‘দুর্ঘটনা আঁচ করতে পেরে বাবা-মা জড়িয়ে ধরেন আমাকে’

‘মঙ্গলবার সকালে মা বাবার সাথে অটোরিক্সা করে স্কুলে যাচ্ছিলাম। বিপরীত দিক থেকে আসছিল বেপরোয়া গতির একটি প্রাইভেট কার। কারটিকে এভাবে আসতে দেখে আসন্ন দুর্ঘটনা আঁচ করে প্রথমে মা আমাকে জড়িয়ে ধরেন; মুহুর্তেই বাবাও জড়িয়ে ধরেন। মা-বাবা দু’জনে আমাকে বাঁচানোর জন্য জড়িয়ে ধরায় আমি নিচে পড়ে যাই।’

এভাবেই বুধবার সকালে সিলেট ওসমানী মেডিকেল কলেজের ৪র্থ তলার ৬ নং ওয়ার্ডের বিছানায় শুয়ে স্বজনদের কাছে গতকালের (মঙ্গলবার) ভয়াবহ দুর্ঘটনার বর্ননা দিয়েছেন চিকিৎসাধীন অরূণিমা রায় স্নেহা।

বুধবার দুপুরে এই তথ্য জানান স্নেহার বড় মামা পার্থ প্রতীম দাস।

স্নেহা এখনও জানেনা তার মা বাবা বেঁচে নেই। আজ (বুধবার) সকালেও স্নেহা তার মা বাবার খোঁজ করেছে। তখন তাকে বলা হয়, মা বাবা হাসপাতালের নিচের তলার একটি ওয়ার্ডে ভর্তি আছেন। সবাইকে তার কাছে দেখতে পেয়ে স্নেহা বারবার নিজের মা-বাবার কথা জিজ্ঞেস করলে তাকে বলা হয়, পালাক্রমে আমরা তাদের ওয়ার্ডেও ডিউটি দিচ্ছি।

হাসপাতালে কথা হয় স্নেহার আত্মীয় ডা. ময়ুখ চৌধুরীর সাথে। এসময় ডা. ময়ুখ জানান, ‘স্নেহার এক্সরে রিপোর্টে বড় কোন ক্ষতির চিহ্ন পাওয়া না গেলেও তার শরীরের অনেক অংশ থেতলে গেছে। সিটিস্কেন রিপোর্টে মস্তিস্কে রক্তক্ষরণের ছাপ পাওয়া যায়নি। তবে ২৪ থেকে ৪৮ ঘন্টা পর্যবেক্ষণ করার পর স্নেহার শারীরিক অবস্থার বিষয়ে সিদ্ধান্ত জানাবেন কর্তব্যরত চিকিৎসকরা।’

উল্লেখ্য, মঙ্গলবার (৭ জুন) সকালে নগরীর মদনীবাগ এলাকায় সড়ক দুর্ঘটনায় নিহত হন স্নেহার বাবা স্কলার্স হোম (শাহী ঈদগাহ) এর প্রশাসনিক কর্মকর্তা অরজিৎ রায় (৫০) ও মা দক্ষিন সুরমার মহালক্ষী সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষিকা সুমিতা দাস (৪৫)। এ দুর্ঘটনায় তাঁদের একমাত্র সন্তান অরুনিমা রায় স্নেহা (১২) গুরুতর আহত হয়। স্নেহা স্কলার্সহোমের ৬ষ্ঠ শ্রেণির ছাত্রী।



মন্তব্য চালু নেই