দুর্নীতির দায়ে চার বিচারককে বরখাস্ত করেছে সুপ্রিম কোর্ট

Supreme-Court-1দুর্নীতি, অনিয়ম ও অসদাচরণের অভিযোগ প্রমাণিত হওয়ায় চার বিচারকের বরখাস্ত অনুমোদন করেছে সুপ্রিম কোর্ট। এখন অপেক্ষা শুধুই আইন মন্ত্রণালয়ের আদেশ জারির। বর্তমানে এ চারজনই আইন মন্ত্রণালয়ে সংযুক্ত আছেন। আরও দুই বিচারকের বিরুদ্ধে দুর্নীতির প্রমাণ মিললেও অবসরে যাওয়ায় তাদের বিরুদ্ধ ব্যবস্থা নেয়া হয়নি।

অধস্তন আদালতের বিচারকদের নিয়োগ, বদলি, পদোন্নতি এবং অনিয়ম দুর্নীতির বিষয়গুলো দেখভাল করে সুপ্রিম কোর্টের জেনারেল এডমিনিস্ট্রেটিভ বা জিএ কমিটি। যার প্রধান হলে প্রধান বিচারপতি।

কোন বিচারকের বিরুদ্ধে দুর্নীতি, অনিয়ম অসদারচণের অভিযোগ প্রাথমিক ভাবে প্রমাণিত হলে তাদের বিরুদ্ধে মামলা দায়েরের নির্দেশ দেয় এই কমিটি। দুর্নীতি অনিয়মের এমনই কিছু সুর্নিদিষ্ট অভিযোগের প্রমাণ হওয়ায় কুমিল্লার সাবেক নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনালের বিচারক এস এম আমিনুল ইসলাম, ঠাকুরগাঁওয়ের সাবেক জেলা জজ মো. রুহুল আমিন খোন্দকার, জামালপুরের সাবেক অতিরিক্ত জেলা জজ মোহাম্মদ সিরাজুল ইসলাম এবং খুলনার সাবেক অতিরিক্ত জেলা জজ মঈনুল হকের বিরুদ্ধে বিভাগীয় মামলা দায়েরের জন্য আইন মন্ত্রনালয়কে নির্দেশ দিয়েছিলো সুপ্রিম কোর্ট। তাদের বিরুদ্ধে এসব অভিযোগের প্রমাণও পায় তদন্ত কর্মকর্তা।

এই চার বিচারকের দেয়া কোন ব্যাখ্যাই সন্তুষ্ট করতে পারেনি জিএ কমিটিকে। পরে তাদের বরখাস্তের বিষয়টি ফুল কোর্ট সভায় অনুমোদনের জন্য উপস্থাপন করে। তদন্ত প্রতিবেদন পর্যলোচনা করে হাইকোর্ট বিভাগের সকল বিচারপতির উপস্থিতিতে প্রধান বিচারপতি চার বিচারককে চাকরি থেকে বরখাস্তের অনুমোদন দেয়।

বরখাস্ত বিচারক এস এম আমিনুল ইসলাম ঢাকায় কর্মরত থাকাকালীন জামিন অযোগ্য ২০টি মামলায় আসামীদের অর্থের বিনিময়ে জামিন দিয়েছেন।

সাবেক জেলা জজ মো. রুহুল আমিন খোন্দকারের বিরুদ্ধে অভিযোগ-ঠাকুরগাঁওয়ের বিচারক থাকাকালীন ঘুষ নিয়ে সেখানে নিচু পদে অসংখ্য কর্মচারী নিয়োগ দিয়েছেন।

তৃতীয় বরখাস্ত বিচারক সাবেক অতিরিক্ত জেলা জজ মোহাম্মদ সিরাজুল ইসলাম জামালপুরে থাকাকালীন আদালতে অনিয়মিত ছিলেন এবং সেখানে অবৈধভাবে জমি দখলও করেছেন।

সর্বশেষ সাবেক অতিরিক্ত জেলা জজ মঈনুল হকের বিরুদ্ধে ৬৮ জন আইনজীবী অভিযোগ করেছেন তিনি খুলনায় দায়িত্ব পালনের সময় টাকা নিয়ে মামলার রায় দেন।

দুর্নীতির অভিযোগ উঠলেও প্রমাণ না পাওয়ায় অব্যাহতি দেয়া হয়েছে কক্সবাজারের সাবেক চিফ জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট বর্তমানে সিলেটের অতিরিক্ত জেলা জজ সৈয়দ হুমায়ুন আজাদ ও ময়মনসিংহের জেলা জজ আদালতের অধীন ঈশ্বরগঞ্জ চৌকি আদালতের সাবেক সিনিয়র সহকারী জজ মোহাম্মদ কামাল খানকে।

গত বৃহস্পতিবারই এই চার বিচারককে বরখাস্ত অনুমোদনের নথি পাঠিয়ে দেয়া হয়েছে আইনমন্ত্রণালয়ে। নিয়মানুযায়ী আইন মন্ত্রণালয় এই চার বিচারককে বরখাস্তের আদেশ জারি করবেন। তারা এখন আইনমন্ত্রণালয়ে সংযুক্ত আছেন।

https://youtu.be/SBYtm3emcZo



মন্তব্য চালু নেই