দ্বিতীয় দিনটি বাংলাদেশেরই

চট্টগ্রাম টেস্টের দ্বিতীয় দিনটাও খারাপ কাটেনি বাংলাদেশের জন্য। তবে দিন শেষে একটাই আফসোস, প্রতি সেশনের একেবারে শেষে উইকেট পতন। বিশেষ করে দারুণ ব্যাটিং করতে থাকা মুশফিকের শেষ সেশনে বিদায়টা ছিল স্বাগতিকদের জন্য দুঃখজনক।

এর আগে চা বিরতির খানিক আগে আউট হয়েছিলেন মাহমুদউল্লাহ রিয়াদ। আর মধ্যাহ্ন বিরতির ঠিক আগেই এক ওভারে মধ্যে ফিরেছেন ইমরুল ও মুমিনুল। আক্ষেপ থাকলেও সব মিলিয়ে দ্বিতীয় দিনটিও বাংলাদেশেরই। ৫ উইকেটে ২২১ রান নিয়ে দ্বিতীয় দিন শেষ করেছে মুশফিকরা। ফলে ৭২ রানে পিছিয়ে থেকে শনিবার আবার ব্যাটিং করতে নামবে বাংলাদেশ। ইংল্যান্ডের ৫ উইকেট গিয়েছিল ১০৬ রানে।

শুক্রবার সকালে আগের দিনের ৭ উইকেটে ২৫৮ রান নিয়ে ব্যাট করতে নামে ইংল্যান্ড। শুরুতেই ইংলিশ শিবিরে আঘাত হানলেন তাইজুল ইসলাম। প্রথম দিন তিনি ছিলেন উইকেটহীন। দ্বিতীয় দিন এসেই পেলেন সাফল্যের দেখা। প্রথম বলেই ক্রিস ওকসকে আউট করেন তিনি। ৭৮ বলে পাঁচটি চারে ৩৬ রান করেন এই ইংলিশ অলরাউন্ডার। এরপর তাইজুলের দ্বিতীয় শিকার হন আদিল রশিদ। ১০১তম ওভারে দুর্দান্ত এক ডেলিভারিতে রশিদকে সাব্বির রহমানের তালুবন্দী করান এ বাঁ-হাতি।

ইংলিশ শিবিরের কফিনে শেষ পেরেকটি ঠুকে দেন আঘাত মিরাজ। দুর্দান্ত এক ডেলিভারিতে স্টুয়ার্ট ব্রডকে মুশফিকুর রহীমের স্ট্যাম্পিংয়ের ফাঁদে ফেলেন তিনি। ফলে প্রথম ইনিংসে ২৯৩ রানে অলআউট হয় ইংল্যান্ড। বাংলাদেশের পক্ষে ৮০ রানে ৬টি উইকেট নেন মিরাজ। বাকি চার উইকেটের ২টি করে ভাগাভাগি করে নেন সাকিব ও তাইজুল।

নিজেদের প্রথম ইনিংসে ব্যাট করতে নেমে শুরুটা ভালোই করেছিল টাইগাররা। তবে মঈন আলির করা ইনিংসের ১৪তম ওভারে দলীয় ২৯ রানে পরপর দু’টি উইকেট হারিয়ে দারুণ চাপে পড়ে যায় বাংলাদেশ। ইমরুল কায়েসকে হারানোর তিন বল ব্যবধানেই বাংলাদেশের হয়ে টেস্টের সেরা ব্যাটসম্যান মুমিনুল হককেও হারাতে হয়। ২১ রান করা ইমরুলকে বোল্ড করার পর একই ওভারে দুর্দান্ত এক ঘূর্ণিতে মুমিনুলকে বেন স্টোকসের তালুবন্দী করেন মঈন।

এরপর মাহমুদউল্লাহকে সঙ্গে নিয়ে দলের হাল ধরেন তামিম। ৯০ রানের জুটি গড়ে দ্রুত দুই উইকেট হারানোর চাপ সামলে নেন তারা দু’জন। তবে চা বিরতির আগে আদিল রশিদের বলে রুটের হাতে ক্যাচ দিয়ে সাজঘরমুখী হতে হলো রিয়াদকে। আউট হবার আগে ৬৬ বলে ৩৮ রান করেন তিনি।

মাহমুদউল্লাহর বিদায়ের পর অধিনায়ক মুশফিকুর রহীমের সঙ্গে দারুণ ব্যাটিং করছিলেন দেশ সেরা ওপেনার তামিম ইকবাল। এরই মধ্যে টেস্ট ক্যারিয়ারে নিজের ১৯তম হাফ সেঞ্চুরিটাও তুলে নেন তিনি। এগিয়ে যাচ্ছিলেন সেঞ্চুরির দিকে। নামের পাশে যখন ৭৮ রান জ্বল জ্বল করছিল, তখন বুড়ো গ্যারেথ ব্যাটির বলে ধরে রাখতে পারেননি নিজের মনসংযোগ। ৩৯ বছর বয়সী এ ক্রিকেটারের বলে উইকেটরক্ষক জনি বেয়ারস্টোর হাতে ক্যাচ দিয়ে সাজঘরে ফিরে যান তামিম। ১৭৯ বলে ৭টি চারের সাহায্যে ৭৮ রান করেন এ ওপেনার।

এরপর সাকিবকে সঙ্গে নিয়ে দলের হাল ধরেন মুশফিক। আত্মবিশ্বাসের সঙ্গেই ব্যাটিং করছিলেন অধিনায়ক। তবে দিনের ১৫ বল বাকি থাকতে বেন স্টোকসের দুর্দান্ত বলে আউট হন তিনি। মিডল স্ট্যাম্পে পড়া বল আউট সুইং করে মুশফিকের ব্যাটের কানায় লেগে উইকেটরক্ষক বেয়ারস্টোর হাতে জমা পড়ে। প্রথম দফায় ধরতে না পারলেও দ্বিতীয় চেষ্টায় সে ক্যাচ তালুবন্দী করেন বেয়ারস্টো। ৭৭ বলে ৬টি চারের সাহায্যে ৪৮ রান করেন মুশফিক।

অধিনায়কের বিদায়ের পর নাইটওয়াচম্যান হিসেবে ব্যাট করতে উইকেটে নামেন শফিউল ইসলাম। দিন শেষে তার রানে খাতা শূন্য। সঙ্গী সাকিব ৩১ রানে ক্রিজে রয়েছেন অপরাজিত। ইংল্যান্ডের পক্ষে ৬৬ রানে ২টি উইকেট নিয়েছেন মঈন। এছাড়া স্টোকস, ব্যাটি ও রশিদ ১টি করে উইকেট নেন।

সংক্ষিপ্ত স্কোর
ইংল্যান্ড (প্রথম ইনিংস) : ২৯৩/১০, ১০৫.৫ ওভার (মঈন আলি ৬৮, জনি বেয়ারেস্টো ৫২, জো রুট ৪০, ক্রিস ওকস ৩৬, আদিল রশিদ ২৬; মেহেদী হাসান মিরাজ ৬/৮০, সাকিব আল হাসান ২/৪৬, তাইজুল ইসলাম ২/৪৭)।
বাংলাদেশ (প্রথম ইনিংস) : ২২১/৫, ৭৪ ওভার (তামিম ইকবাল ৭৮, মুশফিক ৪৮, মাহমুদুল্লাহ ৩৮, সাকিব আল হাসান ৩১)।



মন্তব্য চালু নেই