তুমি কি এখনো আশাবাদী?
-তুমি কি এখনো আশাবাদী?
-হ্যাঁ এখনো
-৮ বলে ৭০ রান!!
-তাতে কি হয়েছে?
-এক বলে ছয় রানের উপর তো নেই!!
-দেখ আমরা এমন জাতি, পারি না এমন কিছু নেই!! আচ্ছা বল তো একটা জাতীয় পরিচয় পত্র বানাতে কত টাকা খরচ হতে পারে?
-কোন টাকা লাগার কথা নয়। ওটা তো ফ্রি।
-এনআইডি বানাতে একজনের কাছে ৮ হাজার টাকা চাওয়া হয়েছে। পরে ৫ হাজার টাকায় দফারফা হয়েছে।
-বল কি!!
– আচ্ছা আমাদের দেশে এমন একটি ডিপার্টমেন্ট এর নাম বলতে পারবে যেখানে উপরি নেই?
-আছে, আবহাওয়া ডিপার্টমেন্ট। সেখানে ঘুষ খাওয়ার কোন উপায় নেই। কে দেবে ঘুষ, কেন দেবে?
-ভুল। আমারও ধারণাও তাই ছিল। আমার এক বন্ধু আছে সেখানে। সে শুনে হেসে দিয়ে বলেছিল, যে খায় সে ঠিকি রাস্তা বের করে নিচ্ছে। আমি আজও বুঝতে পারিনি, আবহাওয়া ডিপার্টমেন্ট এ ঘুষ খায় কিভাবে!!
-হ্যাঁ তাই। আমরা পারি না, এমন কিছু নেই।
শোন আমাদের ক্যাপাবিলিটি নিয়ে একটি জোকস বলি।
জেল খানায় আছে এক কয়েদি। টাকা কামানোর ব্যাপারে খুব নামডাক তার। সে নাকি এমন কিছু যে সেখান থেকে টাকা কামাতে পারে না। জেলারের কানে গেল সে কথা। জেদ চেপে বসল তার মনে। দেখি কিভাবে টাকা কামায় সে!!
এক মৃত কয়েদির দেহ নিয়ে গেল তার সামনে।
-এই মৃত মানুষকে নিয়ে যাবে তার গ্রামে। তার পরিবারের কাছে লাশ হস্তান্তর করবে। দেখি কিভাবে তুমি টাকা কামাতে পার সেখান থেকে। পারলে তোমার মুক্তি মিলবে। জেলার সাহেব সাদা কাপড়ে দুইজন পাহারাদার সহ পাঠাল সেই লোককে। সঙ্গে ডেড বডি।
গ্রামে মৃতকে নিয়ে যাবার সাথে সাথে বউ ছেলে মেয়ে, বাবা মা এবং আত্মীয়স্বজনদের মধ্যে কান্নার রোল পড়ে গেল। সাথে ডুকরে কাঁদতে লাগল সেই ঘুষ খোর কয়েদী।
-আপনি কাঁদছেন কেন? তার কান্না দেখে সবাই কান্না থামিয়ে জিজ্ঞাস করল কয়েদীকে। আপনি তো আমাদের কেউ নন।
-আরে আমি কি আর শখে কাঁদছি!! আমি আপনাদের ভবিষ্যৎ দুরবস্থার কথা ভেবে কাঁদছি!!
-আমাদের অবস্থা মানে!!
-হ্যাঁ, আপনাদের অবস্থা তো খুব খারাপ সামনে। মৃত কয়েদীকে দেখিয়ে বলল, ইনি তো সাজা শেষ হবার আগেই মারা গিয়েছেন। তাকে আরও পাঁচ বছর জেল খাটতে হত। এখন মারা যাওয়াতে তার সাজার পাঁচ বছর, আপনাদের মধ্য থেকে কাউকে খাটতে হবে। আমাকে পাঠানো হয়েছে সে জন্যই। আমার সাথে এই যে পাহারাদারও আছে।
এখন আপনারাই ঠিক করুন, আপনাদের মধ্য থেকে কে বাকী পাঁচ বছর সাজা ভোগ করবেন।
কান্না থেমে গেল সবার। পরিবারের মধ্যে প্রতিযোগিতা শুরু হয়ে গেল নাম কাটার। সবার কাছ থেকে ঘুষ নিয়ে তাদের নাম কেটে হাসতে হাসতে ফিরে এলো কয়েদী।
আমাদের পরম এবং চরম আশ্রয়স্থল এবং গৌরবের জায়গা হচ্ছে, আমাদের রিজার্ভ। সেটা চুরি করেও আমরা বিশ্বে রেকর্ড সৃষ্টি করেছি।
আমরা পারি না, এমন কিছু নেই।
৮ বলে ৭০ রান করাও আমাদের পক্ষে সম্ভব।
(সরকারের একজন যুগ্ম সচিব জনাব মাহবুব কবির মিলন -এর ফেসবুক স্ট্যাটাস)
মন্তব্য চালু নেই