তৌফিককে সোনিয়ার এসএমএস ‘রুমে আস’

পরপুরুষের হাত ধরে ফারজানা রতন সোনিয়ার ঘর ত্যাগী হওয়ার স্বভাব নতুন নয়। আগেও কয়েকবার এমন ঘটনা ঘটিয়েছেন তিনি। সৈয়দ তৌফিক আহমেদও পরনারী আসক্ত। একাধিক নারীর সঙ্গে রয়েছে সম্পর্ক। হালে ব্রাহ্মণবাড়িয়ার ব্যাপক আলোচিত এই পরকীয়া প্রেমীদের এমন বৃত্তান্ত বেরিয়ে এসেছে ঢাকার গুলশান থানা পুলিশের তদন্তে। সোনিয়া বর্তমানে কারাগারে রয়েছেন। আর সৈয়দ তৌফিক আহমেদ ২৪ দিন কারাগারে থেকে বর্তমানে জামিনে মুক্ত রয়েছেন।

সোনিয়া সর্বশেষ ঘর ছাড়ার পর তার স্বামী ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলা আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক আবদুল হান্নান রতন গুলশান থানায় একটি মামলা (গুলশান থানার মামলা নং ১৯,তারিখ ৩০/০৩/২০১৬ইং) দায়ের করেন।

এ মামলা সূত্রে গত ৮ই মে ঢাকার মুখ্য মহানগর হাকিম আদালতে গুলশান থানা পুলিশ আসামিকে জিজ্ঞাসাবাদ ও জামিন বাতিলের আবেদন করে। ওই আবেদনে বলা হয়, মামলার প্রকাশ্য ও গোপন তদন্তে এবং স্থানীয়ভাবে গোপন সূত্রে জানা যায়, ফারজানা রতন সোনিয়া একজন পরপুরুষ আসক্ত নারী। সে তিন সন্তানের জননী এবং অন্যের স্ত্রী হওয়ার পরও একাধিক পুরুষের সঙ্গে অবৈধ ও অনৈতিক পরকীয়া সম্পর্ক গড়ে তোলে। সে ইতিমধ্যে কয়েকবার কয়েকজন পরপুরুষের সঙ্গে পরকীয়া সম্পর্ক করে চলে গিয়েছিল বলে জানা যায়। অত্র মামলার ঘটনার পূর্বে ফেসবুকের মাধ্যমে বিশ্ববিদ্যালয় পড়ুয়া মিকদাদ ইসলাম (২২) নামের এক ছেলের সঙ্গে অবৈধ ও অনৈতিক পরকীয়া সম্পর্ক করে ২০১৫ সালের ২৮শে ফেব্রুয়ারি চলে যায়।

এ ব্যাপারে গুলশান থানায় জিডি হলে (জিডি নং ১৭৭, তারিখ ২৮/০২/১৬ ইং) গুলশান থানার এসআই আবু নাঈম মালিবাগের হোটেল আশরাফী থেকে ওই ছেলের (মিকদাদ) সঙ্গে অনৈতিক কার্যকলাপে রত অবস্থায় তাকে উদ্ধার করে। পরবর্তীতে জবানবন্দিতে ছেলেটি তাদের দু’জনের মধ্যে অবৈধ ও অনৈতিক সম্পর্ক থাকার কথা স্বীকার করে এবং সোনিয়ার স্বামীকে হত্যার পরিকল্পনা ছিল বলেও জানায়। ওদিকে সৈয়দ তৌফিক আহমেদও পরনারী আসক্ত পুরুষ। একই সঙ্গে একাধিক মেয়ের সঙ্গে অবৈধ ও অনৈতিক সম্পর্ক গড়ে তুলেছে বলে জানা যায়। বিশ্ববিদ্যালয় পড়ুয়া একটি মেয়ের সঙ্গেও তার অবৈধ ও অনৈতিক সম্পর্ক রয়েছে বলে তদন্তে প্রকাশ পায়।

গত ২৯শে মার্চ সোনিয়া স্বামীর গুলশানের বাসা থেকে বের হয়ে যান। এ ব্যাপারে তার স্বামী আবদুল হান্নান রতন ঐদিনই গুলশান থানায় একটি জিডি করেন। পরদিন গুলশান থানায় মামলা দেন। এই মামলায় ফারজানা রতন সোনিয়া, সৈয়দ তৌফিক আহমেদ ও তার গাড়ির ড্রাইভার তোতা মিয়াকে আসামি করা হয়। এতে অভিযোগ করা হয় তার স্ত্রী সোনিয়াকে মিথ্যা প্রলোভন দিয়ে ফুঁসলিয়ে সৈয়দ তৌফিক আহমেদ পরকীয়া সম্পর্ক স্থাপন করেন এবং ৫৫ ভরি স্বর্ণালঙ্কার, নগদ ২ লাখ ১৫ হাজার টাকাসহ মোট ২৪ লাখ ২৫ হাজার টাকার মালামাল নিয়ে যায় সে তার স্ত্রীর মাধ্যমে। এ মামলা দায়ের করার পর পুলিশ তদন্তে তাদের দু-জনের মধ্যে অবৈধ সম্পর্কের প্রমাণ পায়। আদালতে দেয়া পুলিশের প্রতিবেদনটিতে বলা হয় সৈয়দ তৌফিক আহমেদ ও ফারজানা রতন সোনিয়ার মধ্যকার মোবাইল কললিস্ট পর্যালোচনায় দেখা যায়, ফারজানা রতন সোনিয়ার ব্যবহ্নত মোবাইল নম্বর-০১৭৩২-২৪১৬৫২ এবং ০১৭৪৭-২৫৬২৯৩ এর সঙ্গে সৈয়দ তৌফিক আহমেদ এর মোবাইল নম্বর-০১৭১৫-২৮০৮২০ এবং ০১৮১১-৪০৮২৬০ এর অতিমাত্রায় কথোপকথন হয়েছে। কললিস্ট পর্যালোচনায় আরো সুস্পষ্টভাবে প্রতীয়মান হয় যে, ঘটনার দিন সকালে আসামিদ্বয় পরস্পর মোবাইল এর মাধ্যমে যোগাযোগ করে সৈয়দ তৌফিক আহমেদ মিরপুর রূপনগর থেকে গুলশানে এসে ফারজানা রতন সোনিয়াকে নিয়ে পালিয়ে যায়।

আসামিদের কললিস্ট ও এসএমএস পর্যালোচনায় সুস্পষ্ট হয় যে, আসামিদ্বয়ের মধ্যে গভীর ভাব ভালোবাসার সম্পর্ক রয়েছে। তারা অনৈতিক পরকীয়া সম্পর্কে জড়িত। গত ৪ঠা মে গুলশান থানার সাব ইন্সপেক্টর মো. সাব্বির রহমান গুলশান থানার মামলা নং ১৯, তারিখ ৩০/০৩/১৬ইং সূত্রে মোবাইল ফোনের এসএমএস সিডিআর ও কল রেকর্ড ঢাকার মুখ্য মহানগর হাকিমের আদালতে জমা দেন। সোনিয়ার শ্বশুরবাড়ির লোকজন সূত্রে জানা যায়, সোনিয়া ২০০১, ২০০৩, ২০০৭, ২০১১ এবং ২০১৫ সালে অনৈতিক সম্পর্কে জড়িয়ে ঘর ছাড়েন। সর্বশেষ ২০১৬ সালের মার্চে একই রকম ঘটনায় ঘর ছাড়েন সোনিয়া। ওই পরিবারের লোকজন জানান, এ বছর বিশ্ব ভালোবাসা দিবস (১৪ই ফেব্রুয়ারি) থেকে সোনিয়া তৌফিক সম্পর্কে জড়ান। তা গভীর হয় সোনিয়ার স্বামী রতন ২৩শে ফেব্রুয়ারি কানাডা চলে যাওয়ার পর। ১৩ই মার্চ সকালে রতন দেশে ফিরে আসেন। রতন বিদেশ থাকাকালীন সময়ে তারা অবাধ মেলামেশা করেন। নিয়মিত যোগাযোগ করেন একে অপরের সঙ্গে। রতন ও তৌফিক রাজনৈতিক সহকর্মী। সে সুবাধে রতনের বাসায় আসা যাওয়া ও তার পরিবারের সঙ্গে দেখা সাক্ষাৎ হতো তৌফিকের। এ থেকেই সম্পর্ক গড়ে উঠে দু’জনের।

তথ্য-প্রযুক্তি আইনে স্বামীর দায়ের করা মামলায় গত ১০ই জুন সোনিয়াকে ব্রাহ্মণবাড়িয়া থেকে গ্রেপ্তার করে গুলশান থানা পুলিশ। এর আগে স্বামীকে মারধর ও হুমকি ধমকি দেয়ার অভিযোগে গত ১২ই মে সোনিয়ার জামিন না মঞ্জুর করে জেলহাজতে পাঠানোর নির্দেশ দেন আদালত। পরে ঐদিনই বিশেষ আদালতের মাধ্যমে জামিন নেন সোনিয়া। অবশ্য বিশেষ আদালতে জেলা আওয়ামী লীগের তথ্য ও প্রযুক্তি বিষয়ক সম্পাদক সোনিয়ার পরকীয়া প্রেমিক হিসেবে অভিযুক্ত সৈয়দ তৌফিক আহমেদের জামিন গ্রাহ্য হয়নি। ফলে ঐদিনই কারাগারে যেতে হয় তৌফিককে। তৌফিক জামিন পান ৬ই জুন। এর আগে তারা দুজন এ মামলায় অন্তর্বর্তীকালীন জামিনে ছিলেন। ঐসময় মামলা প্রত্যাহার করে নেয়ার জন্য আবদুল হান্নান রতনকে মারধর ও হুমকি-ধমকি দেন তারা।

এ বিষয়ে রতন ১লা মে গুলশান থানায় একটি জিডি করেন। এই জিডির প্রেক্ষিতে গুলশান থানা পুলিশ আদালতে আসামিকে জিজ্ঞাসাবাদ ও জামিন বাতিলের আবেদন করে। ১২ই মে আদালতে এ বিষয়ে শুনানি হয়। এরপরই ঢাকার ২১নং সিএমএম আদালতের বিচারক সাদবীর ইয়াসির আহসান চৌধুরী তাদের কারাগারে পাঠানোর আদেশ দেন। এরপরই তথ্য-প্রযুক্তি আইনে তৌফিক ও সোনিয়ার বিরুদ্ধে গত ২১শে মে গুলশান থানায় আরেকটি মামলাটি দায়ের করেন সোনিয়ার স্বামী আবদুল হান্নান রতন। তৌফিক ও সোনিয়ার মধ্যকার এসএমএস চালাচালিতে রতনের ভাবমূর্তি ক্ষুণ্ন হওয়ার অভিযোগ আনা হয় এই মামলায়।

১৯৯৮ সালের ৬ই সেপ্টেম্বর বিয়ে হয় রতন ও সোনিয়ার। তাদের ৩ সন্তান রয়েছে। ঘটনার পর থেকে সোনিয়া ও তৌফিক দুজনেই প্রেমের সম্পর্ক অস্বীকার করে আসছিলেন। স্বামীর ঘর ছেড়ে সোনিয়া বলেছিলেন সৈয়দ তৌফিক আহমেদের সঙ্গে তার অন্য কোনো সম্পর্ক নেই। তিনি ব্যাংক কর্মকর্তা তৌফিকের সঙ্গে শুধু ব্যাংকিং বিষয়ে অর্থাৎ ব্যাংক ঋণ নিয়ে কথাবার্তা বলেছেন। কিন্তু ফোনের কল রেকর্ড আর এসএমএস গোমর ফাঁস করে দেয়। এদিকে সোনিয়া ২৯শে মার্চ তার স্বামীগৃহ ত্যাগ করলেও এর আগের দিন অর্থাৎ ২৮শে মার্চের তারিখে এফিডেভিটের মাধ্যমে রতনকে ডিভোর্স দেন। মহানগর হাকিমের আদালতে এই এফিডেভিটটি করা হয়। যাতে বিয়ের পর থেকে মনের মিল হচ্ছে না বলে তালাক দেয়ার কথা উল্লেখ করেন তিনি। এরপর ২৭শে এপ্রিল ধানমণ্ডি থানায় রতনের বিরুদ্ধে একটি জিডি করেন সোনিয়া। যাতে রতনের বিরুদ্ধে তাকে শারীরিক ও মানসিক নির্যাতন করার অভিযোগ আনেন। আরো অভিযোগ করেন জোরপূর্বক তার স্বাক্ষর নিয়ে দুটি ব্যাংক থেকে মোট ৩৩ কোটি টাকা ঋণ উত্তোলন করেছেন রতন।

এসব নির্যাতনের কারণে রতনকে তালাক দিয়েছেন তিনি। তালাকের নোটিশ পাওয়ার পর ক্ষিপ্ত হয়ে তাকে উঠিয়ে নেয়ার, মেরে ফেলার এবং আরো বড় ধরনের ক্ষতি করার হুমকি দেয়ার অভিযোগ আনা হয় ওই জিডিতে রতনের বিরুদ্ধে। ওই জিডির তদন্ত করে ধানমণ্ডি মডেল থানার পুলিশ পরিদর্শক (তদন্ত) মো. হেলাল উদ্দিন গত ১১ই মে মূখ্য মহানগর হাকিমের আদালতে প্রতিবেদন জমা দেন। এতে সোনিয়ার আনা অভিযোগ সম্পূর্ণ বানোয়াট ও মিথ্যা বলে উল্লেখ করে বলা হয় বাদিনীর কোনো ঘটনাই ধানমণ্ডি থানা এলাকায় ঘটেনি। অসৎ উদ্দেশে ব্যক্তিগত স্বার্থ হাসিলে বিবাদীকে হয়রানির জন্য এই জিডি করা হয়েছে। মিথ্যা জিডি করায় বাদীর বিরুদ্ধে প্রশিকিউশন দাখিলের অনুমতি চাওয়া হয় আদালতের কাছে।

এসএমএস-এ গোমর ফাস: ১৪ই মার্চ সোনিয়া তার ০১৭৩২২৪১৬৫২ নম্বর থেকে তৌফিককে পাঠানো একটি এসএমএস-এ লিখেন- ‘আই লাভ ইউ জান’। আরেকটি এসএমএস-এ লিখেন- ‘ভালোবাসি খুব বেশি। অনেক ভালোবাসা নিয়ে তুমি থেকো পাশে… এই চাই’। এই এসএমএসটি দেয়া হয় ১৬ই মার্চ। ২২শে মার্চ দেয়া একটি এসএমএস-এ সোনিয়া তৌফিককে বলছেন- ‘রুমে আস’। ২৩শে মার্চ সন্ধ্য ৬টা ১৮ মিনিটে দেয়া একটি এসএমএসে সোনিয়া তৌফিকের কাছে জানতে চান- ওই রুমে কি? আরেকটি এসএমএসে কোথায় তুমি। নো ইউ কাম ইন সাইড। এর আগে তৌফিক সোনিয়াকে একটি রুম নম্বর (২০৩) লিখে এসএমএস করেন। ২৪শে মার্চ এসএমএসে সোনিয়া তৌফিককে লিখেন- তুমি আস আমি বেরিয়ে যাব। সোনিয়াকে তৌফিকের দেয়া (০১৭১৫২৮০৮২০ নম্বর থেকে) এসএমএসগুলোতেও রয়েছে গভীর প্রেম-ভালোবাসার প্রমাণ।

সোনিয়া যখন আরেকজনের স্ত্রী তখনই তৌফিক সোনিয়াকে সোনা বৌ সম্বোধন করে এসএমএস দেন। তাকে পাঠানো একটি এসএমএসে তৌফিক লিখেন-‘ওহ মাই জান। তুমি যে কতো ভালো। আমি ছাড়া কেউ জানে না, কেউ জানার দরকার নেই জান। আমার জান। আমার সোনা বৌ’। এই এসএমএসটি দেয়া হয় ১৬ই মার্চ দুপুর সাড়ে ১২টায়। ১৭ই মার্চ রাত ৮টা ২৩ মিনিটে দেয়া আরেকটি এসএমএস-এ তৌফিক লিখেন ‘আমার পাশে উপজেলা চেয়ারম্যান, হি নোজ ইউ। বলো এখন আমি কি করবো’। ১৪ই মার্চ তৌফিক সোনিয়াকে লিখেন ‘তোমার ভালোবাসা আমার চোখ খুলে দিয়েছে’। এদিনই আরেকটি এসএমএস-এ তৌফিক লিখেন- ‘জানু আমার, ওহ মাই জানু আই লাভ ইউ সো মাচ। সো মাচ জান আমার। এই এসএমএস-এর প্রতিটি অক্ষর অন্তরের অন্তস্থল থেকে বেরিয়ে এসেছে জান বুঝে নিস’।

১৫ই মার্চে দেয়া একটি এসএমএসে-‘ইয়েস সুইট হার্ট আই নো ইট ভেরি ওয়েল। রিমেম্বার নাও ইউ আর নট সনি ইউ আর তৌফিক। আই এম নট তৌফিক নাও আই এম সনি। সো ইউ এন্ড মি জাস্ট ওয়ান পারসন। জান লাভ ইউ সো মাচ’। ১৮ই মার্চ তোফিক আরেকটি এসএমএসে লিখেছেন- ‘আমার ভেতর-বাহির সব তোমার, সব কিছু সব। ২৬শে মার্চ দেয়া এসএমএস-এ ‘আমার সনি, ইয়েস আমার সনি, আমার অস্তিত্ব আমার বিশ্বাস, আমার স্বপ্ন। ২৭শে মার্চ দেয়া আরেকটি এসএমএস-এ ‘শুধু একবার বলে দেও আমি যে তোমার কতো যে প্রিয়। ভালোবাসি খুব বেশি’। ১৯শে মার্চ- ‘পৃথিবীর সব সত্যগুলোর একটি সত্য হলো তুমি আমার’। আরেকটি এসএমএস-এ ‘আমার পাগলি আই অলসো লাভ টু ইউ জান, সো মাচ’। ২১শে মার্চের একটি এসএমএস-২০৩ লিখে দেয়া হয়। পরের মেসেজটিতে প্লিজ ইউ কাম আইট সাইড। ইউ কাম আউট সাইড।

সোনিয়াকে দেয়া তৌফিকের ৫ই মার্চের একটি এসএমএস- ‘আমি জানি বিষণ্ন সাগরে তুমি ডুবন্ত অবস্থায় আছ। আমি তোমাকে সেখান থেকে তোমাকে প্রচণ্ড ভালোবাসা দিয়ে উঠিয়ে আনবো। তোকে ছাড়া আমার চলবে না জান’। এদিনের আরেকটি এসএমএস-এ ‘আমি আরো পাগল হয়ে বদ্ধ উন্মাদ হতে চাই তোর জন্যে। সবার সামনে বসে এসএমএস দিচ্ছি। সমস্যা নাই কেউ বুঝবে না। না পার্টি অফিসে আছি’। ৫ই মার্চের আরেকটি এসএমএস- ‘আমার কলিজার টুকরা’। ৭ই মার্চ দেয়া এসএমএস-এ ‘আমি তোমার বুকের মাঝে’। এদিনের আরেকটি এসএমএস-এ ‘অবশ্যই তুমি জানো কেনো আমায় মিস করছো, আমার জান পাখিটা’। ১০ই মার্চ- ‘জান পাখিটা ছাড়া যে আমার কিছুই ভালো লাগে না’। এছাড়া মার্চের ২০ তারিখ থেকে ২৯ তারিখ সোনিয়া ঘর থেকে বেরিয়ে যাওয়ার আগ পর্যন্ত তারা দুজনে মোবাইল ফোনে দিনের বেশিরভাগ সময় কথা বলেন।

পুলিশ তদন্তকালে বিশ্ববিদ্যালয় পড়ুয়া এক তরুণীর সঙ্গেও তৌফিকের গভীর সম্পর্কের প্রমাণ পায়। ঐ তরুণীকে তৌফিকের দেয়া এসএমএস সিডিআরও আদালতে জমা দিয়েছেন গুলশান থানা পুলিশ। একটি এসএমএস-এ ওই তরুণীকে তৌফিক লিখেন- ‘সারাদিন অফিস শেষে প্রাণটা যে কি পরিমাণ ছটফট করে, কতো তাড়াতাড়ি তোমাকে দেখবো, তোমাকে কিভাবে বেশিক্ষণ আদর করবো। তোমার সঙ্গে দেখা হওয়ার পর তোমার ছোঁয়া পাওয়ার পর মনটা শান্তি হয়। দেখা শেষে বাসায় যাওয়ার পর আবার আগামীকালের স্বপ্ন দেখি, আগামীকাল তোমাকে আরো কতো বেশি ভালোবাসা যায়। আমি তোকে ছাড়া কিছু ভাবতে পারি না। তোর একটু ভালোবাসা, একটু আদর আমার জন্য কি পরিমাণ টনিক আমি তোকে বুঝাতে পারবো না। আমার জীবন সাথী না করতে পারলে আমার করুণ মৃত্যু অবধারিত’।-এমজমিন



মন্তব্য চালু নেই