দাসিয়ারছড়ায় প্রধানমন্ত্রী

কুড়িগ্রামের সদ্য বিলুপ্ত ছিটমহল দাসিয়ারছড়ায় পৌঁছেছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। তার এই সফরকে কেন্দ্র করে আনন্দে উদ্বেলিত সাবেক ছিটবাসী।

বৃহস্পতিবার সকাল ১০টায় প্রধানমন্ত্রী ফুলবাড়ী উপজেলার দাসিয়ারছড়ায় পৌঁছেন। সেখানে তিনি বিদ্যুৎ-সংযোগ প্রকল্পের উদ্বোধন করবেন। দুপুর ১২টার দিকে কুড়িগ্রাম সার্কিট হাউসে যাবেন প্রধানমন্ত্রী। পরে প্রস্তাবিত শেখ হাসিনা বহুমুখী বালিকা উচ্চবিদ্যালয় মাঠে সুধী সমাবেশে যোগ দেবেন তিনি।

দীর্ঘ ৬৮ বছর পর বাংলাদেশের সঙ্গে যুক্ত হওয়া মানুষগুলো প্রধানমন্ত্রীকে কাছে পেয়ে আনন্দে আত্মহারা। তাকে স্বাগত জানাতে বর্ণিল সাজে সাজিয়েছে দাসিয়ারছড়া ছিটমহলকে। পাশাপাশি কুড়িগ্রাম সরকারি কলেজ মাঠের জনসভাকে ঘিরেও নেওয়া হয়েছে ব্যাপক প্রস্ততি। তোরণে তোরণে ছেয়ে গেছে পুরো শহর।

১৯৭৪ সালে ইন্দিরা-মুজিব স্বাক্ষরিত স্থলসীমান্ত চুক্তি বাস্তবায়নের দাবিতে ছিটবাসী আন্দোলন করেছে দীর্ঘ ৬৮ বছর। অবশেষে শেখ হাসিনা সরকারের কূটনৈতিক সাফল্যে গত ১ আগস্ট ভারত-বাংলাদেশের অভ্যন্তরে থাকা ১৬২ ছিটমহল মূল ভূখণ্ডের সঙ্গে যুক্ত হয়। ছিট বিনিময়ের ফলে বাংলাদেশ পেয়েছে ১১১টি ছিটের ১৭ হাজার ২৫৮ একর এবং ভারত পেয়েছে ৫১টি ছিটের ৭ হাজার ১০২ একর জমি। জনগণনা অনুযায়ী বাংলাদেশের ১১১টি সদ্য বিলুপ্ত ছিটের লোকসংখ্যা ৪১ হাজার ৪৪৯ জন। ছিটবাসীর জীবনমান উন্নয়ন করে মূল স্রোতধারায় সম্পৃক্ত করতে সরকার বিশেষ উন্নয়ন প্যাকেজ ঘোষণা করে।

৬৮ বছর অন্ধকারে থাকা মানুষগুলোর মাঝে প্রধানমন্ত্রী বিদ্যুতের আলো জ্বালিয়ে উন্নয়নের মূল স্রোতে নিয়ে আসার সূচনা করবেন। ঘোষণা করবেন ইন্দিরা-মুজিব দাসিয়ারছড়া ইউনিয়ন পরিষদের। ছিটবাসীর চাওয়া-পাওয়া নিয়ে খোলামেলা মতবিনিময় করবেন তিনি।

সদ্য বিলুপ্ত ছিটমহল দাসিয়ারছড়ার আলতাব হোসেন বলেন, ‘সদ্য বিলুপ্ত ১১১টি ছিটের মধ্যে সর্ববৃহৎ কুড়িগ্রামের দাসিয়ারছড়া। সদ্য নাগরিকত্ব পাওয়া ছিটমহলের মানুষগুলো এই প্রথম কোনো সরকারপ্রধানের সান্নিধ্য পেয়েছে। এটা আমাদের কাছে স্বপ্নের মতো।’

কুড়িগ্রাম জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ও প্রাক্তন সংসদ সদস্য মো. জাফর আলী বলেন, ‘আমাদের জননেত্রী শেখ হাসিনা কুড়িগ্রামের মানুষকে ভালোবাসেন। জননেত্রীর আগমনে কুড়িগ্রামের মানুষ খুশিতে উদ্বেলিত হয়ে পড়েছে। আমরা তার কাছে কুড়িগ্রাম জেলার সার্বিক উন্নয়নের দাবি জানাই।’

কুড়িগ্রামের পুলিশ সুপার মোহাম্মদ তবারক উল্ল্যাহ জানান, সদ্য বিলুপ্ত ছিটমহলসহ সরকারি কলেজ মাঠে জনসভার জন্য নিচ্ছিদ্র নিরাপত্তাবেষ্টনী গড়ে তোলা হয়েছে। প্রধানমন্ত্রীর আগমন সফর করতে স্থানীয় প্রশাসনের পাশাপাশি আওয়ামী লীগ নেতা-কর্মীরা সব ধরনের প্রস্তুতি নিয়েছে।



মন্তব্য চালু নেই