“দেখ তো আপু আমার বগলের গন্ধ কি রকম?”

সবার নিকট ক্ষমা প্রার্থী একটি নোংরা স্ট্যাটাস দেয়ার জন্য। অনেকের প্রিয় এক ভাইয়ের আজ দেয়া এক পোস্টের প্রেক্ষিতে আমার এই লিখার অবতারণা। আমাদের পরবর্তী জেনারেশনের জন্য মোটিভেশনাল পোস্ট দিয়েছে সে।

“এই পদ্মা, এই মেঘনা, এই যমুনা সুরমা নদী তটে” আর “এই মধুমতী ধানসিঁড়ি নদীর তীরে……” গানের সুর জীবনের মাঝে আবার ফিরিয়ে আনতে চাচ্ছে সে।

তার ভাষায়, ঘর থেকেই শুরু হোক সেই পরিবর্তন।

এক বড় লোক আত্মীয়ের বাসায় গিয়েছি। সময়ের কিছুটা আগেই গিয়েছিলাম। কর্তা বাবু তখনও অফিস থেকে ফেরেন নি। বেগম সাহেব রান্নায় ব্যস্ত। আমি ড্রয়িং রুমে বসে তার স্কুলে পড়া দুই ছেলে মেয়ের সাথে বসে টিভির দিকে তাকালাম। ভাই বোন আনন্দের সাথে গভীর মনোযোগ দিয়ে চিত্র উপভোগ করছে।

বিশেষ একটি চ্যানেলে চোখ আটকে গেল। বিশাল হল রুম। কিছু স্বাস্থ্যবান যুবক খালি গায়ে সারি বেধে ব্যায়াম করছে। সোফায় বসা স্বল্পবসনা সুন্দরী রমণীরা হেসে গড়াগড়ি। এরপর শুরু হল যুবকদের ইন্সট্রুমেন্টাল এক্সারসাইজ। ঘেমে নেয়ে উঠল যেন তারা। দরদর করে ঘাম ঝরছে। বিমুগ্ধ রমণীরা!!

মাথার উপর দুই হাত তুলে সারি বেধে দাঁড়াল যুবকেরা। উপরে কোন কাপড় নেই, খালি গা। আমার পাশে বসা বাচ্চা দুইটা চিৎকার করে হাততালি দিয়ে উঠল।

এরপর সুন্দরী রমণীরা একে একে আনন্দের ফল্গুধারায় সবার বগল শুঁকে যাচ্ছিল। একবারে ঐ জায়গার সাথে প্রায় নাক লাগিয়ে। পরম তৃপ্তিতে সবাই অনেকক্ষণ ধরে সবার বগলের গন্ধ শুঁকে পুরষ্কার ঘোষণা করল। তখন বুঝলাম কেন তারা এত এক্সারসাইজ করেছিল। পুরষ্কার পেল সবচেয়ে দুর্গন্ধময় বগলের মালিক। হাসি আর করতালিতে আনন্দের জোয়ার বয়ে গেল সেই হল রুমে।

গা ঘিনঘিন করে উঠল। হতভম্ব হয়ে তাকিয়ে রইলাম টিভি পর্দার দিকে। এবার আসল শিক্ষার পালা!!

আমার পাশে বসা ছেলেটি লাফ দিয়ে উঠে শার্ট খুলে ওর বোনের নাকের কাছে নিজের বগল তুলে ধরে বলল, “দেখ তো আপু আমার বগলের গন্ধ কি রকম??”

সমাজ, দেশ, রাজনীতি, অর্থনীতির ব্যাপক উন্নয়ন ঘটবে। প্রবৃদ্ধির চাকা ঊর্ধ্ব মুখে ছুটতে থাকবে। কিন্তু ধ্বংস হয়ে যাবে আমাদের ভবিষ্যৎ প্রজন্ম। নৈতিক অবক্ষয়ের কালো ছায়ায় তলিয়ে যাচ্ছে আমাদের সন্তানেরা।

সমাজনীতি, রাজনীতি, রাষ্ট্রনীতি এবং প্রত্যেক বাবা মায়ের প্রতি আকুল আবেদন, সবাই একযোগে এগিয়ে আসুন আমাদের সন্তানদের রক্ষায়। সবাই আদর্শ হয়ে দাঁড়ান প্রত্যেক সন্তানের সামনে। শুধু মুখের কথা আর বুলিতে আর কাজ হবে না। সবাই নিজ টেবিলের বাইরে চিন্তা করুন, কাজ করুন। যাতে সোনালি আদর্শের, সোনালি পথ তৈরি করা যায় দেশবাসীর সামনে।

আর বাবা মা’রা, বগলের গন্ধ মাখা এই ছেলেটির মনে যে দুর্গন্ধের ছাপ পড়ে গেল, তা আর কোনদিন মুছবে না। তার জীবনে প্রতি পদে পদে আছড়ে পড়বে পুতিগন্ধময় এক অধ্যায়। কি হবে টাকা পয়সা আর সোনাদানা দিয়ে??!!

Arif R Hossain ইয়াবা আর সানির তীরে, মধুমতী এবং ধানসিঁড়ি আর কখনোই ফিরে আসবে বলে মনে হয় না। হারিয়ে গেছে পানির ধারা, বাতাসের স্পন্দন। হারিয়ে গেছে কাশফুলের দোলা, শাপলা আর বাঁশ বাগানের উদাস করা হাওয়া।

salim



মন্তব্য চালু নেই