তনুর হত্যায় ক্যান্টনমেন্ট বোর্ড কর্তৃপক্ষের বক্তব্য চেয়ে রিট

কুমিল্লা ভিক্টোরিয়া কলেজের ছাত্রী ও নাট্যকর্মী সোহাগী জাহার তনু হত্যাকাণ্ডের বিষয়ে ক্যান্টনমেন্ট বোর্ড কর্তৃপক্ষের বক্তব্য জানতে চাওয়ার নির্দেশনা চেয়ে হাইকোর্টে রিট করা হয়েছে। সোমবার মানবাধিকার সংগঠন আইন ও সালিশ কেন্দ্র (আসক) বাদী হয়ে এই রিট আবেদনটি দায়ের করে।

হাইকোর্টের বিচারপতি মইনুল ইসলাম চৌধুরী ও বিচারপতি মো. ইকবাল কবিরের সমন্বয়ে গঠিত বেঞ্চে চলতি সপ্তাহে এই আবেদনের ওপর শুনানি হতে পারে বলে জানান আইনজীবীরা।

মানবাধিকার সংগঠন আইন ও সালিশ কেন্দ্র (আসক) এর পক্ষে শুনানি করবেন বাংলাদেশ বার কাউন্সিলের সদস্য আসকের আইনজীবী জেড আই খান পান্না।

তিনি বলেন, তনু হত্যার বিষয়ে দুটি ময়নাতদন্ত প্রতিবেদন দ্রুত সময়ের মধ্যে আদালতে দাখিলের নির্দেশনা চেয়ে হাইকোর্টে রিট করা হয়েছে। রিট আবেদনে সিআইডির তদন্তের অগ্রগতি প্রতিবেদন দাখিলেরও নির্দেশনা চাওয়া হয়েছে এবং ক্যান্টমেন্ট বোর্ডের বক্তব্য চাওয়া হয়েছে।

তিনি আরো বলেন, লাশের ময়না প্রতিবেদন ছাড়া তদন্তকারী কর্মকর্তা তদন্ত প্রতিবেদন দাখিল করতে পারবেন না। কেন ময়না তদন্ত প্রতিবেদন দাখিল করা হচ্ছে না সেই বিষয়ে ব্যাখ্যা তলব কর জানার জন্য আবেদন জানিয়েছি।

এছাড়া প্রথম ময়নাতদন্ত রিপোর্ট ভুল তথ্য দাখিল করায় জড়িতদের বিরুদ্ধে কী ব্যবস্থা নেয়া হয়েছে তা জানাতে নির্দেশনা চাওয়া হয়েছে। এই হত্যাকাণ্ডের বিষয়ে ক্যান্টনমেন্ট বোর্ড কর্তৃপক্ষের বক্তব্য জানতে চাওয়ার নির্দেশনা চাওয়া হয়েছে।

ঘটনার পর র্যাব কর্তৃক ভিকটিম ছাত্রীর বাবা-মাকে তাদের গ্রামের বাড়ি থেকে উঠিয়ে নিয়ে ক্যান্টনমেন্টের অতিথিশালায় রাখার কারণ জানাতে র্যাবের প্রতি নির্দেশনা চাওয়া হয়েছে।

এছাড়া তনুর মরদেহ যেখানে পড়েছিল সেই জায়গার মাটি কেন সরিয়ে ফেলা হল এবং এ বিষয়ে প্রতিবেদন দিতে র্যাব ও ক্যান্টনমেন্ট বোর্ডের প্রতি নির্দেশনা চাওয়া হয়েছে। রিট আবেদনটির ওপর মঙ্গলবার সম্ভব হলে শুনানি করা হবে। আর তা না হলে আগামী রোববার শুনানি হবে বলে জানান এই আইনজীবী।

গত ২০ মার্চ তনুর লাশ কুমিল্লার ময়নামতি সেনানিবাসের পাওয়ার হাউসের অদূরে কালভার্টের ২০ থেকে ৩০ গজ পশ্চিমে ঝোপ থেকে উদ্ধার করা হয়। ২১ মার্চ তনুর লাশের প্রথম ময়নাতদন্ত হয়। ওই ময়না তদন্তের রিপোর্টে তাকে ধর্ষণের কোনো আলামত পাওয়া যায়নি বলে উল্লেখ করা হয়। পরে ২৮ মার্চ আদালত নির্দেশ দেন তনুর লাশ কবর থেকে উত্তোলন করে দ্বিতীয় ময়নাতদন্ত করার।

এরই পরিপ্রেক্ষিতে ৩০ মার্চ তনুর লাশ মুরাদনগর উপজেলার মির্জাপুর গ্রামের বাড়ির কবরস্থান থেকে উত্তোলন করা হয়। এরই মধ্যে সিআইডি ডিএনএ টেস্ট করে তনুকে তিনজন মিলে ধর্ষণের আলামত পায়। কিন্তু দ্বিতীয় ময়না তদন্তের পর ৫৯ দিন পার হলেও ওই প্রতিবেদন প্রকাশ করেনি মেডিকেল বোর্ড।

ময়নাতদন্তকারী মেডিকেল বোর্ডেরর চিকিৎসকরা বলেছেন, ডিএনএ প্রতিবেদন ছাড়া কোনো অবস্থাতেই তারা ময়নাতদন্ত প্রতিবেদন দেবেন না। এ নিয়ে চিঠি চালাচালি চলছে মেডিকেল বোর্ড ও মামলার তদন্তকারী সংস্থা সিআইডির মধ্যে। এ বিষয়ে বিভিন্ন গণমাধ্যমে প্রকাশিত প্রতিবেদনও আবেদনে তুলে ধরা হয়েছে। ওই আবেদনের ভিত্তিতে মানবাধিকার সংগঠন আসক রোববার হাইকোর্টে রিট আবেদন দায়ের করেন।



মন্তব্য চালু নেই