নওগাঁয় বরেন্দ্র অঞ্চেলের পতিত জমিতে বাড়ছে আম বাগান

কাজী আনিছুর রহমান, রাণীনগর (নওগাঁ) : নওগাঁর ঠাঠা হিসাবে পরিচিত বরেন্দ্র অঞ্চলের পতিত জমিতে প্রতি বছর এক হাজার হেক্টরেরও বেশি জমিতে আম বাগান গড়ে উঠে। মাটির বৈশিষ্ট্যগত ( এটেঁল মাটি) কারণে নওগাঁর আম সুস্বাদু হওয়ায় রাজশাধীসহ দেশের বিভিন্ন অঞ্চলে ব্যাপক চাহিদা রয়েছে।

তবে আমের ভরা মওসুমে আম সংরক্ষণের ব্যবস্থা ও পাইকারী বাজার গড়ে না তোলায় আম চাষিরা নায়্য মূল্য পান না। জেলায় আগামীতে আরো অধিক আম উৎপাদন করার লক্ষ্যে আম গবেষণা কেন্দ্র, পাইকারী বাজার ও সংরক্ষাণাগার গড়ে তোলার দাবি জানিয়েছেন সংশ্লিষ্টরা।

জেলা কৃষি সম্প্রসারণ সূত্রে জানা গেছে, নওগাঁর পোরশা, সাপাহার, বদলগাছী, পতœীতলা, মান্দা, ধামইরহাট,নিয়ামতপুর ঠাঠা বরেন্দ্র হিসাবে খ্যাত। এ অঞ্চলের পানির স্তর মাটির নিচে হওয়ায় বছরের বেশি সময় ধরে জমি পতিত থাকে। বর্ষা মওসুমে ঠাঠা এ অঞ্চলের অধিকাংশ জমিতে শুধু মাত্র আমন ধান চাষ হয়ে থাকে। ধানের চেয়ে আম চাষে বেশি লাভ নওগাঁর ১১ টি উপজেলার মধ্যে ঠাঠা বরেন্দ্রভূমির এ সব অঞ্চলে দিন দিন শত শত বিঘা জমিতে উন্নত (হাইব্রিড) জাতের আম বাগান গড়ে উঠেছে। গত ৫/৬ বছর আগে জেলায় মাত্র ৬ হাজার হেক্টর জমিতে আম চাষ করা হতো। এ বছর জেলায় ১৩ হাজার হেক্টর জমিতে আম চাষ করা হয়েছে। নওগাঁর আম সুস্বাদু হওয়ায় গত দুই বছর থেকে বিদেশেও রপ্তানি হচ্ছে।

পোরশা উপজেলার নীতপুর বাজার এলাকার বাঙালপাড়ার আমির উদ্দিন জানান, আমের বাগানে সরিষা, ডাল, গম চাষ করায় কৃষকরা এক বিঘা জমিতে বছরের লক্ষাধিক টাকা আয় করে থাকেন। এ জন্যেই এলাকার কৃষকরা আম বাগানে ঝঁকে পড়েছে। উপজেলার ইসলামপুর গ্রামের নুরুজ্জামান জানান, আগে জেলায় ল্যাংরা, ফজলি, খিরশা জাতের আম চাষ করতেন এলাকাবাসি। তবে বর্তমানে উন্নত জাতের আম্রপালি ও বারি-৪ আম চাষ করা হচ্ছে। সাধারণ জাতের চেয়ে আম্রপালি ও বারি-৪ জাতের আম দ্বিগুণ উৎপাদন ও দাম বেশি পাওয়ায় উন্নত জাতের এ আম চাষে ঝুঁকে পড়েছেন।

জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপ-পরিচালক সত্যব্রত সাহা জানান, জেলায় প্রতি বছর শত শত টন আম উৎপাদন হলেও পাইকারি বাজার না থাকায় দ্রুত আম কম মূল্যে আম বিক্রি করে দেন আম চাষিরা। গত ৫/৬ বছর আগে জেলায় মাত্র ৬ হাজার হেক্টর জমিতে আম চাষ করা হতো। আম চাষিদের কৃষি বিভাগ থেকে সব সময় পরামর্শ দেওয়ায় চলতি বছর জেলায় ১৩ হাজার হেক্টও জমিতে আম চাষ করা হয়েছে। প্রতি বছর গড়ে এক হাজার হেক্টরেরও বেশি জমিতে আম বাগান গড়ে উঠেছে। নওগাঁর আম সুস্বাদু হওয়ায় গত দুই বছর থেকে বিদেশেও রপ্তানি হচ্ছে।

জেলা প্রশাসক ড. আমিনুর রহমান জানান, আগামী জুলাই মাসে ঢাকায় জেলা প্রশাসক কনফারেন্স অনুষ্ঠিত হবে। নওগাঁয় আমের জন্যে হিমাগার ও বাজার স্থাপনের জন্য কনফারেন্স কৃষিমন্ত্রীসহ সংশ্লিষ্টদের সাথে আলোচনা করা হবে। জেলা প্রশাসক আশা করেন নওগাঁয় একটি হিমাগার ও একটি বাজার স্থাপনের অনুমতি পাবেন।



মন্তব্য চালু নেই