ত্বক ও চুলের জন্য কাঁচা দুধের ব্যবহার

আপনি কি প্রাকৃতিক রূপচর্চা পছন্দ করেন? কাঁচা দুধ হচ্ছে ঠিক তেমনই একটি প্রাকৃতিক একটি বিউটি ট্রেজার বা সৌন্দর্য সম্পদ। কারণ কাঁচা দুধে অত্যাবশ্যকীয় পুষ্টি উপাদান ও ভিটামিন যেমন- এ, ডি, বি৬, বি১২, বায়োটিন, ক্যালসিয়াম, প্রোটিন এবং আরো অনেক উপাদান থাকে যা কেবল আপনার স্বাস্থ্যের জন্যই উপকারী নয় বরং চুল এবং ত্বকের জন্যও অনেক উপকারী। আপনার সৌন্দর্য বৃদ্ধি করার জন্য এবং চুলের সমস্যা দূর করার জন্য কাঁচা দুধ অত্যন্ত কার্যকরী। কাঁচা দুধের অসাধারণ কিছু ব্যবহার জেনে নিই চলুন।

১। ক্লিঞ্জার

কাঁচা দুধ প্রাকৃতিক ক্লিঞ্জার হিসেবে চমৎকার কাজ করে। প্রতিদিন মুখ পরিস্কারের জন্য কাঁচা দুধ ব্যবহার করলে ধুলো ময়লা ও মরা চামড়া দূর হয়। কাঁচা দুধ ব্যবহারে ত্বকের ছিদ্র বন্ধ হয়না কিন্তু ত্বক নরম হয় তাই ব্ল্যাক হেডস বা হোয়াইট হেডস হওয়ার ভয় থাকেনা। প্রথম ব্যবহারেই আপনি বুঝতে পারবেন আপনার ত্বক কতোটা নরম ও পরিষ্কার হচ্ছে। ২ টেবিলচামচ কাঁচা দুধের মধ্যে একটি কটন বল চুবিয়ে নিয়ে বলটি চিপে নিন এবং আস্তে আস্তে মুখে ঘষুন। বিশেষ করে নাকের উপর ঘষুন। আপনি দেখে অবাক হবেন যে কটন বলে কত ময়লা জমা হয়েছে। তারপর উষ্ণ গরম পানি দিয়ে আপনার মুখটি ধুয়ে নিন।

২। ময়েশ্চারাইজার

আপনার মুখ কি খুব শুষ্ক এবং চামড়া ওঠে? তাহলে আপনার ত্বকের কোষের স্তর দূর করতে ও ত্বককে নরম করতে কাঁচা দুধ সাহায্য করবে। ঠাণ্ডা কাঁচা দুধ আপনার ত্বকে ভালো করে লাগান এবং ১৫-২০ মিনিট রাখুন। এটি শুকানোর সময় মুখের পেশী নাড়াবেন না। কারণ এতে মুখে সূক্ষ্ম দাগ পড়তে পারে। তারপর ঠান্ডা পানি দিয়ে মুখ ধুয়ে ফেলুন। আপনার আর আলাদা কোন ময়েশ্চারাইজার প্রয়োজন হবেনা এবং ত্বক সারাদিন কোমল থাকবে।

৩। ত্বকের তামাটে রঙ হালকা হয়

আপনার ত্বকের গাঢ় ও তামাটে রঙ দূর করতে সাহায্য করবে কাঁচা দুধ। উচ্চমাত্রার ল্যাক্টিক এসিডের উপস্থিতি শুধুমাত্র ত্বকের রঙ হালকা করতেই সাহায্য করেনা বরং ত্বকের উপরিভাগের মরা চামড়াও দূর করে। তাজা কাঁচা দুধ একটি পাত্রে নিয়ে এর মধ্যে একটি নরম কাপড় ডুবিয়ে দিন। তারপর কাপড়টি চিপে নিয়ে আপনার ত্বকে লাগান। সপ্তাহে ৩ দিন এটি ব্যবহার করুন গোসলের আগে।

৪। শুষ্ক ও ক্ষতিগ্রস্থ চুলের জন্য হেয়ার মাস্ক

শুষ্ক ও ক্ষতিগ্রস্থ চুল দেখতে ঘাসের মত ও নিষ্প্রাণ মনে হয়। এই সমস্যাটি হয় সাধারণত ময়েশ্চারাইজার ও যত্নের অভাবে। ৩ টেবিলচামচ কাঁচা দুধের সাথে একটি কলার অর্ধেক অংশ, ১ টেবিলচামচ মধু ও ১ টেবিলচামচ অলিভ অয়েল মিশিয়ে ব্লেন্ডারে ব্লেন্ড করে স্মুদির মত তৈরি করে নিন। এই হেয়ার মাস্কটি আপনার চুলে লাগিয়ে ১ ঘন্টা রাখুন ও তারপর পানি দিয়ে ধুয়ে ফেলুন।এই মাস্কটি ব্যবহারের ফলে আপনার শুষ্ক চুলে ময়েশ্চারাইজার ঢুকবে এবং চুলের ক্ষতি দূর করবে।

৫। হেয়ার কন্ডিশনার

সঠিক উপাদান দিয়ে আপনি একটি ভালো কন্ডিশনার বানিয়ে নিতে পারেন। এজন্য কয়েক ফোঁটা কাঁচা দুধের সাথে দই, বেবি অয়েল ও মেয়নেজ মিশিয়ে নিন। মিশ্রণটি ভালোভাবে মাথার তালুতে ও চুলে লাগান। ৪০ মিনিটের জন্য মাথায় শাওয়ার ক্যাপ ব্যবহার করুন। তারপর চুল ধুয়ে ফেলুন।

এছাড়াও ব্রণ ও ব্রণের দাগ দূর করতে সাহায্য করে, বলিরেখা দূর করতে সাহায্য করে, টোনার হিসেবে কাজ করে, ত্বককে পুনরুজ্জীবিত করতে সহায়তা করে ও চুল পড়া রোধ করে কাঁচা দুধ।



মন্তব্য চালু নেই