ঢাবি’র প্রবেশপত্র জালিয়াতি: একজনের সাজা, আরেকজন আটক

‘ভুয়া’ প্রবেশপত্র দেখিয়ে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ‘গ’ ইউনিটের ভর্তি পরীক্ষায় অংশ নেওয়ায় এক শিক্ষার্থীকে এক বছরের কারাদণ্ড দিয়েছে ভ্রাম্যমাণ আদালত; তার এক সহযোগীকে থানায় সোপর্দ করা হয়েছে।

এছাড়া পরীক্ষায় ‘জালিয়াতির পরিকল্পনার’ অভিযোগে আগের রাতে আটক করা হয়েছে আরও তিনজনকে।

সাজাপ্রাপ্ত শিক্ষার্থীর নাম সঞ্জয় কুমার শাহানী। শুক্রবার সকাল ১০টা থেকে এক ঘণ্টার এই পরীক্ষা চলাকালে বিশ্ববিদ্যালয়ে লেকচার থিয়েটার কেন্দ্রের একটি কক্ষ থেকে তাকে আটক করা হয়।

দুপুরে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর অফিসে ভ্রাম্যমাণ আদালত বসিয়ে ঢাকা জেলা প্রশাসনের নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট শারমিন সুলতানা তাকে সাজা দেন।

পরে সঞ্জয়ের বন্ধু মো. মেহেদীকে শাহবাগ থানায় সোর্পদ করে বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ।

ম্যাজিস্ট্রেট শারমিন সুলতানা সাংবাদিকদের বলেন, ‘নকল প্রবেশপত্র’ দেখিয়ে পরীক্ষা দেওয়ায় পাবিলক পরীক্ষা অপরাধ আইনের ৩ (খ) ধারা অনুযায়ী সঞ্জয় কুমার শাহানীকে এক বছরের বিনাশ্রম কারাদণ্ড দেওয়া হয়।

আর মেহেদীর বিরুদ্ধে নিয়মিত মামলা করার জন্য বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনকে পরামর্শ দেওয়া হয়েছে বলে জানান তিনি।

বিশ্ববিদ্যালয়ের ভারপ্রাপ্ত প্রক্টর অধ্যাপক আমজাদ আলী জানান, সঞ্জয় ৭০৬৬৭৪ রোল নম্বরের প্রবেশপত্র নিয়ে পরীক্ষা দিতে আসে। একই নম্বরের প্রবেশপত্র নিয়ে মেহেদী হাসান নামের আরেক পরীক্ষার্থী এলে ওই কক্ষের দায়িত্বরত শিক্ষক দুই জনকে আলাদা আসনে বসিয়ে পরীক্ষা নেন। পরীক্ষা শেষে দুজনকেই আটক করা হয়।

“পরীক্ষা করে দেখা যায়, সঞ্জয়ের প্রবেশপত্র জাল। এ কারণে ভ্রাম্যমাণ আদালত তাকে এক বছরে কারাদণ্ড দিয়েছে। অন্যজনকে ছেড়ে দিয়েছে।”

প্রক্টর কার্যালয়ে জিজ্ঞাসাবাদের সময় সঞ্জয় জানান, তিনি এবং মেহেদী হাসান ও মো. মেহেদী একই স্কুল ও কলেজে লেখাপড়া করেছেন। কিন্তু মো. মেহেদী এইচএসসি পাস করতে না পারায় এবার ভর্তি পরীক্ষা দিতে পারেনি।

সঞ্জয়ের দাবি, খুলনার এক কম্পিউটার সেন্টারে মো. মেহেদী তার ভর্তি পরীক্ষার ফরম পূরণ করে দিয়েছিলেন। কিন্তু পরীক্ষার হলে এসে তিনি দেখেন, আরেক মেহেদীর সঙ্গে তার রোল নম্বর মিলে গেছে।

সঞ্জয়ের বক্তব্য শুনে তার বন্ধু মো. মেহেদীকেও ফোন করে প্রক্টর অফিসে ডেকে আনা হয়।

জিজ্ঞাসাবাদে মো. মেহেদী বলেন, এক কম্পিউটার সেন্টারে তিনি ফরম পূরণের জন্য টাকা দিয়েছিলেন। পরে সেখান থেকেই প্রবেশপত্র সংগ্রহ করে সঞ্জয়কে দেন।

এদিকে ভর্তি পরীক্ষায় জালিয়াতির পরিকল্পনার অভিযোগে আগের রাতে তিনজনকে আটক করেছে গেয়েন্দা পুলিশ।

তাদের কাছ থেকে পরীক্ষার হলে যোগাযোগ করার জন্য অত্যাধুনিক কিছু সরঞ্জামও উদ্ধার করা হয়েছে বলে প্রক্টর আমজাদ আলী জানান।

তিনি জানান, আটক তিনজনের মধ্যে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের আইন বিভাগের তৃতীয় বর্ষের এক শিক্ষার্থী রয়েছেন, যার নাম বিজয়। বাকি দুজন ভর্তি পরীক্ষার্থী।

বৃহস্পতিবার রাত সাড়ে ৩টার দিকে পশ্চিম রাজাবাজার থেকে প্রথমে বিজয়কে এবং তার দেওয়া তথ্যের ভিত্তিতে শুক্রবার সকাল সোয়া ৮টার দিকে বাকি দুজনকে আটক করে গেয়েন্দা পুলিশ।

অধ্যাপক আমজাদ আলী বলেন, “তাদের কাছে পাওয়া ডিভাইসগুলো দেখতে এটিএম কার্ডের মতো। এর সঙ্গে কানে ব্যবহারের জন্য সুক্ষ্ম ডিভাইস ছিল, যা দিয়ে শিক্ষার্থীরা পরীক্ষার হলে বসেই বাইরে থেকে তথ্য পেতে পারে।”



মন্তব্য চালু নেই