দরিদ্র বাবা-মায়ের সংসারের হাল ধরতে এসএসসি পরীক্ষা দিয়ে আটোরিক্সা চালায় শারমিন!

বাবা অসুস্থ, তাই চাঁপাইনবাবগঞ্জ-সোনামসজিদ মহাসড়কে অটোরিকশার হ্যান্ডেল ধরেছে ১৫ বছরের কিশোরী শারমিন সুলতানা। দরিদ্র বাবা-মায়ের সংসারের হাল ধরতে তার এই জীবন সংগ্রামে নামা। ভোলাহাট উপজেলার ফুটানিবাজার এলাকায় মামা তোফাজ্জল হোসেনের আশ্রয়ে থেকে শারমিন সুলতানা এবার মঞ্জুর আহম্মেদ উচ্চ বিদ্যালয় থেকে মাধ্যমিক পরীক্ষা দিয়েছে।

তার বাবা এজাবুল হক, পেশায় অটোরিকশাচালক। বাড়ি শিবগঞ্জ উপজেলার দায়পুকুরিয়া ইউনিয়নের সোনাপুর-নতুন গাজীপাড়া এলাকায়। মা সুমাইয়া বেগম স্বশিক্ষিত গৃহিণী। এজাবুল হকের তিন মেয়ের মধ্যে বড় দু’জনের নাম পিংকী ও নাসরিন। তারা বিবাহিত। তারা থাকেন স্বামীর বাড়িতে। শারমিন সুলতানা জানায়, বাবা ছাড়া সংসারে উপার্জনক্ষম কোনো পুরুষ নেই তাদের। তাই সংসার চালাতে তার এ পথে আসা, অর্থাৎ অটোরিকশার হ্যান্ডেল ধরা।

যাত্রী বাহন করে প্রতিদিন তার উপার্জন হয় ২০০ থেকে ৩০০ টাকা, যা দিয়ে চলে তাদের সংসার। বাবা এজাবুল হকের বয়স হয়েছে। তার ওপর তিনি ক’দিন থেকে অসুস্থ থাকায় অচল হয়ে পড়েছে সংসার। এসএসসি পরীক্ষা দিয়ে অবসরে অটোরিকশা চালিয়ে সংসারের ব্যয় নির্বাহ করতে হচ্ছে তাকে। কিন্তু আগামী দু-এক মাসের মধ্যে এসএসসির রেজাল্ট বের হলে কলেজে ভর্তি হতে হবে তাকে। পড়ালেখা করার প্রবল ইচ্ছা শারমিনের। নিজের পায়ে দাঁড়াতে সে বদ্ধপরিকর।

বাবা এজাবুল হক জানান, টিনের ছাপড়ার নিচে মাথা গোঁজার এক টুকরো বাস্তুভিটা এবং ব্যাংক লোনের টাকায় কেনা অটোরিকশা ছাড়া কিছুই নেই তার। প্রতিদিনের উপার্জনে চলে তাদের সংসার। দারিদ্র্যের কারণে ছোট মেয়ে শারমিন পড়ালেখা করত মামার বাড়িতে থেকে। এসএসসি পরীক্ষার পর এখন বাড়িতে। অবসরে সে পরিবারের অর্থ শূন্যতা লাঘবে মহাসড়কে নেমেছে। মেয়ের উপার্জিত যাত্রী ভাড়া থেকে বর্তমানে চলছে তাদের সংসার।



মন্তব্য চালু নেই