দেবীগঞ্জের মোটরসাইকেল ছিনতাইকারীকে ডিমলায় গণধোলাই : থানায় আটক

নীলফামারী প্রতিনিধি : আন্ত:বিভাগ মটেরসাইকেল ছিনতাই ও চোরাই চক্রের হোতা মানিক নামের এক যুবককে একটি হিরো হোন্ডা মটরসাইকেলসহ আটক করে গণধোলাই দিয়ে অবশেষে ডিমলা থানা পুলিশের কাছে হস্তান্তর করা হয়েছে বলে খবর পাওয়া গেছে। জানা যায়, পঞ্চগড় জেলার দেবীগঞ্জ উপজেলার পামুলী ডাঙ্গাপাড়া গ্রামের মৃত: শরাফত ইসলামের পুত্র মো: মানিক ইসলাম (২৫)কে একটি হিরো হোন্ডা মটরসাইকেলসহ ছোটপুল নামক স্থানে আটক করে স্থানীয় বাসিন্দা ডিমলা উপজেলার সদর ইউনিয়নের কুমারপাড়া গ্রামের জনৈক্য দুলাল হোসেন, এনামুল হক ও পল্লী চিকিৎসক মাজহারুল ইসলাম প্রমূখ।

ঘটনার সূত্র ধরে সরজমিনে গত ৩০ এপ্রিল দুপুরে উক্ত এলাকায় গিয়ে এলাকাবাসীর সাথে কথা বলে জানা যায়, ঘটনার দিন সকালে ছিনতাইকৃত মটরসাইকেলটিসহ ছিনতাইকারী দেবীগঞ্জের মানিক কুখ্যাত চোর ও ছিনতাইকারী মৃত তছলিম চৌধুরী এর পুত্র তুহিন নামের এক যুবকের তার শশুড় বাড়ীতে আসে মটরসাইকেলটি বিক্রির উদ্দেশ্যে। তুহিন মোটরসাইকেলটি বিক্রয়ে ব্যর্থ হওয়ায় এবং এলাকাবাসীর সন্দেহ হলে একই গ্রামের দুলাল, এনামুল ও মাজহারুল ঘটনাস্থলে এসে মানিককে নিয়ে মটরসাইকেলসহ নতুন বাজার নামক স্থানে ছেলেটিকে একটি রাবার গাছের সাথে বেঁধে রাখে প্রায় দেড় ঘন্টা।

এ সময়ের মধ্যে ছেলেটির কাছে ৫০ হাজার টাকা দাবী করে তারা। টাকা হলে তাকে ছেড়ে দেওয়া হবে। নইলে জীবনে মেরে ফেলা হবে বলে মানিককে হুমকী অব্যাহত রাখে তারা। এ ঘটনায় মানিক তাদেরকে ৩০ হাজার টাকা দেওয়ার স্বীকারও করে। কিন্তু টাকা দাবীকারীরা ৩০ হাজার টাকায় রাজি হয় না। এরই মধ্যে এ খবর ছড়িয়ে পড়ে এলাকায়। পরে সংবাদকর্মীরা খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে যাওয়ার পূর্বে ঐ তিন ব্যক্তি ছিনতাইকারী ছেলেটি ও তার মটরসাইকেল নিয়ে সটকে পড়েন। সংবাদকর্মীরা ঘটনাস্থলে ছেলেটি ও মটরসাইকেলটির সন্ধান না পেয়ে ফিরে আসেন। এদিকে সংবাদকর্মীরা ঘটনার খবর পেয়েছে এ খবর আটককারী ব্যাক্তিরা জানতে পেরে তারা ছিনতাইকারী মানিককে জনতার হাতে তুলে দিয়ে মটরসাইকেলটি নিয়ে কেটে পরেন।

বিক্ষুপ্ত জনতা মানকিকে বেদম মারপিট করে ঘটনার দিন সন্ধার পূর্বেই মানিককে থানা পুলিশের কাছে হস্তান্তর করে। এ ঘটনার কিছু পরেই তারা মটরসাইকেলটি থানায় জমা দেন । এদিকে থানায় আটককৃত মানিকের সাথে সরাসরি যোগাযোগ করা হলে সে সংবাদকর্মীদের কাছে বলে, আজ থেকে ২/৩ বছর পূর্বে পঞ্চগড়ে একটি চুরির স্পটে পরিচয় ঘটে নীলফামারীর ডোমার উপজেলার হরিণচড়া গ্রামের মৃত তছলিম চৌধুরী এর পুত্র তুহিনের সাথে। সে একটি হিরো হোন্ডা চোরাই মোটরসাইকেল বিক্রি করবে মর্মে আমাকে ফোনে জানালে আমি ৩৫ হাজার টাকা নিয়ে আসি ঐ মটরসাইকেলটি ক্রয়ের জন্য। কিন্তু তুহিন ওর বউকে সাথে নিয়ে মটরসাইকেলটি অন্যত্র রেখে আমার সাথে দেখা করে প্রথমে তুহিনের বউকে দিয়ে আমার কাছে থাকা ৩৫ হাজার টাকা ছিনিয়ে নেয়। পরে আমাকে উল্টো ফাঁসিয়ে ঐ মটরসাইকেল দেখিয়ে তিনজনকে লোককে তুহিন ফোনে ডেকে এনে আমার কাছে আরো টাকা দাবী করে। আমি প্রথমে টাকা দিতে না চাইলে তারা আমাকে বিভিন্ন জায়গায় নিয়ে যায় এবং আমাকে জানে মেরে ফেলার হুমকী দিতে থাকে।

সারাদিন আমাকে কখনও মটরসাইকেল কখনও পায়ে হেটে নির্জন এলাকায় নিয়ে গিয়ে আমাকে প্রচন্ড মারধর করে তারা। এরপর ঐ তিন ব্যক্তি জানতে পারে ঘটনাটি অনেকইে জেনে ফেলেছে ফলে আমাকে আর মেরে না ফেলে থানায় এনে পুলিশের হাতে দেয়। এ রিপোর্ট লেখা পর্যন্ত (০১ মে রাত ১০টা ) মানিককে ডিমলা থানার হাজত খানায় রাখা হয়েছে। এ ঘটনায় ডিমলা থানার তদন্তকারী এসআই এমাদ উদ্দিন ফারুক ফিরোজ জানান, ঘটনার সূত্র ধরে তদন্ত চলছে। তিনি আরো বলেন, এ ঘটনায় তদন্ত করে আইনী ব্যাবস্থা নেওয়া হবে।



মন্তব্য চালু নেই