নদীতে পাওয়া সেই গাড়ি নিখোঁজ জেপি নেতা হেফজুরের

গাজীপুরের কাপাসিয়ার শীতলক্ষ্যা নদীতে পাওয়া আলোচিত বিলাসবহুল প্রাডো গাড়ির মালিক জাতীয় পার্টির (জেপি-মঞ্জু) নেতা খন্দকার হেফজুর রহমান। দেড় বছর আগে সাদা পোশাকধারী কয়েকজন ব্যক্তি গাড়িসহ তাঁকে ধরে নিয়ে যায়। এর পর থেকে তাঁর কোনো খোঁজ মেলেনি।

গত ১৯ জানুয়ারি কাপাসিয়ার দস্যুনারায়ণপুর বাজারসংলগ্ন শীতলক্ষ্যা নদীতে মাছ ধরতে গিয়ে গাড়িটির সন্ধান মেলে। কিন্তু হেফজুরকে পাওয়া যায়নি। গতকাল সোমবার রাতে তাঁর স্ত্রী সালেহা বেগম ঢাকার সিআইডি পুলিশের সহযোগিতায় কাপাসিয়া থানায় এসে গাড়িটি শনাক্ত করেন।

সালেহা বেগম ও কাপাসিয়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আবু বকর সিদ্দিক জানান, ২০১৫ সালের ৭ সেপ্টেম্বর বেলা ১১টার দিকে ঢাকার বাড্ডার ৬৭/৩ নম্বর বাড়ি থেকে নিজস্ব প্রাডো গাড়ি নিয়ে গুলশানের উদ্দেশে বের হন খন্দকার হেফজুর রহমান। তাঁর সঙ্গে ছিলেন দেহরক্ষী অবসরপ্রাপ্ত ক্যাপ্টেন শওকত, আবদুল আওয়াল ও চালক শাহ আলম। গাড়িটি গুলশান ১-এর লিংক রোডের মাথায় পৌঁছালে অপরিচিত সাদা পোশাকধারী কয়েকজন ব্যক্তি গাড়িটি থামায়। তারা অস্ত্র দেখিয়ে অন্যদের নামিয়ে দিয়ে শুধু হেফজুর রহমানকে অজ্ঞাত স্থানে নিয়ে যায়। এর পর থেকে হেফজুর রহমান ও তাঁর গাড়ির হদিস পাওয়া যায়নি।

এ ঘটনায় সালেহা বেগম ২৫ সেপ্টেম্বর গুলশান থানায় মামলা করেন। ওই সময় মামলাটি তদন্ত করেন উপপরিদর্শক (এসআই) মোহাম্মদ আলী হাসান। এরপর মামলার কোনো অগ্রগতি হয়নি। দীর্ঘ প্রায় দেড় বছর পর গত ১৯ জানুয়ারি কাপাসিয়ার দস্যুনারায়ণপুর বাজারসংলগ্ন শীতলক্ষ্যা নদীতে মাছ ধরতে গিয়ে জেলেদের জালে একটি গাড়ির সন্ধান পাওয়া যায়। কাপাসিয়া থানার পুলিশ এসে নদী থেকে প্রাডো গাড়ি উদ্ধার করে।

কাপাসিয়া থানার ওসি আবু বকর সিদ্দিক জানান, গাড়ির নম্বর প্লেটে ঢাকা মেট্রো-ঘ ১১-২০২৯ লেখা ছিল। অনুসন্ধান করে এই নম্বরের বিপরীতে কোনো গাড়ির মালিক পাওয়া যায়নি। পরে থানার এসআই মো. দুলাল মিয়া আদালতের অনুমতি নিয়ে গাড়ির চেসিস ও ইঞ্জিন নম্বর দিয়ে বাংলাদেশ সড়ক পরিবহন কর্তৃপক্ষে (বিআরটিআই) অনুসন্ধান চালায়। এতে প্রকৃত মালিক ও গাড়ির নম্বর পাওয়া যায়। গাড়ির প্রকৃত নম্বর ঢাকা মেট্রো-ঘ-১১-৫৭৫৬। রেজিস্ট্রেশনের তারিখ ২৭ নভেম্বর ২০০৪। পরে মামলাটি তদন্ত করেন পুলিশের অপরাধ তদন্ত (সিআইডি) বিভাগের ঢাকার গুলশান উত্তর ইউনিটের পরিদর্শক মো. আবদুল কাইউম।

সালেহা বেগম জানান, তাঁর স্বামী খন্দকার হেফজুর রহমান গত জাতীয় সংসদ নির্বাচনে জাতীয় পার্টি (আনোয়ার হোসেন মঞ্জু) থেকে ব্রাহ্মণবাড়িয়া-৪ আসনে বাইসাইকেল প্রতীকে নির্বাচনে অংশ নিয়েছিলেন। তাঁর স্বামী জমি বেচাকেনার ব্যবসার সঙ্গে জড়িত ছিলেন। বাড়ি কসবা উপজেলার কাইউমপুর ইউনিয়নের লক্ষ্মীপুর গ্রামে।

সালেহা বেগম বলেন, ‘দেহরক্ষী, গাড়িচালক ও গাড়ি পাওয়া গেলেও এখনো সন্ধান মেলেনি আমার স্বামীর।’

যোগাযোগ করা হলে সিআইডি কর্মকর্তা মো. আবদুল কাইউম জানান, হেফজুর রহমান নিখোঁজের রহস্য তাঁরা এখনো উদঘাটন করতে পারেননি।



মন্তব্য চালু নেই