দেশের ৬১ শতাংশ মানুষ স্যানিটেশনের আওতায়

বাংলাদেশের মোট জনসংখ্যার ৬১ শতাংশ মানুষ স্যানিটেশনের আওতায় রয়েছে।

স্যানিটেশন ব্যবস্থায় মিলেনিয়াম ডেভেলপমেন্ট গোল বাস্তবায়নের ক্ষেত্রে বাংলাদেশ ব্যাপক অগ্রগতি সাধন করেছে। গত বারো বছরে স্যানিটেশন ব্যবস্থায় ২৮ শতাংশ উন্নয়ন হয়েছে।

বুধবার সন্ধ্যায় বঙ্গবন্ধু আর্ন্তজাতিক সম্মেলন কেন্দ্র ‘ষষ্ঠ সাউথ এশিয়ান কনফারেন্স অন স্যানিটেশন (স্যাকোসান)’ এর সমাপনী অনুষ্ঠানে স্থানীয় সরকার, পল্লী উন্নয়ন ও সমবায় (এলজিআরডি) মন্ত্রী ইঞ্জিনিয়ার খন্দকার মোশাররফ হোসেন এ কথা বলেন। এ সময় তিনি তিনদিনব্যাপী সম্মেলনের আনুষ্ঠানিক সমাপ্তি ঘোষণা করেন।

এ সঙ্গে স্যানিটেশন ব্যবস্থার অগ্রগতি ও পরিষ্কার-পরিচ্ছন্নতায় সচেতনতা বৃদ্ধিতে কার্যকর পদক্ষেপ নেওয়ার ঘোষণা এবং ঢাকা ডিক্লারেশনের মধ্য দিয়ে শেষ হলো ষষ্ঠ সাউথ এশিয়ান কনফারেন্স।

সভাপতির বক্তব্যে মন্ত্রী বলেন, দক্ষিণ এশিয়ায় স্যানিটেশনে বাংলাদেশ এগিয়ে। সুস্থ জাতি গঠনে টেকসই স্যানিটেশন ব্যবস্থা নিশ্চিত করা অপরিহার্য। এ ক্ষেত্রে বাংলাদেশ সন্তোষজনক অগ্রগতি লাভ করেছে।

তিনি বলেন, ২০০৩ সালে দেশব্যাপী ৩৩ শতাংশ হাউজহোল্ড হাইজেনিক টয়লেট ব্যবহার করতো। ২৫ শতাংশ ব্যবহার করতো আনহাইজেনিক টয়লেট। আর ৪২ শতাংশ হাউজহোল্ড বা ৫৫ শতাংশ মানুষ কোনো প্রকার টয়লেট ব্যবহার করতেন না। কিন্তু এ বারো বছরে সে অবস্থার ব্যাপক পরিবর্তন হয়েছে।

তিনি বলেন, আওয়ামী লীগ সরকার ক্ষমতায় আসার পর নানামুখী উদ্যোগের কারণে এখন ৬১ শতাংশ হাউজহোল্ড টয়লেট ব্যবহার করে। ২০০৩ সালের চেয়ে ২৮ শতাংশ বেশি।

এরজিআরডি মন্ত্রী বলেন, নিরাপদ পানি ও স্যানিটেশন ব্যবস্থা মানবজীবনের মৌলিক চাহিদা। কিন্তু দুর্ভাগ্যবশত লাখ লাখ মানুষের এ মৌলিক অধিকার নেই। সাউথ এশিয়ার বিশাল সংখ্যক মানুষের এ সুবিধা নেই। এজন্য এ অঞ্চলে শিশু মৃত্যুহার খুব বেশি।

স্যানিটেশন সম্পর্কিত চ্যালেঞ্জ নিয়ে তথ্য আদান-প্রদানের জন্য ‘স্যাকোসান’ একটি কমন মঞ্চ। যেখানে রাজনৈতিক ও কারিগরি দিক দিয়ে আলোচনা ও পরবর্তীতে যা বাস্তবায়নের সুযোগের ক্ষেত্র তৈরি করে।

মন্ত্রী বলেন, স্যানিটেশন ব্যবস্থার উন্নয়নের জন্য আওয়ামী লীগ সরকার শুধু পলিসি তৈরি এবং প্রতিশ্রুতি দেয়নি। বর্তমান সরকার তা বাস্তবায়নের জন্য এখাতে বাজেট বরাদ্দও বাড়িয়েছে। বাংলাদেশ বিশ্বের ১৯২টি দেশের সঙ্গেই ২০৩০ সালের মধ্যে এ খাতে স্থায়ীত্বশীল উন্নয়নের জন্য কাজ করছে।

স্থানীয় সরকার বিভাগের সচিব আবদুল মালেকের সভাপতিত্বে সমাপনী অনুষ্ঠানে অন্যান্যের মধ্যে বক্তৃতা করেন জাতিসংঘের প্রতিনিধি এডওয়ার্ড বিগবার্ডার, বিশ্বব্যাংক প্রতিনিধি প্যারামেসোয়ারান ল্যায়ার, সার্কের মহাসচিব অর্জুন বাহাদুর থাপা।

এছাড়া আফগান্তিান, ভুটান, ভারত, মালদ্বীপ, নেপাল, পাকিস্তান এবং শ্রীলঙ্কার প্রতিনিধিরা বক্তৃতা করেন।

অনুষ্ঠানে ঢাকা ঘোষণা দেন বাংলাদেশ সরকারের স্থানীয় সরকার বিভাগের পলিসি সাপোর্ট ইউনিটের প্রকল্প পরিচালক কাজী আবদুল নূর।

এর আগে আর্ন্তজাতিক এই সম্মেলনে অংশ নেওয়া সব দেশের মন্ত্রীদের মধ্যে ‘নিরাপদ স্যানিটেশন ও ড্রিংকিং ওয়াটার নিশ্চিতের লক্ষ্যে পারষ্পরিক সহযোগিতা’র চুক্তি ঢাকা ডিক্লারেশন স্বাক্ষর হয়।

স্যানিটেশন ব্যবস্থার অগ্রগতি ও পরিষ্কার-পরিচ্ছন্নতায় সচেতনতা বৃদ্ধির মাধ্যমে জীবনযাত্রার মান উন্নয়নের লক্ষ্যকে সামনে রেখে এই সম্মেলনের আয়োজন করা হয়।

সম্মেলনে জানানো হয়, ‘বেটার স্যানিটেশন, বেটার লাইফ’ স্লোগান নিয়ে এবারের স্যাকোসান অনুষ্ঠিত হয়। এবারের স্যাকোসান-এর মূল লক্ষ্য ছিল, স্যানিটেশনের ওপর আঞ্চলিক এজেন্ডা তৈরি, পূর্ব অভিজ্ঞতা থেকে শিক্ষা গ্রহণ করে ভবিষ্যত পরিকল্পনা প্রণয়ন।

এশিয়া অঞ্চলের আট দেশের মন্ত্রী, সচিব পর্যায়ের কর্মকর্তা ও বিশিষ্ট ব্যক্তিরা এতে অংশ নেন। ১১ জানুয়ারি শুরু হয়ে তিনদিনব্যাপী এ সম্মেলন ১১ দফা ঘোষণার মধ্যদিয়ে আজ শেষ হলো।



মন্তব্য চালু নেই