দিনে ৫ বার মৃত্যুর কথা চিন্তা করলে জীবনে সুখ আসে!

‘সারক্ষণই’ আমাদের তাড়া করে মৃত্যুভয়। বয়স বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে এই প্রবণতাও বাড়তে থাকে। অনেকে মনোবিদেরও সাহায্য নেন। কিন্তু, আমরা কেউ জানিই না, মৃত্যুর কথা চিন্তা করলে আসলে জীবন সুখের হয়।

বয়স যত বাড়তে থাকে আমরা ততই মৃত্যুর কথা চিন্তা করতে থাকি। মনোবিজ্ঞানের ভাষায় এই ধরণের প্রবণতাকে বলা হয়‘থ্যানাটোফোবিয়া’ বা ‘মৃত্যু ভয়’।

নানা কারণে এই মৃত্যুভয় আমাদের মধ্যে তৈরি হয়। মনোবিজ্ঞানীদের মতে, বয়স যত বাড়তে থাকে ততই সকলের মনে হয়, জীবনের সময় কমে আসছে। বেঁচে আছি ঠিক, কিন্তু, যে কোনও মুহূর্তে মৃত্যু আসতে পারে। এতেই মৃত্যুর ভয় তৈরি হয়।

এছাড়াও আমাদের শরীরে যে উত্তেজনা তৈরি হয়, তা যদি শরীর এবং মনের ধারণক্ষমতার থেকে বেশি হয় তাহলেও আমাদের মধ্যে মৃত্যুভয় তৈরি হয়। যার জন্য বহু লোক একটুতে টেনশন করলে বা ঘনঘন শ্বাস ফেলতে থাকলে তাঁদের মনে প্রথমে মৃত্যুর কথাই আসে। তবে, এই মৃত্যুর চিন্তাটা যে কোনও লোকের মনে আসে আতঙ্ক থেকে।
কিন্তু, সাহসের সঙ্গে যদি মৃত্যুর কথা চিন্তা করা যায় তাতে জীবন সুখী হয় বলেই জানাচ্ছেন মনোবিদরা। আমেরিকার কেনটাকি বিশ্ববিদ্যালয়ের এক গবেষণাতেও এই কথা প্রকাশ পেয়েছে।
বৌদ্ধধর্ম মতে, মৃত্যু চিন্তা মানুষের মধ্যে জীবনের আশা জাগিয়ে তোলে, আর তাই জীবন সুখী হয়।

বৌদ্ধধর্মে বর্ণিত কথা মেনে ভুটানের মানুষ দিনে অন্তত ৫ বার করে মৃত্যুর কথা চিন্তা করেন। এতে তাঁদের জীবন সুখী হয় বলে দাবি। ভুটানের প্রতিটি মানুষ দিনে অন্তত ৫ মিনিট করে এই মৃত্যুর কথা চিন্তা করে।
মানুষ যত মৃত্যুর কথা চিন্তা করবে ততই তাঁর নাকি সাংসারিক দায়বদ্ধতার কথা খেয়াল পড়বে। আর ততই মৃত্যুর সত্যটাকে বুঝতে পারে। এতে একদিকে মৃত্যুভয় যেমন কমতে থাকে, অন্যদিকে, তেমনি প্রতিনিয়ত জীবনকে সুখী করতে উদ্যোগী হয় মানুষ।
এর জন্য ভুটানের মানুষ মৃত ব্যক্তির জন্য ৪৯ দিন ধরে শোক পালন করে। শোক পালন মানে দুঃখ-ভারাক্রান্ত হয়ে থাকা নয়। নেচে-গেয়ে মৃত ব্যক্তির উদ্দেশে শ্রদ্ধা জ্ঞাপনই চল। এভাবেই ভুটানের মানুষ মৃত্যুভয়কে জয় করেছেন। আর বিশ্বের সবচেয়ে সুখী দেশ বলে নিজেদের প্রতিষ্ঠিত করেছে।



মন্তব্য চালু নেই