দিনাজপুরের ফুলবাড়ীতে নারী শ্রমিকেরা নানা বৈষ্যমের শিকার

শাহ্ আলম শাহী, দিনাজপুর থেকে : মোঃ শ্রম মজুরীর বৈষ্যমের শিকার দিনাজপুরের ফুলবাড়ী উপজেলার নারী শ্রমিকেরা। একই কাজ একই সাথে নারী পুরুষ উভয়ে করলেও মজুরীর বেলায় নারী শ্রমিকদের বেতন পুরুষ শ্রমিকদের তুলনায় অনেক কম। নারী শ্রমিকেরা বেতন বৈষ্যমের শিকার হয়েও চাকরী হারার ভয়ে কোন প্রতিবাদ না করে দিয়ে যাচ্ছে তাদের শ্রম।

সরেজমিনে ফুলবাড়ী উপজেলার সর্ববৃহৎ মির্জা গ্রুপ অফ কোম্পানীর জুট মিলে গিয়ে দেখা যায়, মির্জা ওভেন ব্যাগ, মির্জা জুটমিল, মির্জা অটো রাইস মিল ও ফুলবাড়ী ফ্লাওয়ার মিলে ২ হাজার ১’শ শ্রমিক কাজ করে। তার মধ্যে অধিকাংশ নারী শ্রমিক।

মির্জা জুটমিলের উৎপাদন ব্যবস্থাপক (পিএম) আবু বক্কর সিদ্দিক বলেন, এখানে কর্মরত পুরুষ শ্রমিকেরা প্রতিদিনই ১২৫ টাকা থেকে ৪০০ টাকা পর্যন্ত হাজিরা পায়। আর নারী শ্রমিকেরা পায় ৯০ টাকা থেকে ১৫০ টাকা পর্যন্ত। পুরুষ শ্রমিক তুলনায় নারী শ্রমিকের বেতন কম কেন জিজ্ঞাস করলে তিনি বলেন তাদের সঙ্গে এই চুক্তি করেই কাজ দেয়া হয়েছে। একই চিত্র মির্জা অটো রাইস মিল, ফুলবাড়ী ফ্লাওয়ার’স মিল এবং ফুলবাড়ীর সুজাপুরে পিডিকন প্লাস্টিক অপর একটি কারখানার।

এই কারখানায় গিয়ে দেখা যায় সেখানে প্রায় ৪’শ শ্রমিক কাজ করে। তার মধ্যে অধিকাংশ নারী। এখানে পুরুষ শ্রমিকেরা প্রতিদিনই ২শ টাকা হাজিরা পেলেও নারী শ্রমিকেরা মাত্র ৬০ টাকা এবং কাজ করতে গিয়ে কোন প্রকার দূর্ঘটনার শিকার হলেও কর্তৃপক্ষ তার কোন দায় নেয় না।

এভাবে দিনের পর দিন মজুরী বৈষ্যমের শিকার হলেও তারা প্রতিবাদ করতে পারছেনা ।

এই কোম্পানীগুলোতে কর্মরত নারী শ্রমিকেরা নাম প্রকাশ না করার শর্তে বলেন, যখন সরকারি কোন প্রতিনিধি কিংবা সাংবাদিক আসে তার আগেই তাদেরকে সতর্ক করা হয়। কোন প্রকার তথ্য দিলে তাদের চাকুরী চলে যায়। এজন্য তারা দিনের পর দিন বেতন বৈষ্যমের শিকার হয়েও প্রতিবাদ না করে জীবিকার দায়ে স্বল্প বেতনেই কাজ করে যাচ্ছে।

কিন্তু স্থানীয় এইসব শিল্পকারখানার মালিক শ্রমিকদেরকে স্বল্প বেতন দিয়ে কাজ করিয়ে নিচ্ছে। দূর্ঘটনা ঘটলে তাদের যত সামান্য চিকিৎসা হলেও অনেকে অঙ্গহানি হয়ে বেকারত্ব জীবন যাপন করছে। শিল্প মালিকদের নারী শ্রমিকদের প্রতি নেই কোন গুরুত্ব।



মন্তব্য চালু নেই