দেহের স্থুলতা কমাতে যে কাজটি আপনাকে করতেই হবে

অতিরিক্ত ঘুমোলে মানুষের শরীরে কী কী সমস্যা দেখা দিতে পারে? প্রথমে নিশ্চয় একটি শব্দই বেশি করে মাথায় আসছে আপনার- স্থুলতা! সত্যি বলতে কি, বেশি ঘুমোলে মানুষ মোটা হয়ে যায়- এটা আমরা শুনে এসেছি সেই ছোটবেলা থেকেই। তবে এটা কি জানেন আপনি যে আপনার শরীরের এই বাড়তি চর্বিও কমাতে পারে একটি মাত্র জিনিসই? আর সেটি হচ্ছে ঘুম! অতিরিক্ত ঘুমকে শরীরের জন্যে ক্ষতিকর ভাবা হলেও বাস্তবে আপনার শরীরকে ঠিকঠাক গড়নে রাখতেও সাহায্য করে এই ঘুমই। ক্ষুধার অনুভূতিকে কমিয়ে দেয় অনেকগুন। জানতে চান কী করে? আসুন জেনে নিই।

১. ক্ষুধাকে নিয়ন্ত্রণ করা

নিউরো ইমেজে হার্ভার্ড মেডিকেল স্কুলের গবেষকদের প্রকাশিত একটি জার্নাল অনুসারে, মোট ৩৮ জন মানুষের ওপর পরীক্ষা করে অবশেষে জানতে পারেন গবেষকেরা যে আমাদের শরীরের খাবারের প্রতি আগ্রহ ও সেটা নিয়ন্ত্রণ করবার পুরো ব্যাপারটিকেই পরিচালিত করে মস্তিষ্কের পিএফসি এলাকা। এই অংশটিই অস্বাস্থ্যকর খাবার গ্রহন থেকে আমাদের বিরত রাখে আর স্বাস্থ্যকর খাবার খাওয়ার প্রতি আগ্রহ তৈরি করে। কিন্তু ঘুম না হলে এই স্থানটি ঠিকঠাক কাজ করতে পারেনা আর অস্বাস্থ্যকর ও বেশি খাবার খেয়ে ফেলে মানুষ। হয়ে যায় স্থুলতার শিকার।

২. ক্ষুধার অনুভূতি কমানো

বডি এন্ড সোল অনুসারে কম ঘুম মানুষের শরীরে কিছু হরমোন তৈরি করে যেগুলো তার ক্ষুধার অনুভূতিকে বাড়িয়ে তোলে অনেকগুন বেশি। আর এই হরমোনগুলোর ভেতরে লেপটিন রয়েছে সবার প্রথমে। কম ঘুমোলে লেপটিন তৈরি হয় বেশি। ফলে মানুষের ক্ষুধাবোধ বেশি হয় আর সে খায় বেশি। তবে ঘুম ঠিকঠাক হলে এই ব্যাপারটা হয়না। মানুষের ক্ষুধা কমে যায়। আর স্বাভাবিক থাকে তার শরীরও।

৩. শক্তি কম ক্ষয়

আমেরিকান হার্ট অ্যাসোসিয়েশনের বাত্সরিক সম্মেলনে জানা যায় যে যাদের কম ঘুম হয় তারা অন্যদের তুলনায় এমন কিছু বেশি শক্তি খরচ করেন না। বরং তাদের ক্যালোরি খরচ আর ঘুমিয়ে থাকা মানুষদের ক্যালোরির খরচ একই পরিমাণের হয়। আর ঘুম কম হলে লেপটিন হরমোন যেহেতু আমাদের ক্ষুধাবোধ বাড়িয়ে দেয় এবং আমাদের মস্তিষ্কের নিয়ন্ত্রক কাজ করেনা, আমরা বেশি খেয়ে ফেলি। আর সেটা হয়ে যায় আমাদের বাড়তি ক্যালোরির কারণ। যেহেতু সেটা খুব একটা খরচ হয়না, আমদের শরীর স্থুলও হয় বেশি।

অর্থাৎ বিজ্ঞানের মোটে যদি আপনি নিজের স্থুলতার সমস্যাটি দূর করতেই চান, তাওলে অতি অবশ্যই আপনাকে পর্যাপ্ত পরিমাণে ঘুমাতে হবে। যতই ডায়েট আর ব্যায়াম করুন না কেন, ঘুমাতে না পারলে কিন্তু সেগুলোর কিছুই স্থায়ী ফল দেবে না!



মন্তব্য চালু নেই