দিনাজপুরে ১০ টাকা কেজি দরের চাউল বিতরনে অনিয়ম-দুর্নীতি

শাহ্ আলম শাহী, দিনাজপুর থেকেঃ হত দরিদ্র পরিবারকে ১০ টাকা কেজি দরের চাউল বিতরণে ব্যাপক অনিয়ম-দুর্নীতির অভিযোগে বিক্ষোভ ও ঘেরাও কর্মসূচী অনুষ্ঠিত হয়েছে দিনাজপুরে ।

১০ টাকা কেজি মূল্যের ৬৮১০ কেজি চাল ডিলার হেলাল হোসেন আত্মসাত করেছে এই অভিযোগে বিরল উপজেলার ১১ নং পলাশবাড়ী ইউনিয়নে সোমবার বিকেলে বিক্ষোভ করে বঞ্চিতরা। তারা ঘেরাও করে ডিলারের চাল সরবরাহের স্থান। এর আগে এনিয়ে স্থানীয় সংসদ সদস্য এবং স্থানীয় প্রশাসনকে লিখিত অভিযোগও দেয় খোদ সরকার দলীয় ক্ষমতাসীন আওয়ামীগের স্থানীয় নেতারা। শুধু ১০ টাকা কেজি মূল্যের ৬৮১০ কেজি চাল আত্মসাত নয়, তালিকা ভুক্ত ৪৫৪ জনের মধ্যে প্রায় ২০০ জনকে কার্ড এখন পর্যন্ত দেয়া হয়নি বলে জানিয়েছে অভিযোগকারীরা।এ বিষয়ে স্থানীয় প্রশাসন তদন্ত কমিটি গঠন করলেও ধরাছোয়ার বাইরে রয়েছে অভিযুক্তরা। এনিয়ে চরম উত্তেজনা রিরাজ করছে। হত দরিদ্ররা ছাড়াও খোদ আওয়ামীলীগের নেতারা ফুঁসে উঠেছে। এনিয়ে যে কোন মুহুর্তে রক্তক্ষয়ী সংঘর্ষের আশংকা করা হচ্ছে।

অভিযোগে জানা গেছে,দিনাজপুরের বিরল উপজেলার ১১ নং পলাশবাড়ী ইউনিয়নে হত দরিদ্র পরিবারকে ১০ টাকা কেজি দরের চাউল বিতরণের ডিলার সংশ্লিষ্ট ইউপি চেয়ারম্যানের ডান হাত বলে খ্যাত কথিত আওয়ামীলীগ নেতা হেলাল হোসেন প্রথম পর্যায়ে ৬ সেপ্টেম্বর ০৫৩০৩২৭৬ নং ডিও’র মাধ্যমে ৬৮১০ কেজি চাল উত্তোলন করেন। ২য় পর্যায়ে ২২ সেপ্টেম্বর ৫৩০৩৭০২ নং ডিও’র মাধ্যমে আরও ৬৮১০ কেজি চাল উত্তোলন করেন। কিন্তু ২য় পর্যায়ের উত্তোলিত চাল পাইনি কেউ।

এ বিষয়ে ২ অক্টোবর স্থানীয় সংসদ সদস্য খালিদ মাহমুদ চৌধুরী, জেলা প্রশাসক,জেলা খাদ্য নিয়ন্ত্রক,বিভাগীয় কমিশনারসহ স্থানীয় প্রশাসনকে লিখিত অভিযোগ দেয় খোদ সরকার দলীয় ক্ষমতাসীন আওয়ামীগের পলাশবাড়ী ইউনিয়নের সভাপতি মো. মজহারুল হক,সাবেক ইউপি চেয়ারম্যান সালাউদ্দিন,ইউপি সদস্য আজাহার আলী,ইউপি সদস্য মনসুর আলী ও মো.শাহাজান।

অন্যদিকে একই অভিযোগে বিরল উপজেলার ১১ নং পলাশবাড়ী ইউনিয়নে সোমবার বিকেলে বিক্ষোভ করে বঞ্চিতরা। তারা ঘেরাও করে ডিলারের চাল সরবরাহের স্থান। ২২ সেপ্টেম্বর উত্তোলনকৃত চাল ৩০ সেপ্টেম্বররের মধ্যে বিতরণ করার কথা থাকলেও অভিযোগ দাখিলের পর অবস্থার বিগতিক দেখে ধুরন্ধর ডিলার হেলাল হোসেন ৩ অক্টোবর সকালে কিছু চাল কিনে এনে শাক দিয়ে মাছ ঢাকতে চাল বিতরণের প্রচেষ্টা চালায়।

কিন্তু বিক্ষুদ্ধ হয়ে ওঠে স্থানীয় এলাকাবাসী। বিকেলে বিক্ষোভ করে বঞ্চিতরা। তারা ঘেরাও করে ডিলারের চাল সরবরাহের স্থান। এ সময় উপস্থিত হয় তদন্ত কমিটি’র খাদ্য কর্মকর্তারা। তারা স্ব-চোখে তা পর্যবেক্ষণ করেন। বিক্ষুদ্ধ চাল বঞ্চিত হত দরিদ্র মানুষ ও স্থানীয় জনতাকে প্রসমিত করার প্রচেষ্টা চালায়।

কিন্তু এ রিপোর্ট লেখা পর্যন্ত আইনগত কোন ব্যবস্থা নেইনি অভিযুক্ত ডিলার হেলাল হোসেনের বিরুদ্ধে।
এবিষয়ে অভিযুক্ত ডিলার হেলাল হোসেনের সাথে যোগাযোগ করা হলেও তিনি এ বিষয়ে কথা বলতে অস্বীকৃতি জানান।

সংশ্লিষ্ট একটি সুত্র জানায়, ২য় পর্যায়ে ২২ সেপ্টেম্বর বিরল এলএসডি গোডাউন থেকে ৫৩০৩৭০২ নং ডিও’র মাধ্যমে ৬৮১০ কেজি চাল উত্তোলণের সাথে সাথে ওই চাল ডিলার হেলাল হোসেন আওয়ামীলীগের স্থানীয় ক্ষমতাধর ডিও ব্যবসায়ী খ্যাত ইউপি চেয়ারম্যানের কাছে বিক্রি করে দেন।

এ বিষয়ে ওই স্থানীয় ক্ষমতাধর ডিও ব্যবসায়ী খ্যাত ইউপি চেয়ারম্যানেরর সাথে যোগাযোগ করা হলে তিনি চাল ক্রয় করার বিষয়টি অস্বীকার করেন। তবে সাফাই গান ডিলার হেলাল হোসেনের পক্ষে।

স্থানীয় আওয়ামীলীগের তৃর্ণ মুল পর্যায়ের নেতারা ক্ষোভের সাথে জানান, আওয়ামীলীগের কথিত নেতাদের কারণে আর সরকারের ভালো কর্মসূচী ভেস্তে যাচ্ছে। আওয়ামীলগে ডুবিয়ে দিচ্ছে এসব কথিত নেতারা। চিহিৃত করে অতিদ্রুত অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা গ্রহণের দাবী তৃর্ণ মুল পর্যায়ের নেতা-কর্মীদের।



মন্তব্য চালু নেই