থমথমে গাজীপুর, সঙ্গে আতঙ্ক

গাজীপুরে দু’টি পৃথক আস্তানায় পুলিশি অভিযানে ১০ ‘জঙ্গি’ নিহত হওয়ার পর এলাকায় থমথমে পরিবেশ বিরাজ করছে। একসঙ্গে একদিনে এতগুলো জঙ্গি নিহত হওয়ায় ঘটনা গাজীপুরে এই প্রথম। স্থানীয়রা প্রকাশ্যে কিছু না বললেও এ নিয়ে জেলার এখানে সেখানে কানাঘুষা চলছে। রাস্তার ধারে, চায়ের স্টলে, অফিস আদালতে প্রধান ইস্যু আজ গাজীপুরের জঙ্গি আস্তানায় ১০ জঙ্গি নিহত হওয়ার বিষয়টি। স্থানীয়রাও হতবাগ। তবে সবাই বড় কোনো অঘটনের আগে এ অভিযানকে স্বাগত জানিয়েছে।

পুলিশ এখনো আস্তানা দুটি ঘিরে রেখেছে। কৌতূহলী মানুষ জেলার হাড়িনালের লেবু বাগান ও নোয়াগাঁওয়ের পাতারটেকে জঙ্গি আস্তানা দুটিকে ঘিরে আজও জড়ো হয়েছে।

জঙ্গিদের লাশগুলো শহীদ তাজউদ্দীন আহমদ মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতাল মর্গে রাখা হয়েছে। তবে ময়নাতদন্ত কখন হবে সে ব্যাপারে কিছু জানা যায়নি। মামলার প্রস্তুতি চলছে বলে জানা গেছে।

গতকাল শনিবার র‌্যাব, সোয়াট, কাউন্টার টেরিরিজম ইউনিট, জেলা গোয়েন্দা পুলিশের জঙ্গি বিরোধী অভিযানের পর আইন শৃংখলা বাহিনী পাতারটেকের দোতলা বাড়িটি সিলগালা করে দিয়েছে।

শনিবার ভোরে গোপন সংবাদের ভিত্তিতে হাড়িনালের লেবু বাগান এলাকায় আতাউর রহমানের ভাড়া বাড়িতে অভিযান চালায় র‌্যাব। এসময় জঙ্গিদের কক্ষে দরজা ভেঙ্গে প্রবেশ করতে গেলে জঙ্গিরা র‌্যাব সদস্যদের লক্ষ্য করে গুলি ছুড়ে। এসময় র‌্যাবও পাল্টা গুলি চালায়।

এতে ঘটনাস্থলে নরসিংদীর বাসিন্দা ও ডুয়েটের শিক্ষার্থী তওহীদুল ইসলাম এবং একই এলাকার রাশেদ মিয়া নামে সন্দেহভাজন দুই জঙ্গি মারা যান। পরে ঘটনাস্থল থেকে একটি একে-২২ রাইফেল, একটি পিস্তল, একটি ল্যাপটপ ও বিভিন্ন ধরনের সামগ্রী উদ্ধার করা হয়।

সকাল ১০টার দিকে নোয়াগাঁওয়ের আফারখোলা পাতারটেক এলাকায় আরেকটি আস্তানায় অভিযান শুরু করে পুলিশের কাউন্টার টেররিজম ইউনিট ও জেলা গোয়েন্দা পুলিশ।

এসময় সেখানে ব্যাপক গোলাগুলির পর মারা যান জেএমবির ঢাকা অঞ্চলের সমন্বয়ক আকাশসহ আরো ৬ জন। সেখান থেকে আগ্নেয়াস্ত্র, দেশীয় অস্ত্র এবং গুলি উদ্ধার করা হয়।

এক সাথে নব্য জেএমবির অর্থেও যোগানদাতাসহ ১০ জন জঙ্গি নিহত ঘটনায় আতঙ্ক থাকলেও স্থানীয়রা এই অভিযানকে স্বাগত জানিয়েছে।

তারা বলছেন, নিহত জঙ্গিদের গতিবিধি ছিল সন্দেহজনক। তারা এলাকাবাসির সাথে তেমন মিশতেন না। কিছুটা দূরত্ব বাজায় রাখতেন।

নিহতদের মরদেহগুলো রাতেই উদ্ধার করে পাঠানো হয় শহীদ তাজউদ্দীন আহমদ মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতাল মর্গে। হাসপাতালের আবাসিক চিকিৎসক প্রণয় কুমার ভূষণের সঙ্গে যোগাযোগ করা হলে তিনি বলেন, কখন লাশের ময়নাতদন্ত হবে সে ব্যাপারে সিদ্ধান্ত হয়নি হয়নি।

এ ঘটনায় পুলিশ ও র‌্যাবের পক্ষ থেকে আইন শৃংখলা বাহিনীর উপর হামলা ও অস্ত্র উদ্ধারের ঘটনায় আলাদাভাবে মামলা দায়েরের প্রস্তুতি চলছে।



মন্তব্য চালু নেই