‘তনু হত্যা পরিকল্পিত, মিশনে অংশ নেয় একাধিক ব্যক্তি’

সোহাগী জাহান তনু হত্যার তদন্তকারী কর্মকর্তা কুমিল্লা ও নোয়াখালী অঞ্চলের বিশেষ পুলিশ সুপার ড. নাজমুল করিম বলেছেন, ‘তনু হত্যা একটি পরিকল্পিত হত্যাকাণ্ড। এর সাথে একাধিক ব্যাক্তি জড়িত থাকতে পারে। যদিও চিকিৎসকদের প্রতিবেদনে এটিকে হত্যাকাণ্ড বলা হয়নি।’

মঙ্গলবার সন্ধ্যায় কুমিল্লার সিআইডি কার্যালয়ে সাংবাদিকদের সাথে এসব কথা বলেন ড. নাজমুল করিম।

এসময় তিনি জানান, তনু হত্যাকাণ্ডে দায়ের করা মামলায় এ পর্যন্ত অর্ধশতাধিক ব্যক্তিকে জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়েছে।

এর আগে সকালে তনু হত্যার তদন্ত সহায়ক কমিটির প্রধান সিআইডি ঢাকার বিশেষ পুলিশ সুপার আবদুল কাহার আকন্দের নেতৃত্বে কুমিল্লা ও ঢাকার একটি দল কুমিল্লা সেনানিবাস পরিদর্শন করে।

দুপুরে দলটি কুমিল্লা সিআইডি কার্যালয়ে এসে তনুর প্রথম ময়নাতদন্তকারী চিকিৎসক প্রভাষক শারমিন সুলতানাকে জিজ্ঞাসাবাদ করে। এসময় উপস্থিত ছিলেন তনু হত্যা মামলার তদন্ত কর্মকর্তা গাজী ইব্রাহীমসহ অন্যান্যরা।

এর আগে গত ১০ এপ্রিল কুমিল্লা সিআইডি কার্যালয়ে তনু হত্যাকাণ্ডের প্রথম ময়নাতদন্তকারী দুই চিকিৎসককে ঘণ্টাব্যাপী জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়েছিল। সে সময় ডা. শারমিন সুলতানা ছাড়াও উপস্থিত ছিলেন কুমিল্লা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের ফরেনসিক বিভাগের প্রধান ডা. কামদা প্রসাদ সাহা।

ওইদিনই কুমিল্লা পরিদর্শন করেছিলেন সিআইডির ডিআইজি (ক্রাইম-ইস্ট) মাহবুব মোহসিনসহ উচ্চ পর্যায়ের কর্মকর্তারা। তারা কুমিল্লা সিআইডি কার্যালয়ে তনু হত্যা মামলার বিষয়ে বৈঠক, ঘটনাস্থল পরিদর্শন ও তনুর পরিবারের সদস্যদের সঙ্গে দেখাও করেছিলেন।

প্রসঙ্গত, গত ২০ মার্চ রাতে কুমিল্লা সেনানিবাস এলাকার একটি জঙ্গল থেকে তনুর মৃতদেহ পাওয়া যায়। তাকে হত্যা করে মৃতদেহ ফেলে রেখে যায় দুর্বৃত্তরা। এ ঘটনায় পরদিন তনুর বাবা বাদী হয়ে মামলা দায়ের করেন।

৩১ মার্চ সন্ধ্যায় জেলা গোয়েন্দা শাখা (ডিবি) থেকে মামলাটি পুলিশের অপরাধ তদন্ত বিভাগের (সিআইডি) কাছে হস্তান্তর করা হয়। বর্তমানে মামলাটি তারাই তদন্ত করছে।

প্রাথমিকভাবে পুলিশ ধর্ষণের পর হত্যা করা হয়েছে বলে অনুমান করলেও তনুর প্রথম ময়নাতদন্ত রিপোর্টে ধর্ষণের কোনো আলামত পাওয়া যায়নি বলে দাবি করা হয়। ঠিক কী কারণে তার মৃত্যু হয়েছে এ ব্যাপারে সুনির্দিষ্ট করে কিছু না বলায় প্রতিবেদন নিয়েও সমালোচনা হয়।

অবশ্য ৩০ মার্চ দ্বিতীয়বার ময়নাতদন্তের জন্য কবর থেকে মরদেহ তুলে নমুনা নেয়া হয়। তদন্ত কর্মকর্তারা সেই প্রতিবেদনের জন্য অপেক্ষায় ছিলেন।

এ ঘটনা তদন্তে র‌্যাব ও পুলিশসহ একাধিক গোয়েন্দা সংস্থা মাঠে নামে। এ হত্যাকাণ্ডের ঘটনায় দোষীদের শাস্তির দাবিতে সারাদেশে চলে বিক্ষোভও। তবে হত্যাকাণ্ডের কিছুদিন পরে সেনা সদর দপ্তর থেকে এক বিবৃতিতে জানানো হয়, তারাও তনুর ঘটনায় অত্যন্ত মর্মাহত। এ ব্যাপারে দায়িত্বপ্রাপ্তদের সর্বোচ্চ সহযোগিতা করারও আশ্বাস দেয়া হয়।



মন্তব্য চালু নেই