জাতীয় অ্যাথলেটিকস প্রতিযোগিতা

দ্রুততম মানব-মানবী মেজবাহ ও শিরিন

জাতীয় অ্যাথলেটিকস প্রতিযোগিতায় সাফল্যের ধারা অব্যাহত রেখেছেন নৌবাহিনীর দুই স্প্রিন্টার। গতবারের মতো এবারও দ্রুততম মানব-মানবীর খেতাব পেয়েছেন মেজবাহ আহমেদ ও শিরিন আক্তার। শুক্রবার বঙ্গবন্ধু জাতীয় স্টেডিয়ামে পুরুষদের ১০০ মিটার স্প্রিন্টে স্বর্ণ জেতা মেজবাহ সময় নিয়েছেন ১০.৬০ সেকেন্ড। আর ১০০ মিটার মহিলা স্প্রিন্টে ১২.২০ সেকেন্ড সময় নিয়ে স্বর্ণ জিতেছেন শিরিন আক্তার।

পুরুষ বিভাগে ১০.৭০ সেকেন্ড সময় নিয়ে রৌপ্য জিতেছেন নৌবাহিনীর কাজী শাহী এমরান। আর ব্রোঞ্জ জিতেছেন ১০.৮০ সেকেন্ড সময় নেয়া মেহেদী হাসান। অন্যদিকে ১২.৩০ সেকেন্ড সময় নিয়ে মহিলাদের ১০০ মিটার স্প্রিন্টে রৌপ্য জিতেছেন নৌবাহিনীর জাকিয়া সুলতানা। আর ব্রোঞ্জ জিতেছেন সেনাবাহিনীর শামসুন্নাহার চুমকি। তার সময় ১২.৩৭ সেকেন্ড।

টানা চতুর্থবারের মতো ১০০ মিটার স্প্রিন্টে স্বর্ণ জিততে পেরে বেশ খুশি নৌবাহিনীর মেজবাহ। এমন সাফল্য তিনি ধরে রাখতে চান আসন্ন এসএ গেমসে। তিনি বলেন, ‘খুবই ভালো লাগছে স্বর্ণ জিততে পেরে। তবে টাইমিংটা আরও কম হলে ভালো হতো। এখন সেই চেষ্টাটাই করব’।

কিছুদিন আগে ওয়ার্ল্ড চ্যাম্পিয়নশীপে বেইজিংয়ে সতেরতম হয়েছিলেন মেজবাহ। কাছ থেকে দেখেছেন বিশ্বসেরা দ্রুতগতির মানব উসাইন বোল্টকে। মেজবাহর প্রেরণা বোল্টই। সবসময়ই তিনি অনুসরণ করেন জ্যামাইকন অ্যাথলেটকে। এ প্রসঙ্গে তিনি বলেন, ‘আমি সব সময়ই বোল্টের দৌড় দেখি। নিখুতভাবে দেখি দৌড়ের রিপ্লেও। ১০০ মিটার স্প্রিন্টে আমার টেকনিক প্রথম ৬০ মিটার দেখেশুনে, পরের ৪০ মিটারে গতি বাড়ানো। একই কাজটি করেন বোল্ট। তার থেকেই শিখেছি এটা।’

আবার ধারাবাহিক সাফল্যের নেপথ্যে বোল্টের একটা থিওরি জানালেন তিনি। তার মতে, শৃংখলা বড় একটা জিনিস। সব সময়ই তিনি ডিসিপ্লিন মেনে চলেন। এর মধ্যে রয়েছে খাওয়া-দাওয়া, ঘুম, অনুশীলন সবকিছুই। যা করে থাকেন বোল্টও।

টানা চারবার ১০০ মিটারে স্বর্ণ জিতলেও কোন রেকর্ড গড়তে পারেননি তিনি। আগামী অলিম্পিকের আগে নতুন রেকর্ডও গড়তে চান তিনি। সব মিলিয়ে আসন্ন এসএ গেমসে বাংলাদেশকে স্বর্ণ উপহার দিতে বেশ দৃঢ় প্রতিজ্ঞ মেজবাহ।

অন্যদিকে ২০০ মিটারের পর মেয়েদের ১০০ মিটার স্প্রিন্টেও স্বর্ণ জিততে পারায় বেশ উচ্ছ্বসিত শিরিন আক্তার। এই ইভেন্টে শিরিন গত গ্রীষ্মকালীন চ্যাম্পিয়নশিপে ক্যারিয়ার সেরা ১১.৮৪ সেকেন্ড সময় নিয়েছিলেন।

জাতীয় চ্যাম্পিয়নশিপে ১০০ মিটারে শিরিনের এটি টানা দ্বিতীয় স্বর্ণ জয়। তবে এই ইভেন্টে মোট ৩ বার স্বর্ণ জিতেছেন শিরিন। গত বছর জাতীয় চ্যাম্পিয়নশিপ ছাড়াও গ্রীষ্মকালীন চ্যাম্পিয়নশিপেও ১০০ মিটার জয়ী নৌবাহিনীর এই প্রতিযোগী।

মাত্র মাসখানেকের প্রস্তুতিতে এমন সাফল্যে বেশ খুশি শিরিন। যা এসএ গেমসের আগে তাকে প্রেরণা যোগাবে। তিনি বলেন, ‘অল্প সময়ের প্রস্তুতিতে ১০০ ও ২০০ মিটার স্প্রিন্টে স্বর্ণ জিতলাম। খুবই ভালো লাগছে। আগামী জানুয়ারীতে হবে এসএ গেমস। যেখানে ভালো করতে মরিয়া আমি।’

এস এ গেমসে ১০০ মিটার স্প্রিন্টে বাংলাদেশের সর্বোচ্চ সাফল্য ব্রোঞ্জ, যা জিতেছিলেন চুমকি। এখন পর্যন্ত স্বর্ণ অধরা। তবে শিরিন আক্তার সেই কাজটি করতে চান। তার মতে, ‘আশা প্রবল, স্বর্ণ জিতব। তার আগে এই সময়টাতে প্রস্তুতি ভালোমতো সারতে চাই’।

স্বর্ণ জিতলেও মনটা বেশ খারাপ শিরিনের। শনিবার বিকেএসপিতে হবে পুনর্মিলনী। সেখানে যেতে পারবেন না তিনি। এ প্রসঙ্গে তিনি বলেন, ‘খুবই খারাপ লাগছে। পুনর্মিলনীতে অনেক বন্ধু-বান্ধব আসবে। কিন্তু যেতে পারব না।’



মন্তব্য চালু নেই