নদী দখল ও দূষণকারী এ যুগের রাজাকার : নৌমন্ত্রী

২০১৮ সালের মধ্যে নদী দূষণরোধে প্রাথমিক সুফল দেখাতে পারব এমন আশা প্রকাশ করে নৌপরিবহন মন্ত্রী শাজাহান খান বলেছেন, নদী দখল ও দূষণ করে যারা নদীর প্রাণহানি করছে তারা নিষ্ঠুর, বর্বর ও এ যুগের রাজাকার। এজন্য আগামীতে নদী রক্ষায় আইনের কঠোর প্রয়োগ নিশ্চিত করা হবে।

মঙ্গলবার ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটিতে এসোসিয়েশন ফর ল’ রিসার্চ এন্ড হিউম্যান রাইটস (এলার্ট) আয়োজিত ‘নদী ও আমাদের অর্থনীতি’ শীর্ষক গোলটেবিল বৈঠকে এসব কথা বলেন মন্ত্রী।

তিনি বলেন, নদী খননের জন্য পর্যাপ্ত ড্রেজারের প্রয়োজন। জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান ১৯৭৪ সালে বি আইডব্লিউটিএ’র জন্য ৭টি ড্রেজার সংগ্রহ করেছিলেন। এর পরে কোনো সরকার ড্রেজার সংগ্রহ করেনি। ২০০৯ থেকে ২০১৩ মেয়াদে আওয়ামী লীগ সরকার ১৪টি ড্রেজার সংগ্রহ করেছে। বর্তমান মেয়াদে ২০টি ড্রেজার সংগ্রহের প্রক্রিয়া চলমান রয়েছে।

শাজাহান খান বলেন, দেশে এক সময় ২৪ হাজার কিলোমিটার নৌপথ ছিল। বিগত সরকারগুলোর অবহেলার কারণে তা এসে বর্ষা মৌসুমে ৬ হাজার ২শ কিলোমিটার এবং শুষ্ক মৌসুমে ৩ হাজার ৬শ কিলোমিটারে এসে দাঁড়িয়েছে। বি আইডব্লিউটিএ প্রায় ১ হাজার কিলোমিটার নৌপথ খনন করেছে।

নৌমন্ত্রী বলেন, ১১ হাজার ৪শ কোটি টাকা ব্যয়ে ৫৩টি নৌপথ খননের কার্যক্রম গ্রহণ করা হয়েছে। এর মধ্যে প্রথম পর্যায়ে ২৪টি নৌপথ ও বিশেষায়িত ১২টি নৌপথ খনন কার্যক্রম চলমান রয়েছে। নদী খনন ও নৌ-বন্দর উন্নয়নে বিশ্বব্যাংক ৩ হাজার ২শ কোটি টাকা ঋণ সহায়তা দিয়েছে। মংলা-ঘষিয়াখালি চ্যানেল পুনঃখনন করে নৌযান চলাচলের উপযোগী করা হয়েছে।

তিনি বলেন, ঢাকা সদরঘাটসহ ১৪টি ফেরিঘাট ও সংলগ্ন লঞ্চঘাটসমূহের ইজারাদারি ব্যবস্থা বন্ধ করে দিয়ে যাত্রী সেবা উন্নত করা হয়েছে। ঢাকার পোস্তগোলাস্থ শ্মশানঘাট এলাকায় একটি অত্যাধুনিক লঞ্চ টার্মিনাল নির্মাণ করা হবে। নদীর জায়গা যাতে পুন:রায় দখল না হয় সেজন্য ঢাকার চারপাশে ২০ কিলোমিটার ‘ওয়াকওয়ে’ নির্মাণ করা হয়েছে। আরো ৫০ কিলোমিটার ওয়াকওয়ে, বনায়ন ও ইকোপার্ক নির্মাণ করা হবে।

শাজাহান খান বলেন, নতুন নতুন ফেরিরুট চালু করার কার্যক্রম হাতে নেয়া হয়েছে। এর মধ্যে উল্লেযোগ্য হলো- আরিচা ঘাট থেকে পাবনার নবদাহ ঘাট এবং জামালপুরের বাহাদুরাবাদ ঘাট-গাইবান্ধার বালাসিঘাট। ৩৮ বছরে বি আইডব্লিউটিসি’র সংগ্রহে ছিল ৩৮ টি ফেরি। সরকারের গত মেয়াদে ১৭টি ফেরি তৈরি করা হয়েছে। বর্তমান মেয়াদে ১০ টি ফেরি নির্মাণ চলমান রয়েছে।

এলার্ট এর সুপ্রীম কোর্ট শাখার সভাপতি জাহাঙ্গীর আলম খানের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে অন্যান্যের মধ্যে বক্তব্য রাখেন পরিবেশ বিশেষজ্ঞ এস আই খান, বীর মুক্তিযোদ্ধা ডা, সৈয়দা বদরুন্নাহার চৌধুরী প্রমুখ।



মন্তব্য চালু নেই