তারেকের সাজা বাতিলের দাবিতে রাজপথে রিজভী!

‘স্বৈরাচার নিপাত যাক, গণতন্ত্র মুক্তি পাক’, ‘তারেক জিয়ার সাজা বাতিল কর’ এই ২ শ্লোগানকে বুকে এবং পিঠে লিখে বিএনপির সিনিয়র ভাইস চেয়ারম্যান তারেক রহমানের ২০ কোটি টাকা জরিমানা এবং ৭ বছরের কারাদণ্ড বাতিলের দাবি জানিয়েছে রিজভী হাওলাদার নামের এক যুবক।

শুক্রবার দুপুরে রাজধানীর নয়াপল্টনে বিএনপির কেন্দ্রীয় কার্যালয়ের সামনের রাস্তায় দাঁড়িয়ে এ দাবি জানান রিজভী হাওলাদার নামের ওই যুবক।

বেলা বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে নয়াপল্টনে আসা নেতা গোছের কাউকে দেখলে এগিয়ে গিয়ে সালাম দেন। কখনো আবার খাওয়ার জন্য কিছু টাকার আবদার করেন। আবার পরিচিত সাংবাদিকদের দেখলে কাছে গিয়ে দলের অবস্থা জানতে চান মানুষটি।

এ সবই মানুষটির রুটিন ওয়ার্ক। রাত হলে ছুটে যান নারায়ণগঞ্জে। সেখানেই যে বসবাস বিএনপির ‘নিবেদিতপ্রাণ কর্মী’ হিসেবে পরিচিত মানুষটির।

তার নাম রিজভী। দলের অনেকে তাকে ‘পাগলা রিজভী’ বলেও ডাকেন। কিন্তু তাতে তার কোনো আপত্তি কিংবা ক্ষোভ নেই। বিএনপি তথা খালেদা জিয়া ও তারেক রহমানের নামে কোনো সমালোচনা কেউ না করলেই হলো। সেটি কেউ করলে তার নিস্তার নেই রিজভীর কাছে।

দল ও দলপ্রধানের সুখে-দুঃখে তাই সব সময় ‘পাশে থেকে’ আনন্দ-বেদনা প্রকাশ করেন পাগলা রিজভী। তারেক রহমানের বিরুদ্ধে গতকাল কারাদণ্ডের রায়ের পরও তার ব্যতিক্রম হয়নি।

বৃহস্পতিবার অর্থ পাচার মামলায় বিএনপির সিনিয়র ভাইস চেয়ারম্যান তারেক রহমানের বিরুদ্ধে কারাদণ্ডের রায় হওয়ার পর থেকে কিছুটা থমথমে নয়াপল্টন। বিএনপির সহ-দপ্তর সম্পাদকসহ আটক করা হয় ১১ জনকে। এরপর আতঙ্কে অনেকেই কার‌্যালয়ের দিকে পা বাড়াননি। শুক্রবারও প্রায় অর্ধশতাধিক পুলিশ সদস্যকে কার্যালয়ের সামনে দায়িত্ব পালন করতে দেখা যায়।

এই সময়ের মধ্যে কেন্দ্রীয় কার‌্যালয় থেকে কোনো প্রতিবাদ মিছিল বের করার চেষ্টা করতে দেখা যায়নি বিএনপির কাউকে। যারা আসছেন, তারা যেমন দ্রুত ভেতরে যাচ্ছেন, তেমনি আবার দ্রুত বের হয়ে এলাকা ত্যাগ করছেন। একমাত্র পাগলা রিজভীই প্রতিক্রিয়া প্রকাশ করলেন তারেকের সাজা ঘোষণার বিরুদ্ধে।

অন্যদিনের মতো শুক্রবার সকালেও নয়াপল্টনে হাজির পাগলা রিজভী। আজ তার বুকে-পিঠে লাল রং দিয়ে লেখা ‘স্বৈরাচার নিপাত যাক-গণতন্ত্র মুক্তি পাক’; ‘তারেক রহমানের সাজা বাতিল করো’ স্লোগান।

বুকে-পিঠে স্লোগান লেখার কারণ কী জানতে চাইলে রিজভী বলেন, “আমি ম্যাডামকে (খালেদা জিয়া), তারেক রহমানকে ভালোবাসি। এই জন্য লিখছি। ”

পুলিশ যদি আটক করে-এমন প্রশ্নে রিজভীর নির্ভয় উত্তর, “আমি পুলিশ ভয় পাই না। আমার কিছু হবে না।” তার কথা শুনে পাশে দাঁড়ানো কয়েকজন পুলিশ কর্মকর্তাকে হাসতে দেখা যায়।

পাগলা রিজভীর কর্মকাণ্ড বিএনপির অনেক নেতাকর্মীকেও বাধ্য করে নিজেদের মধ্যে এ নিয়ে কথা বলতে। কার‌্যালয়ের মূল ফটকে দাঁড়ানো একজন বললেন, “কেউ রাস্তায় নামল না, অথচ ছেলেটা কত কড়া কথা লিখে প্রতিক্রিয়া জানাল।” কাউকে আবার রিজভীর ছবি তুলতেও দেখা গেছে।

রিজভীর এমন প্রতিক্রিয়া এই প্রথম নয়। এর আগে খালেদা জিয়ার ছোট ছেলে আরাফাত রহমান কোকোর মৃত্যুর পর যখন নেতাকর্মীদের দেখা পাওয়া ভার ছিল, তখন শোক জানিয়ে গুলশান কার‌্যালয়ে ব্যানার টানিয়েছিলেন এই ‘পাগলা’ রিজভী।

দুঃখের সময়ের মতো কোনো আনন্দের উপলক্ষ্যেও রিজভীকে দেখা যায় তার দায়িত্ব পালন করতে। খালেদা জিয়ার গত জন্মদিনে নিজের জমানো ৩০০ টাকা দিয়ে কেনা কেক কেটে জন্মদিন উদযাপন করেন তিনি।



মন্তব্য চালু নেই