায় জামায়াতকে নিয়ে ড. এমাজউদ্দীন আহমদের দেয়া বক্তব্যের প্রতিক্রিয়ায় বিএনপির নেতারা এ কথা বলেন।

দেশের বিরাজমান পরিস্থিতির প্রেক্ষাপটে এ মতবিনিময় সভার আয়োজন করে বঙ্গবীর কাদের সিদ্দিকীর (বীরউত্তম) নেতৃত্বাধীন কৃষক শ্রমিক জনতা লীগ। ড. এমাজউদ্দীন আহমদ বিএনপির থিঙ্কট্যাঙ্ক হিসেবে দল ও দলটির নেতাকর্মীদের কাছে পরিচিত।

বিএনপির সঙ্গে জাতীয় ঐক্যের পথে জামায়াতে ইসলামীকে সব সময় বড় বাধা হিসেবে উল্লেখ করছে ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগ। সে প্রসঙ্গে মতবিনিময় সভায় ড. এমাজউদ্দীন আহমদ বলেন, জাতীয় ঐক্য গড়ে তোলার ক্ষেত্রে একটি রাজনৈতিক দল বড় প্রতিবন্ধকতা বলে মনে হয়। কিন্তু যেকোনো মুহূর্তে ক্ষমতাসীন দল ওই দলটিকে নিষিদ্ধ করতে পারে।

এ প্রসঙ্গে তিনি আরো বলেন, ‘বর্তমানে দেশের বিরোধী দল, সাংবিধানিকভাবে না হলেও দেশের বিরোধী দল বেগম খালেদা জিয়ার দল বিএনপি। তিনি সিদ্ধান্ত নিয়েছেন যে, ২০ দলের মধ্যে অন্ততপক্ষে এই দলটিকে আর ওইভাবে রাখার কোনো প্রয়োজন নেই। তিনি বুঝতে পেরেছেন, ওই দলটিকে রাখলে যে লায়াবিলিটি আসে সেটা তিনি বহন করতে চান না। সুতরাং এই দিক থেকে দেখলে প্রতিবন্ধকতা (জাতীয় ঐক্যের ক্ষেত্রে) নেই।’

এ বিষয়ে জানতে চাইলে বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেন, ‘ড. এমাজউদ্দীন সাহেব বিএনপির একজন শুভাকাঙ্ক্ষী। তিনি দলের কেউ নন। ওই কথাটা তিনি বলেছেন। সুতরাং তাকেই জিজ্ঞাসা করুন। এ ব্যাপারে তিনিই বলতে পারবেন।’

দলটির স্থায়ী কমিটির সদস্য নজরুল ইসলাম খান বলেন, ‘এই রকম কোনো সিদ্ধান্ত বেগম খালেদা জিয়া নিয়েছেন বলে আমি অন্তত জানি না। এমাজউদ্দীন সাহেব বলে থাকলে উনি হয়তো জানেন, তার সঙ্গে কথা বলুন।’

প্রসঙ্গত, গুলশানের রেস্টুরেন্টে সন্ত্রাসী হামলার পর বেগম খালেদা জিয়ার ‘সন্ত্রাস বিরোধী জাতীয় ঐক্য’র আহ্বানে সরকারের কাছ থেকে সাড়া না পাওয়ায় বিএনপি এখন সন্ত্রাস বিরোধী ‘বৃহত্তর জাতীয় ঐক্য’ গঠনের পথে এগুচ্ছে। ২০ দলীয় জোট এবং ১৪ দলীয় জোটের বা্ইরে অবস্থানরত মুক্তিযুদ্ধের পক্ষের ও প্রগতিশীল দলগুলোকে ঐক্যবদ্ধ করে একটা প্লাটফর্ম গঠন করতে চায় বিএনপি। তবে এ ক্ষেত্রে জাতীয় কনভেনশনে ২০ দলকে রেখে শুধু জামায়াতকেও বাদ দেয়া হতে পারে।

জানা যায়, খালেদা জিয়ার নেতৃত্বে ‘বৃহত্তর জাতীয় ঐক্য’ গঠনে ওই দলগুলোকে ঐক্যবদ্ধ করতে অধ্যাপক ড. এমাজউদ্দীন আহমদ এবং বিএনপির রাজনীতির পরামর্শক ও সমালোচক গণস্বাস্থ্য কেন্দ্রের প্রতিষ্ঠাতা ট্রাস্টি ডা. জাফরুল্লাহ চৌধুরী প্রাথমিক পর্যায়ের কাজ করছেন।

এদিকে, বিএনপির পক্ষ থেকে দলের মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর এবং ভাইস চেয়ারম্যান আবদুল্লাহ আল নোমানকে এই দলগুলোর সঙ্গে যোগাযোগের দায়িত্ব দেয়া হয়েছে।



মন্তব্য চালু নেই