নিউ ইয়র্কে দুই বাংলাদেশিকে হত্যাকারীর স্কেচ প্রকাশ

নিউ ইয়র্কের কুইন্সে ওজন পার্কের রাস্তায় প্রকাশ্যে গুলি করে যুক্তরাষ্ট্রপ্রবাসী দুই বাংলাদেশিকে হত্যাকারীর স্কেচ প্রকাশ করেছে পুলিশ। প্রত্যক্ষদর্শীদের বর্ণনা ও সিসিভিটি ফুটেজ থেকে হামলাকারীর মুখাবয়ব (স্কেচ) তৈরি করা হয়েছে।

যুক্তরাষ্ট্রের স্থানীয় সময় শনিবার কুইন্সের ওজন পার্কের আল-ফুরকান জামে মসজিদে জোহরের নামাজ আদায় শেষে হেঁটে বাসায় ফিরছিলেন ইমান মাওলানা আকুঞ্জি এবং তার সহকারী তারা উদ্দিন। এ সময় পেছনে থেকে তাদের মাথায় গুলি করে এক বন্দুকধারী।

গুলির শব্দ শুনে লোকজন আসতে না আসতেই ঘটনাস্থল ত্যাগ করে হামলাকারী। পরে প্রত্যক্ষদর্শীদের বর্ণনা শুনে এবং সিসিটিভি ফুটেজ দেখে হামলাকারীর স্কেচ তৈরি করা হয়। বিবিসি অনলাইন জানিয়েছে, রোববার এ স্কেচ প্রকাশ করে পুলিশ।

উল্লেখ্য, মাওলানা আকুঞ্জির (৫৫) বাড়ি হবিগঞ্জে এবং তারা উদ্দিনের (৬৪) বাড়ি সিলেটে। আকুঞ্জি প্রায় দুই বছর আগে এবং তারা উদ্দিন প্রায় চার বছর আগে অভিবাসন ভিসায় যুক্তরাষ্ট্রে যান। সেখানে আল-ফুরকান মসজিদে ইমাম ছিলেন মাওলানা আকুঞ্জি এবং তার সহকারী ছিলেন তারা উদ্দিন।

পুলিশ ও প্রত্যক্ষদর্শীরা জানিয়েছেন, হামলার সময় বন্দুকধারীর পরনে ছিল কালো নীল রঙের পোশাক। মাঝামাঝি গড়নের লোকটির মুখে হালকা দাঁড়ি এবং চোখে চশমা ছিল। হাতে ছিল বড় একটি বন্দুক।

ইমাম আকুঞ্জি ও তারা উদ্দিন নিহত হওয়ার পর নিউ ইয়র্কের মুসলিম সম্প্রদায়ের মধ্যে ক্ষোভের সঞ্চার হয়েছে। এ ঘটনার সুষ্ঠু তদন্তের দাবি করেছে মুসলিম কমিউনিটির নেতারা।

কুইন্সের কয়েকটি মসজিদের প্রেসিডেন্ট কবির চৌধুরী বলেছেন, ‘আমরা হতবিহ্বল। আমাদের এ ঘটনার শেষ পর্যন্ত যাওয়া প্রয়োজন। শুধু আমাদের ধর্মের কারণেই তারা এ কাজ করেছে কি না, তা আমাদের জানতে হবে।’

প্রত্যক্ষদর্শী স্টিভেন নাউথ (২৭) বলেছেন, ‘আমি খুবই ভয় পাই। সঙ্গে আমার ছোট্ট এক চাচাতো ভাই ছিল, আমি তাকে দৌড়ে পালাতে বলি।’

মুসলিম নেতারা দাবি করেছেন, এটি ধর্মীয় বিদ্বেষমূলক হত্যাকান্ড। তারা এর বিচার চান। তবে পুলিশ জানিয়েছে, তারা এখনো হত্যার উদ্দেশ সম্পর্কে পরিষ্কার হতে পারেনি।

নিউ ইয়র্ক ডেইলি নিউজের খবরে স্থানীয়দের উদ্ধৃতি দিয়ে বলা হয়েছে, মার্কিন প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে রিপাবলিকান প্রার্থী ডোনাল্ড ট্রাম্প ইসলাম ও মুসলিমদের বিরুদ্ধে ঘৃণা ছড়ানোর কারণে এ হামলা হয়েছে।

নিউ ইয়র্কের মুসলিমরা এ হামলার তীব্র নিন্দা জানিয়েছেন। তারা রাস্তায় বিক্ষোভও করেন। সংবাদ সম্মেলনে মুসলিমদের অনিরাপত্তার বিষয়ে কথা বলেন তারা।

গত বছর নিউ ইয়র্ক টাইমসের এক প্রতিবেদনে বলা হয়, ফ্রান্সের প্যারিস ও যুক্তরাষ্ট্রের বার্নান্দিতো সন্ত্রাসী হামলার পর যুক্তরাষ্ট্রের মুসলিমদের বিরুদ্ধে ঘৃণামূলক হামলা (মৌখিক ও শারীরিক) তিন গুণ বেড়ে গেছে। এ ছাড়া সম্প্রতি ডোনান্ড ট্রাম্প সুযোগ পেলেই মুসলিমবিরোধী বক্তব্য দিয়ে যাচ্ছেন।



মন্তব্য চালু নেই