অব্যাহতির আবেদন পুলিশের

দাউদ ইব্রাহিমের সহযোগী মার্চেন্টকে ফেরত নিচ্ছে ভারত

ভারতের ‘মাফিয়া ডন’ দাউদ ইব্রাহিমের ঘনিষ্ঠ সহযোগী আবদুল রউফ দাউদ ওরফে দাউদ মার্চেন্টকে ভারতে ফেরত পাঠানোর প্রক্রিয়া চলছে। আর সে কারণেই এক অভিযোগ থেকে অব্যাহতি দেয়ার আবেদন করেছে ঢাকা মহানগর গোয়েন্দা পুলিশ (ডিবি)। সম্প্রতি ঢাকার মুখ্য মহানগর হাকিম আদালতে এ আবেদন করা হয়। চলতি মাসের শেষ সপ্তাহে এ বিষয়ে শুনানি হওয়ার কথা রয়েছে।

সংশ্লিষ্ট একাধিক সূত্র জানিয়েছে, ৫৪ ধারার মামলায় বর্তমানে কারাগারে আছে দাউদ মার্চেন্ট। এই মামলা থেকে অব্যাহতি পেলে বাংলাদেশে তার বন্দিজীবনের অবসান ঘটতে পারে। উলফা নেতা অনুপ চেটিয়ার মতো একই প্রক্রিয়ায় দাউদ মার্চেন্ডকেও ভারতে ফেরত পাঠানো হবে বলে জানিয়েছে সূত্র।

ঢাকা মহানগর পুলিশের উপ-কমিশনার (জনসংযোগ) মারুফ হোসেন সরদার বলেন, ‘২০১৪ সালে দাউদ মার্চেন্টকে সন্দেহভাজন হিসেবে ৫৪ ধারায় গ্রেপ্তার করে ডিবি পুলিশ। কোনো অভিযোগের প্রমাণ না পাওয়ায় তাকে সেই ৫৪ ধারা থেকে অব্যাহতি চেয়ে আবেদন করা হয়েছে।’

এদিকে আদালত সূত্র জানায়, গত বছরের ৯ ডিসেম্বর দাউদ মার্চেন্টের অব্যাহতি চেয়ে আবেদনটি করে ডিবি। আগামী ৩১ জানুয়ারি এ আবেদনের শুনানির দিন ধার্য করেছেন আদালত। তবে বিষয়টি গোপন থাকলেও সম্প্রতি তা প্রকাশ পায়।

ডিবি সূত্র জানায়, ভারতের খ্যাতিমান সঙ্গীত পরিচালক গুলশান কুমার হত্যা মামলায় দণ্ডিত দাউদ মার্চেন্টকে ২০০৯ সালের ২৭ মে ব্রাহ্মণবাড়িয়া থেকে এক সহযোগীসহ গ্রেপ্তার করে ডিবি। তখন অবৈধ অনুপ্রবেশের অভিযোগে তাদের বিরুদ্ধে মামলা হয়। প্রায় পাঁচ বছর কারাগারে থাকার পর ২০১৪ সালের ১৯ নভেম্বর দাউদ মার্চেন্ট জামিন পান। ওই বছরের ১ ডিসেম্বর সন্ধ্যায় তাকে গাজীপুরের কাশিমপুর কারাগার থেকে মুক্তি দেয়া হয়।
আবার ওই রাতেই তাকে ৫৪ ধারায় ফের গ্রেপ্তার করে ডিবি। এরপর থেকে দাউদ মার্চেন্ট ঢাকা কেন্দ্রীয় কারাগারে রয়েছেন।

পরিচয় প্রকাশ না করার শর্তে এক পুলিশ কর্মকর্তা বলেন, ‘অব্যাহতি পাওয়ার পর দাউদ মার্চেন্টকে ভারতে ফেরত পাঠানো হবে। এর আগে গত বছরের ১১ নভেম্বর উলফা নেতা অনুপ চেটিয়াকে ভারতের কাছে হস্তান্তর করা হয়। পরদিন ১২ নভেম্বর নারায়ণগঞ্জের সাত খুন মামলার প্রধান আসামি নূর হোসেনকে ফেরত দেয় ভারত। দুই দেশের যোগাযোগের সূত্রে একইভাবে দাউদ মার্চেন্টকে ফেরত দেয়ার প্রক্রিয়ার অংশ হিসেবে পুলিশ আদালতে ফাইনাল রিপোর্ট দিয়ে অব্যাহতির আবেদন করেছে।’

প্রসঙ্গত, ভারতের মুম্মইয়ে সঙ্গীত প্রযোজনা প্রতিষ্ঠান টি-সিরিজের মালিক গুলশান কুমারকে ১৯৯৭ সালের ১২ আগস্ট গুলি চালিয়ে হত্যা করা হয়। এ মামলায় সন্দেহভাজন ভাড়াটে খুনি হিসেবে মাফিয়া ডন দাউদ ইব্রাহিমের সহযোগী দাউদ মার্চেন্টকে গ্রেপ্তার করে দেশটির আইনশঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী। ২০০২ সালে ভারতীয় আদালত দাউদ মার্চেন্টকে যাবজ্জীবন কারাদণ্ড দেন। পরে রায়ের বিরুদ্ধে আপিল করেন কারাবন্দি দাউদ মার্চেন্ট।

এর মধ্যে ২০০৯ সালে পারিবারিক কারণে ১৪ দিনের প্যারোলে মুক্তি দেয়া হয় তাকে। মুক্তি পেয়েই তিনি পালিয়ে যান। সীমান্ত দিয়ে অবৈধভাবে বাংলাদেশে প্রবেশের পরে তিনি ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় ধরা পড়েন।



মন্তব্য চালু নেই