দেশে ফিরতে চান তিন্নি হত্যা মামলার আসামি অভি

তিন্নি হত্যা মামলার আসামি ও সাবেক সাংসদ গোলাম ফারুক অভি দেশে ফেরার জন্য আকুল হয়ে আছেন। জানা যায়, এ জন্য সরকারের শীর্ষ পর্যায়েও তদবির করছেন তিনি। মডেল ও অভিনেত্রী সৈয়দা তানিয়া মাহবুব ওরফে তিন্নি হত্যাকাণ্ডের পর অভি গত একযুগ ধরে পলাতক আছেন।

২০০৮ সালের মাঝামাঝি তখনকার ডিজিএফআইয়ের মহাপরিচালক ব্রিগেডিয়ার জেনারেল ফজলুল বারি তার বিরুদ্ধে ইন্টারপোলের মাধ্যমে গ্রেফতারি পরোয়ানা জারি করেন। যা এখনো বলবৎ আছে। তিন্নি হত্যা মামলার নথি থেকে জানা যায়, ‘সাবেক সাংসদ গোলাম ফারুক অভি অনৈতিক যৌন সম্পর্ক চাপা দিতে গিয়ে তিন্নিকে খুন করেন’।

একটি বিশ্বস্ত সূত্রে জানা যায়, বর্তমান সরকারের যাত্রা শুরুর পর থেকেই গোলাম ফারুক অভি দেশে ফেরার জন্য মরিয়া হয়ে উঠেন। এ জন্য তিনি শীর্ষপর্যায়ের কয়েকজন নেতার সহযোগিতাও চান। একপর্যায়ে দেশে ফেরার জন্য ২০০৯ সালের ৯ অক্টোবর অভি রাষ্ট্রপতির কাছেও আবেদন করেন। কিন্তু বিষয়টি গণমাধ্যমে প্রকাশ পেলে নেতারা পিছু হটে যান। কিন্তু ইদানিং তিনি দেশে ফেরার জন্য আবারও উতলা হয়ে উঠেন। তাই বিভিন্ন পর্যায়ে তদবির শুরু করেছেন বলে জানা যায়।

অন্যদিকে, বহুল আলোচিত তিন্নি হত্যাকাণ্ডের বিচার আজও হয়নি। রাষ্ট্রপক্ষে সাক্ষ্য গ্রহণে ধীর গতির কারণে ঝুলে আছে এই হত্যা মামলার বিচার। তারিখের পর তারিখ পার হয়ে গেলেও দীর্ঘ ১৩ বছরে এখনো শেষ হয়নি মামলার সাক্ষ্যগ্রহণ। নানা অজুহাতে ও অজ্ঞাত কারণে সাক্ষীরা আদালতে হাজিরও হন না।

এ কারণে বছরের পর বছর ধরে ঘুরপাক খাচ্ছে মামলার বিচার। এর ফলে এই হত্যার বিচার এখনো পায়নি তিন্নির পরিবার। এ মামলায় রাষ্ট্রপক্ষে ৪১ জনকে সাক্ষী করা হলেও তিন্নির বাবা সৈয়দ মাহবুব করিম বাদী হিসেবে আংশিক জবানবন্দি দেন ঢাকার সপ্তম অতিরিক্ত জেলা ও দায়রা জজ আদালতে।

উল্লেখ্য, ২০০২ সালের ১০ নভেম্বর রাতে তিন্নিকে হত্যা করে লাশ ঢাকার বুড়িগঙ্গা সেতুর নিচে ফেলে দেওয়া হয়। তার লাশ পাওয়ার পর ২০০২ সালের ১১ নভেম্বর ঢাকার কেরানীগঞ্জ থানার পুলিশ হত্যার ঘটনায় অজ্ঞাতনামাদের আসামি করে হত্যা মামলা করেন। ছয় তদন্ত কর্মকর্তার হাত ঘুরে শুধু গোলাম ফারুক অভিকে আসামি করে পুলিশের অপরাধ তদন্ত বিভাগের ওই সময়ের সহকারী কমিশনার মোজাম্মেল হক ২০০৮ সালের ৮ নভেম্বর আদালতে অভিযোগপত্র দাখিল করেন।

অভির বিরুদ্ধে গ্রেফতারি পরোয়ানা জারির পর তার বরিশালের উজিরপুর থানার ধামুরা গ্রামের বাড়িতে আর ঢাকার ঠিকানায় ওই পরোয়ানা পাঠানো হয়। কিন্তু ওই ঠিকানায় তাকে পাওয়া যায়নি। অভির সংশ্লিষ্টতার বিষয়টি গণমাধ্যমে প্রকাশ হতে থাকলে তিনি ভারতে পালিয়ে যান। সেখান থেকে কানাডায় পাড়ি জমান। বর্তমানে তিনি কানাডাতেই অবস্থান করছেন।



মন্তব্য চালু নেই