দামুড়হুদায় লাঞ্চনার প্রতিবাদে মৌন মিছিল ও মানব বন্ধন

শামীম রেজা, চুয়াডাঙ্গা জেলা প্রতিনিধি: চুয়াডাঙ্গার দামুড়হুদা উপজেলা খাদ্য নিয়ন্ত্রক কর্মকর্তা মোফাক্ষারুল ইসলামকে যুবলীগ ক্যাডার মশিউর রহমান রানা শারীরিক ভাবে লাঞ্চিতকরাসহ চাঁদাদাবী ও বিভিন্ন হুমকি-ধামকির প্রতিবাদে উপজেলা নির্বাহী অফিসার ফরিদুর রহমানের নেতৃত্বে প্রায় ৩ শতাধিক সরকারী কর্মকর্তা কর্মচারীরা মৌন মিছিল ও মানব বন্ধন করেছে।

এব্যাপারে উপজেলা খাদ্য নিয়ন্ত্রক কর্মকর্তা মোফাক্ষারুল ইসলাম বাদী হয়ে রানা (৩২) ও রানার শ্বশুর আরিফুর রহমানের (৫৫) নামে দামুড়হুদা মডেল থানায় মামলা দায়ের করেছে।

রানা উপজেলার ফকিরপাড়া গ্রামের মতিয়ার রহমানের ছেলে ও তার শ্বশুর আরিফুর রহমান একই গ্রামের মৃত. বজলুর রহমানের ছেলে।

বুধবার সন্ধ্যায় ভ্রাম্যমান আদালত রানাকে এক বছরের কারাদন্ডসহ ৫০ হাজার টাকা জরিমানা অনাদায়ে আরও ৩ মাসের কারাদন্ডের আদেশ দিয়েছে।

মামলার এজাহার সূত্রেজানা যায়, উপজেলার ফকির পাড়া গ্রামের চিহ্ণিত সন্ত্রাসী মতিয়ার রহমানের ছেলে রানা ও তার শ্বশুর একই গ্রামের মৃত. বজলুর রহমানের ছেলে আরিফুর রহমান প্রায়ই দামুড়হুদা উপজেলা খাদ্য নিয়ন্ত্রক কর্মকর্তা মোফাক্ষারুল ইসলামকে বিভিন্ন ভাবে ভয় ভীতি দেখিয়ে অনৈতিক সুবিধা আদায় করার জন্য হুমকি ধামকি দেয়।

অনৈতিক সুবিধা না দিলে চাঁদা দতে হবে বলেও ভয় ভীতি দেখিয়ে আসছিল। এরই ধারাবাহিকতায় অনৈতিক সুবিধা না পেয়ে বুধবার সকাল সাড়ে ১০ টার দিকে উপজেলা পরিষদ চত্তরে অবস্থিত খাদ্য নিয়ন্ত্রক অফিসে সরকারী কাজে কর্মরত অবস্থায় থাকা খাদ্য কর্মকর্তা মোফাক্ষারুল ইসলামকে রানা ও তার শ্বশুর আরিফুর অফিসে ঢুকে লোহার রড, মাটির ফুলদানি ও কাঠের রোলার দিয়ে মার ধোর শুরু করে এবং টেলিফোন, আসবাব পত্র ভাংচুর ও ফাইল পত্র তছনছ করে তারা চলে যায়।

এরই এক পর্যায়ে খাদ্য কর্মকর্তা মোফাক্ষারুল ইসলাম জ্ঞান হারিয়ে ফেলেন। এসময় অফিসের অন্য কর্মচারীরা তাকে উদ্ধার করে দামুড়হুদা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে ভর্তি করেন।

এই ঘটনার প্রতিবাদে তাৎক্ষনিক ভাবে উপজেলা নির্বাহী অফিসার ফরিদুর রহমান উপজেলার সকল দপ্তরের প্রায় ৩ শতাধিক কর্মকর্মা কর্মচারীদের একত্রিত করে দুপুর ২ টায় পরিষদ চত্তর থেকে মৌন মিছিলসহকারে বের হয়ে পরিষদের সামনে দামুড়হুদা-মুজিবনগর মহাসড়কে প্রায়ঘন্টা ব্যাপী মানব বন্ধন করেন।

এসময় উপজেলা নির্বাহী অফিসার ফরিদুর রহমান বলেন, একজন সরকারী কর্মকর্তার প্রতি যে সন্ত্রাসী আক্রমণ হলো আমরা তার দৃষ্টান্ত মুলক বিচার চাই।

যাতে করে ভবিষ্যতে আর কোন সরকারী কর্মকর্তাকে এখাবে সন্ত্রাসীরা লাঞ্চিত করতে না পারে। তিনি আরও বলেন, আজ আমরা মানব বন্ধন করলাম। এতে কোন কাজ না হলে আমরা আরও বড় কর্মসূচি দিতে বাধ্য হব।

এরপর বিকাল ৫ টার দিকে দলীয় নেতারা রানাকে উপজেলা নির্বাহী অফিসার ফরিদুর রহমানের ভ্রাম্যমান আদালতে হাজির করলে আদালতের বিজ্ঞ বিচারক তাকে দঃবিঃ ১৮৯, ৩৫৩ ধারায় দোষি সাব্যস্ত করে ১ বছরের কারাদন্ডসহ ৫০ হাজার টাকা জরিমানা অনাদায়ে আরও ৩ মাসের কারাদন্ডের আদেশ দেন। আদালতের আদেশের পর পরই সন্ধা ৬ টার দিকে রানাকে দামুড়হুদা মডেল থানা পুলিশ চুয়াডাঙ্গা জেলা কারাগারে সোপর্দ করে।



মন্তব্য চালু নেই