তদন্ত প্রতিবেদন: ‘শ্যামল কান্তির থেকে জোর করে স্বাক্ষর নেওয়া হয়’

নারায়ণগঞ্জের পিয়ার সাত্তার লতিফ উচ্চবিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক শ্যামল কান্তি ভক্তের কাছ থেকে পদত্যাগপত্রে জোর করে স্বাক্ষর নেওয়া হয়। স্কুলের পরিচালনা পর্ষদ এ স্বাক্ষর নেয় বলে আদালতকে জানিয়েছে শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের তদন্ত কমিটি।

বৃহস্পতিবার অ্যাটর্নি জেনারেলের কার্যালয়ে জমা পড়া প্রতিবেদনে বিষয়টি উল্লেখ করা হয়েছে।

তদন্ত প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, যে ছাত্রের বক্তব্যের ভিত্তিতে বন্দর উপজেলার পিয়ার সাত্তার লতিফ উচ্চমাধ্যমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক শ্যামল কান্তির বিরুদ্ধে ধর্ম অবমাননার অভিযোগ আনা হয়েছিল, সেই শিক্ষার্থীও একেক সময় একেক কথা বলেছে।

যে প্রক্রিয়ায় শ্যামল কান্তিকে বরখাস্ত করা হয়েছিল, তা বিধিবহির্ভূত হওয়ায় ওই শিক্ষককে পুনর্বহাল করা হয়েছে বলে শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের প্রতিবেদনে বলা হয়েছে।

ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল মোতাহার হোসেন বলেন, চার দফা সুপারিশসহ কমিটি ওই প্রতিবেদন দিয়েছে।

এর আগে গত ১৮ মে নারায়ণগঞ্জে স্কুলশিক্ষককে কান ধরে ওঠবস করার ঘটনায় স্থানীয় সংসদ সদস্য সেলিম ওসমানসহ জড়িতদের বিরুদ্ধে কেন আইনগত ব্যবস্থা নেওয়ার নির্দেশ দেওয়া হবে না, তা জানতে চেয়ে রুল জারি করেন হাইকোর্ট। একই সঙ্গে এই ঘটনায় কী পদক্ষেপ নেওয়া হয়েছে, তা সংশ্লিষ্টদের তিন দিনের মধ্যে আদালতকে জানাতে বলা হয়।

প্রাক্তন অতিরিক্ত অ্যাটর্নি জেনারেল এম কে রহমান ও জ্যেষ্ঠ আইনজীবী মহসিন রশিদ পত্রিকায় প্রকাশিত শিক্ষকের কান ধরে ওঠবস করার ঘটনায় প্রতিবেদন আদালতে উপস্থাপন করেন। এরপর আদালত স্বতঃপ্রণোদিত হয়ে রুল জারি করেন।

গত ১৪ মে ধর্ম অবমাননার গুজব ছড়িয়ে নারায়ণগঞ্জের পিয়ার সাত্তার লতিফ উচ্চবিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক শ্যামল কান্তি ভক্তকে বিদ্যালয়ের ভেতরে অবরুদ্ধ করে মারধর করা হলে তিনি আহত হন। পরে স্থানীয় সাংসদ সেলিম ওসমানের উপস্থিতিতে তাকে কানে ধরিয়ে ওঠবস করানো হয়। এ ঘটনায় জড়িতদের বিচারের দাবিতে সামাজিক যোগাযোগের জনপ্রিয় মাধ্যম ফেসবুকে প্রতিবাদ ছড়িয়ে পড়ে। এর মধ্যেই সাময়িক বরখাস্তের চিঠিটি নারায়ণগঞ্জের ৩০০ শয্যার হাসপাতালে চিকিৎসাধীন শ্যামল কান্তি ভক্তের কাছে পৌঁছে দেওয়া হয়।

বিদ্যালয় ব্যবস্থাপনা কমিটির সভাপতি ফারুকুল ইসলামের স্বাক্ষর করা চিঠিতে শ্যামল কান্তি ভক্তকে চারটি অভিযোগে সাময়িক বরখাস্ত করার কথা বলা হয়েছে।



মন্তব্য চালু নেই