তারেক-মামুনের রায় কাল

অর্থপাচারের মামলায় বিএনপির সিনিয়র ভাইস চেয়ারম্যান তারেক রহমান ও তার বন্ধু গিয়াস উদ্দিন আল মামুনের খালাসের রায়ের বিরুদ্ধে দুর্নীতি দমন কমিশনের (দুদক) আপিলের রায় বৃহস্পতিবার হাইকোর্টে ঘোষণা করা হবে।

গিয়াস উদ্দিন আল মামুনের আইনজীবী ব্যারিস্টার কায়সার কামাল আজ (বুধবার) সকালে এই তথ্য নিশ্চিত করেছেন।

হাইকোর্টের বিচারপতি এম ইনায়েতুর রহিম ও বিচারপতি জেবিএম হাসানের সমন্বয়ে গঠিত বেঞ্চ এই রায় ঘোষণা করবেন। বুধবার প্রকাশিত হাইকোর্টের দৈনন্দিন কার্যতালিকায় বৃহস্পতিবারের তারিখে ৪ নম্বরে মামলাটি রায়ের জন্য রাখা হয়েছে।

নিম্ন আদালতে তারেকের খালাসের রায়ের বিরুদ্ধে দুর্নীতি দমন কমিশনের আপিল এবং দণ্ডাদেশের বিরুদ্ধে মামুনের করা আপিলের ওপর শুনানি শেষে গত ১৬ জুন এই বেঞ্চ মামলাটি রায়ের জন্য অপেক্ষমান (সিএভি) রাখেন। বিচারিক আদালতের সাজার রায়ের বিপক্ষে গিয়াস উদ্দিন আল মামুন আপিল করেছিলেন। আপিলে সাজা বাতিলের আবেদন জানানো হয়।

ঘুষ হিসেবে আদায়ের পর ২০ কোটি টাকা বিদেশে পাচারের অভিযোগে ২০০৯ সালের ২৬ অক্টোবর ঢাকা ক্যান্টনমেন্ট থানায় এই মামলা করে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)।

২০১৩ সালের ১৭ নভেম্বরে বিচার কার্যক্রম শেষে ঢাকার তৃতীয় বিশেষ জজ মো. মোতাহার হোসেনের আদালত বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার বড় ছেলে তারেক রহমানকে বেকসুর খালাস দেন। তার বন্ধু ও ব্যবসার অংশীদার গিয়াসউদ্দিন আল মামুনকে সাত বছরের কারাদণ্ড দেয়া হয়। একই সঙ্গে ৪০ কোটি টাকা জরিমানা করেন মামুনকে।

মামলা হওয়ার পর থেকে বিচার পক্রিয়া শুরু এবং পুরো বিচার প্রক্রিয়াই অনুপস্থিত ছিলেন তারেক রহামান। গত আট বছর ধরে তিনি ইংল্যান্ডে অবস্থান করছেন। অপর দিকে তার বন্ধু মামুন জরুরি অবস্থায় গ্রেফতারের পর থেকেই কারাগারে।

তারেকের খালাসের রায়ের বিরুদ্ধে দুদক ২০১৩ সালের ৫ ডিসেম্বর আপিলের আবেদন করেন। শুনানি শেষে ২০১৪ সালের ১৯ জানুয়ারি হাইকোর্ট দুদকের আপিল গ্রহণ করে আসামি তারেককে আত্মসমর্পণ করতে নির্দেশ দেন। প্রবাসী তারেক দেশে ফিরে না আসায় তার বিরুদ্ধে সমন জারি করে তা তার লন্ডনের ঠিকানায় পাঠানো হয়। কিন্তু তাতেও তারেক জিয়ার সাড়া পাওয়া যায়নি।

দুদকের করা আপিলের সঙ্গে সাজার রায়ের বিরুদ্ধে বন্ধু মামুনের করা আপিল আবেদনও শুনানির জন্য হাইকোর্টের তালিকায় আসে। পরে হাইকোর্টে ৪ মে শুরু করে আপিলের শুনানি শেষ হয় গত ১৬ জুন।

আদালতে গিয়াস উদ্দিন আল মামুনের পক্ষে শুনানিতে ছিলেন সিনিয়র আইনজীবী এজে মোহাম্মদ আলী ও ব্যারিস্টার কায়সার কামাল। অপরদিকে দুদকের পক্ষে শুনানি করেন আইনজীবী খুরশীদ আলম খান। রাষ্ট্রপক্ষে শুনানি করেন অ্যাটর্নি জেনারেল মাহবুবে আলম, সঙ্গে ছিলেন ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল শেখ একেএম মনিরুজ্জামান কবির ও সহকারী অ্যাটর্নি জেনারেল শহীদুল ইসলাম খান। কিন্তু তারেক রহমান ‘পালাতক’ থাকায় তার পক্ষে আপিলে কোনো আইনজীবী ছিলেন না।

২০০৯ সালের ২৬ অক্টোবর ঢাকা ক্যান্টনমেন্ট থানায় করা এই মামলায় তারেক রহমান ও মামুনের বিচার শুরু হয় ২০১১ সালের ৬ জুলাই থেকে।

অভিযোগ রয়েছে, টঙ্গীতে প্রস্তাবিত ৮০ মেগাওয়াট ক্ষমতার একটি বিদ্যুৎকেন্দ্র স্থাপনের কাজ নির্মাণ কনস্ট্রাকশনস নামে একটি ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানকে পাইয়ে দেয়ার আশ্বাস দিয়ে ২০ কোটি ৪১ লাখ ২৫ হাজার টাকা ঘুষ নেন মামুন।

২০০৩ থেকে ২০০৭ সালের মধ্যে বাংলাদেশ থেকে বিভিন্ন সেময় ২০ কোটি ৪১ লাখ ২৫ হাজার ৮৪৩ টাকা সিঙ্গাপুরের সিটি ব্যাংকে মামুনের অ্যাকাউন্টে পাঠানো হয়। যার মধ্যে ৩ কোটি ৭৮ লাখ টাকা তারেক খরচ করেন বলে অভিযোগপত্র উল্লেখ রয়েছে।



মন্তব্য চালু নেই