ধানমন্ডিতে তারেকের শ্বশুরবাড়িতেই খালেদার নতুন কার্যালয়!

রাজধানীর গুলশানের হলি আর্টিসান রেস্তোরাঁয় জঙ্গি হামলার পর অন্যতম এ অভিজাত এলাকাটিতে অবৈধ স্থাপনা উচ্ছেদের পরিকল্পনা করছে সরকার। এ তালিকায় বিএনপি চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়ার গুলশানের রাজনৈতিক কার্যালয়ও রয়েছে। ফলে বিষয়টি নিয়ে ইতোমধ্যেই বিকল্প চিন্তা করেছে দলটির নীতিনির্ধারণী ফোরাম।খবর জাগো নিউজের।

বিএনপি সূত্রে জানা গেছে, নিরাপত্তার স্বার্থে সরকার যদি সত্যিকার অর্থেই গুলশান এলাকায় উচ্ছেদ অভিযান চালায় এবং উচ্ছেদের মধ্যে চেয়ারপারসনের কার্যালয় পরে তাহলে বিএনপি কোনো বাধা দেবে না। এক্ষেত্রে বিকল্প স্থানে নতুন কার্যালয় করার চিন্তা-ভাবনা করা হচ্ছে।

এদিকে গুলশানের হলি আর্টিসান রেস্তোরাঁয় জঙ্গি হামলার পর ওই এলাকায় অবৈধ ব্যবসা প্রতিষ্ঠান, রেস্তোরাঁ ও রাজনৈতিক কার্যালয় না রাখার বিষয়ে ইতোমধ্যেই সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষকে চিঠি দেওয়া হয়েছে। উচ্ছেদের আওতায় গুলশান ২নং সার্কেলের ৮৬ নম্বর সড়কে অবস্থিত বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার রাজনৈতিক কার্যালয়ও রয়েছে। শিগগিরই হয়তো এটি উচ্ছেদ প্রক্রিয়া শুরু করা হবে।

নাম প্রকাশ না করার শর্তে বিএনপির মধ্যম সারির এক নেতা বলেন, চেয়ারপারসনের গুলশান কার্যালয় উচ্ছেদ করা হলে পরবর্তী কার্যালয় কোথায় হবে, তা নিয়ে এখনো দলের মধ্যে আনুষ্ঠানিক কোনো আলোচনা হয়নি। তবে গুলশান কার্যালয় রক্ষা করার কোনো সুযোগ অবশিষ্ট না থাকলে বিকল্প হিসেবে ধানমন্ডি এলাকাকে সর্বোচ্চ গুরুত্ব দেয়া হবে।

তিনি আরো বলের, ধানমন্ডিতে দলের সিনিয়র ভাইস চেয়ারম্যান তারেক রহমানের শ্বশুরের কয়েকটি বাড়ি রয়েছে। এর মধ্যে যে কোনো একটিতে খালেদা জিয়ার নতুন কার্যালয় করা হতে পারে।

ধানমন্ডিকে অফিস করতে কোনো সমস্যা হলে মহাখালী এলাকায় নতুন কার্যালয় করার চিন্তা-ভাবনা করা হচ্ছে বলে জানা গেছে। দূরত্ব বিবেচনায় মহাখালী চেয়ারপারসনের গুলশান কার্যালয়ের কাছেই। এছাড়া খালেদা জিয়ার বাসভবনেরও কাছে। তাই এ এলাকাকেও তালিকায় রাখা হয়েছে।

এদিকে দলটির বেশিরভাগ নেতাকর্মী মনে করেছেন, রাজনৈতিক প্রতিহিংসার কারণে গুলশানে চেয়ারপারসনের কার্যালয় উচ্ছেদের চিন্তা করছে সরকার। এর আগেও একই কারণে চেয়ারপারসনকে তার ক্যান্টনমেন্টের বাসা থেকে সরে যেতে বাধ্য করা হয়েছে।

বিএনপির অঙ্গ ও সহযোগী সংগঠনের শীর্ষ পদে থাকা কয়েকজন নেতা বলেন, উচ্ছেদ অভিযান যদি রাজনৈতিক কারণে হয়, তাহলে প্রতিরোধ গড়ে তোলা হবে। সরকারকে আর কোনো সুযোগ নিতে দেয়া হবে না।

বিএনপির সর্বোচ্চ নীতিনির্ধারণী ফোরাম জাতীয় স্থায়ী কমিটির অন্যতম সদস্য নজরুল ইসলাম খান বলেন, গুলশান কার্যালয় ছেড়ে দিতে হবে এমন নোটিশ তো এখনো পাইনি। কবে কি সিদ্ধান্ত হবে এতো আগে কীভাবে বলবো? এটা দলের সিদ্ধান্তের বিষয়, ব্যক্তিগত সিদ্ধান্ত নয়।

গুলশান কার্যালয় উচ্ছেদ করা হলে পরবর্তী কার্যালয় নিয়ে বিএনপি কি চিন্তা করছে এমন প্রশ্নের জবাবে সাবেক সেনাপ্রধান ও জাতীয় স্থায়ী কমিটির সদস্য লে. জে. (অব.) মাহবুবুর রহমান বলেন, হ্যাঁ, এমন বিষয় শুনেছি। কয়েকটি কাগজেও এসেছে। তবে যারা মূলত এ বিষয় নিয়ে কাজ করছেন তারা হয়তো বলতে পারবেন।

উল্লেখ্য, ওয়ান-ইলেভেনের পর বনানীর ‘হাওয়া ভবন’ থেকে বিএনপি চেয়ারপারসনের রাজনৈতিক কার্যালয় গুলশানের কূটনৈতিক পাড়ায় স্থানান্তর করা হয়। ২০১০ সালে ক্যান্টনমেন্টের বাসা থেকে উচ্ছেদের পর নিজের রাজনৈতিক কার্যালয়ের অদূরে গুলশানের ৭৯ নম্বর সড়কে বাসা ভাড়া নেন খালেদা জিয়া।

এছাড়া বর্তমানে খালেদা জিয়া গুলশানের যে বাড়িটি কার্যালয় হিসেবে ব্যবহার করছেন তা কুমিল্লার বরুরার সাবেক এমপি জাকারিয়া তাহের সুমনের। তিনি বিএনপির আন্তর্জাতিক বিষয়ক সম্পাদক হিসেবে দায়িত্ব পালন করছেন। সুমনের কাছ থেকে খালেদা জিয়া বাড়িটি ভাড়া নিয়েছেন বলে জানা গেছে।



মন্তব্য চালু নেই