দেবতা দেখতে গিয়ে ফুপু-ভাতিজি ধর্ষিত

গ্রামের পরিচিত দুই যুবকের সঙ্গে বিশ্বাস করে ফুপু ও ভাতিজি গিয়েছিলেন কালীপূজার ঠাকুর দেখতে। কিন্তু সেই যুবকই কিনা করল নারীর জীবনের সবেচেয়ে বড় সর্বনাশ।

ওই দুই নারীর অভিযোগ তাদের ধর্ষণ করেছে তাদের সঙ্গে থাকা দুই যুবক। ঘটনা এখানেই শেষ নয়, লজ্জ্বা ও অপমানে এক নারী গলায় দড়ি দিয়ে আত্মহত্যাও করেছেন।

গত শনিবার রাতে ভারতের কুচবিহার জেলার মাথাভাঙার হাজরাহাট পঞ্চায়েত এলাকায় বেলেরডাঙা গ্রামে এ ঘটনা ঘটে। খবর আনন্দবাজার পত্রিকার।

পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, বেলেরডাঙা গ্রামে পাশাপাশি বাড়ি ওই দুই নারী নবম শ্রেণির ছাত্রী। সম্পর্কে তারা ফুপু ও ভাতিজি। পরিবারের সকলেই চাষের কাজ করেন।

অভিযুক্ত দুই যুবকের বয়সও বেশি নয়। তাদের সঙ্গে আগে থেকেই ওই দুই কিশোরীর আলাপ ছিল। যুবকেরা পড়াশোনা ছেড়ে দিয়েছে অনেক আগেই। একজন ট্রাক্টর চালায়, আর অন্যজন ক্ষেতে কাজ করে।

কিশোরীদের পরিবারের অভিযোগ, যুবকদের সঙ্গে তারা কালীপূজা দেখতে বেরিয়েছিল। বেরোনোর পরেই যুবকদের অভিসন্ধি বুঝতে পেরে তারা ফিরে আসতে চেয়েছিল। তখন তাদের টেনে হিঁচড়ে কাছের একটি জঙ্গলে নিয়ে গিয়ে ওই যুবকেরা ধর্ষণ করে।

বাড়ি ফিরে মেয়ে দু’টি প্রথমে সব কথা খুলে বলে। তারপর কেউ কিছু বুঝে উঠার আগেই একজন কীটনাশক খেয়ে নেয়। তাকে কোচবিহার হাসপাতালে ভর্তি করানো হয়েছে। মেয়েটির চিকিৎসা নিয়ে ব্যস্ত হয়ে পড়ায় পুলিশের কাছে অভিযোগ জানাতে পারেনি পরিবার।

রবিবার দুপুরে দুই কিশোরীর পরিবারই থানায় যায়। ঠিক সেই সময়েই ফাঁকা বাড়ি পেয়ে অন্য মেয়েটি গলায় দড়ি দেয় বলে জানা গিয়েছে।

পুলিশ জানিয়েছে, মৃত কিশোরীর ময়নাতদন্ত হচ্ছে। তা থেকেই জানা যাবে, তাকে ধর্ষণ করা হয়েছিল কি না। অসুস্থ কিশোরী খানিকটা সুস্থ হলে তার জবানবন্দি নেওয়া হবে। ডাক্তারি পরীক্ষাও করা হবে।

কোচবিহারের পুলিশ সুপার অনুপ জায়সবাল বলেন, ‘যেমন অভিযোগ হয়েছে, তেমনই মামলা দেওয়া হচ্ছে। অভিযুক্তদের খোঁজে তল্লাশি শুরু হয়েছে।’

দীপাবলির রাতে এই ঘটনায় রাতারাতি বদলে গিয়েছে গোটা গ্রামই। রবিবার রাতে প্রদীপ জ্বলেনি তেমনভাবে। তার উপর এলাকারই দুই যুবক অভিযুক্ত হওয়ায় গ্রামের মানুষের মন আরও ভেঙে গিয়েছে।

চিকিৎসাধীন কিশোরীর বাবা বলেন, ‘দীপাবলির দিন আনন্দ করবে ভেবেছিল মেয়েটা। আলোর উৎসবের সেই দিনটাই জীবনে অন্ধকার নিয়ে আসবে দুঃস্বপ্নেও মনে হয়নি।’

আত্মঘাতী কিশোরীও খুবই প্রাণবন্ত ছিল বলে জানিয়েছেন পরিবার ও গ্রামের লোকেরা। নবম শ্রেণীর পড়ুয়া ওই দুই কিশোরীই নানা প্রতিবন্ধকতার মধ্যেও পড়াশোনা চালিয়ে যাচ্ছিল।

মাথাভাঙা ১ পঞ্চায়েত সমিতির সদস্য আবু তালেব আজাদ বলেন, ‘অত্যন্ত দুঃখজনক ব্যাপার। পুলিশের তদন্তেই সব কিছু স্পষ্ট হয়ে যাবে। দোষীরা পার পাবে না।’

রাজ্য জুড়ে নারী নির্যাতনের অজস্র ঘটনা বেশ কয়েক বছর ধরেই বারবার সংবাদের শিরোনামে আসছে। তার মধ্যে অনেকগুলিতেই লালসার শিকার হতে দেখা যাচ্ছে নাবালিকাদের।



মন্তব্য চালু নেই