নতুন বছরে এই ৭টি প্রতিজ্ঞা না করলে মারাত্মক ভুল করবেন

নতুন বছর মানেই নতুন রেজোলিউশন, নিজের কাছে নিজেই নতুন প্রতিজ্ঞা বা প্রতিশ্রুতি করা। এই বছর কী কী রেজোলিউশন নিলেন? যে রেজোলিউশনই নিন না কেন, জীবনকে আর একটু সুখ ও শান্তিপূর্ণ করে তোলার জন্য কয়েকটি বিশেষ প্রতিজ্ঞা আপনার রেজোলিউশন তালিকায় অবশ্যই সংযোজন করা প্রয়োজন। কোন রেজোলিউশন সেগুলি? আসুন, জেনে নিই—

১. ‘নিজেকে নিয়ে হীনমন্যতায় ভুগব না’: যদি কোনও শারীরিক সমস্যা না থাকে, তা হলে যেমন আছেন, তেমনই থাকুন। মোটা থেকে রোগা, রোগা থেকে মোটা, বেঁটে থেকে লম্বা— নিজের এই সমস্ত রূপান্তরের জন্য অযথা মাথা ঘামাবেন না। কে কী বলল আপনাকে নিয়ে, গুলি মারুন সে সবকে। মনে রাখবেন, আপনি আপনার মতোই। নিজেকে নিয়ে শুধু সন্তুষ্ট থাকবেন না, গর্বিত বোধ করুন।

২. ‘প্রেমে পড়ার জন্য হ্যাংলামো করব না’: এ কথা কি নতুন করে বলার অপেক্ষা রাখে যে, প্রেম ‘করা’ যায় না, প্রেম ‘হয়’? যদি প্রেমিক বা প্রেমিকা স্বাভাবিক ভাবে আপনার জীবনে না আসে, তা হলে সেই নিয়ে ভেবে ভেবে রাতের ঘুম মাটি করার কোনও মানে হয় না। প্রেমের জন্য হ্যাংলামো না করে বরং নিজের হৃদয়ের দরজাটুকু খোলা রাখুন। যিনি আপনার হৃদয়ে প্রবেশ করার, তিনি নিজে থেকেই করবেন। তাঁকে আবাহন করে আনতে গিয়ে নিজের দীনতা প্রকাশ করবেন না।

৩. ‘সোশ্যাল মিডিয়াকে প্রয়োজনের বেশি গুরুত্ব দেব না’: ফেসবুক আজকের দিনে হাজার কাজে লাগে ঠিকই, কিন্তু বেশির ভাগ সময়ে আমরা তো ফেসবুকে ‘অকাজ’টাই করি, তাই না? সেই অকাজকে প্রয়োজনের বেশি গুরুত্ব না দেওয়াই ভাল। আপনার প্রোফাইল পিক-এ কে লাইক করল না, কিংবা কে একটা মন-ভোলানো কমেন্ট করল, সে-ই নিয়ে আনন্দে উত্তেজিত হওয়া বা মন খারাপ করার কোনও মানে হয় না। ভেবে দেখুন, আপনার ছবিতে আপনার কোনও ফেসবুক ফ্রেন্ডের কমেন্টকে আপনি যতটা গুরুত্ব দিচ্ছেন, তিনি নিজে হয়তো তা আদৌ দিচ্ছেন না। কাজেই সেই নিয়ে খামোখা মাথা ঘামাবেন কেন?

৪. ‘বিজ্ঞাপনের ভাঁওতায় ভুলব না’: কোন ফেয়ারনেস ক্রিম মাখলে সাত দিনে ফর্সা হওয়া যায়, কোন মিনারেল ওয়াটার বিশুদ্ধ গঙ্গাজল দিয়ে হয়— বিজ্ঞাপনের এমন হাজারো দাবিকে নির্জলা সত্যি বলে মেনে নেওয়ার কোনও মানে হয়? বরং একটু যুক্তিবাদী আর বিবেচক হোন। আজকের দিনে ইন্টারনেটের সুবিধা সকলের কাছে রয়েছে। কোনও প্রোডাক্টের উপর অন্ধ ভাবে ভরসা করার আগে, একটু নেট ঘাঁটুন, সেই প্রোডাক্ট সম্পর্কে খোঁজখবর নিন, ইউজারদের রিভিউ জানুন। কোন প্রোডাক্ট আপনি কিনবেন, কোনটা কিনবেন না, সেটা আপনার ব্যক্তিগত বিষয়, কিন্তু ভাঁওতায় ভুলে কোনও বাজারি পণ্যের উপর ভরসা করার অর্থ— আপনার বিবেচনা শক্তিকে ছোট করে দেখা।

৫. ‘নিউজ মিডিয়ার দিকে আর একটু বেশি নজর দেব’: খবরের কাগজ হোক, কিংবা ওয়েবমিডিয়া, অথবা টেলিভিশন চ্যানেল— দেশ ও দশের হালহকিকত সম্পর্কে আর একটু আপডেটেড থাকা খুব জরুরি। আমরা ওয়াকিবহাল নাগরিক না হয়ে উঠতে পারলে নেতা-নেত্রীরা খুব সহজে আমাদের মগজধোলাই করে ফেলবেন। সেটা তো বাঞ্ছনীয় নয়। কাজেই নিজেদের নজরকে আর একটু বেশি তীক্ষ্ণ করে তুলতে হবে। নোট বাতিলের সিদ্ধান্তটুকু সম্পর্কে জানলাম, আর কারা কেন সেই সিদ্ধান্তের সমালোচনা করছেন, সেটা জানলাম না— এমনটা হলে নিজের কোনও স্পষ্ট এবং নিরপেক্ষ মতামত গড়ে ওঠে না।

৬. ‘নিজের সিদ্ধান্ত নিজে নেব’: বাবা-মা হোন, কিংবা কোনও নির্ভরযোগ্য বন্ধু— আপনার কোনও বিষয় সম্পর্কে অন্যদের মতামতকে কেবল পরামর্শ হিসেবে গ্রহণ করতে পারেন। কিন্তু নিজের সম্পর্কে শেষ সিদ্ধান্ত নিজেকেই নিতে হবে। অন্য কারো সিদ্ধান্তকে নতুন বছরে আর নিজের সিদ্ধান্ত বলে গ্রহণ করবেন না।

৭. ‘সঞ্চয়ের দিকে মনোযোগী হব’: অর্থ-সঞ্চয়ের প্রয়োজনীয়তা নতুন করে বলার অপেক্ষা রাখে না। কাজেই যদি উপার্জন করেন, তা হলে সেই উপার্জনের মধ্যে একটা অংশ সঞ্চয়ের জন্য তুলে রাখুন। নতুবা ভবিষ্যৎ জীবনে চরম অনিশ্চয়তার মধ্যে পড়তে হবে কিন্তু। কাজেই এই বছর থেকেই অল্প অল্প করে টাকা জমানোর অভ্যেস গড়ে তুলুন। -এবেলা।



মন্তব্য চালু নেই