নিজের সৃষ্টিকে ধ্বংস করে ফেলেছিলেন যেসব শিল্পী

শিল্পীর কাছে তার প্রত্যেকটি সৃষ্টি ততটাই ভালোবাসার যতটা একজন মায়ের কাছে তার সন্তান। জীবন দিয়ে হলেও নিজের সৃষ্টিকে শেষ নিঃশ্বাস পর্যন্ত আগলে রেখেছেন এমন ইতিহাস কম নেই পৃথিবীতে। কিন্তু এর পাশাপাশি পৃথিবীতে রয়েছে নিজের সৃষ্টিকে ধ্বংস করে ফেলার উদাহরণও। জানতে চান সেই বিখ্যাত মানুষগুলোকে যারা কিনা নিজের হাতেই নষ্ট করে দিয়েছিলেন তাদের সৃষ্টি? চলুন দেখে আসি সৃষ্টি ও তাদের স্রষ্টার নাম।

১. ডায়োনিসিস কারিপিডিস

১৯৯৭ সালে গ্রীসের পোর্টোকালি বীচের পাশে পড়ে থাকা পাথরের ভেতর থেকে খোদাই করে সৃষ্টি করেন ডায়োনিসিস কারিপিডিস অদ্ভূত সুন্দর এক মত্স্যকন্যা। কিন্তু সমস্যাটা বাঁধে কিছুদিন পরেই। বীচের পাশে পড়ে থাকা পাথর ব্যবহার করায় কর্তৃপক্ষ শিল্পীকে ৫২২ ইউরো জরিমানা করেন। একটা সময় এতটা কষ্ট পান এই শিল্পী যে একটা হাতুড়ি নিয়ে নিজেই নিজের সৃষ্টিকে একটু একটু করে ধ্বংস করে ফেলেন।

২. গের্হার্ড রিচার

জার্মানির এই নামী চিত্রশিল্পীর একটি সৃষ্টি কিনতে হুড়োহুড়ি পড়ে যায় মানুষের। ২০১৫ সালে শিল্পীর অ্যাবস্টাকটেস বিল্ড নামের চিত্রকর্মটি বিক্রি হয় ৪৬.৩ মিলিয়ন ডলারে। যা কিনা এখন অব্দি জীবিত কোন শিল্পীর পাওয়া সর্বোচ্চ পারিশ্রমিক। কিন্তু কষ্টকর ব্যাপার হল যে, ১৯৬০ সালের দিকে নিজের সমস্ত চিত্রকর্ম হয় কেটে ফেলেছিলেন কিংবা পুড়িয়ে দিয়ে নষ্ট করে ফেলেছিলেন এই শিল্পী। কেন? কারণ সেগুলো যেমনটা তৈরি হয়েছিল তেমনটা তিনি চাননি। ফলাফল হিসেবে এখন গের্হার্ড রিচারের সেসব চিত্রকর্ম কেবল ছবিতেই আছে, বাস্তবে নয়।

৩. ব্লু

সড়কের ধারে, বিভিন্ন দালানের গায়ে ইচ্ছামতন বেনামে চিত্রকর্ম এঁকে দিয়ে যাওয়া বেশ পরিচিত একটি কাজ। আর এক্ষেত্রে শিল্পী তার আসল নাম লুকিয়ে রাখেন বিধায় একবাক্যে এবার যার কথা বলব তিনি ব্লু হিসেবেই পরিচয় করিয়ে দেওয়া যায়। বোলোগনার বিভিন্ন স্থানে এঁকে বেড়াতেন ব্লু। ভাবছেন প্রশাসন তার সৃষ্টিকে ধ্বংস করে দিয়েছে? উঁহু। ব্লু নিজেই একটা সময় নিজের বেশকিছু সৃষ্টির গায়ে রঙ ঢেলে সেগুলোকে নষ্ট করে দেন। নগরায়নের প্রতিক্রিয়া হিসেবে এই কাজটি করেন তিনি।

৪. চার্লস ক্যামো

নিজের সৃষ্টিকে একবার নয় বরং দুইবার ধ্বংস করেছেন এই শিল্পী। অনেক শিল্পীর জীবনেই একটি পর্যায় আসে যখন নিজের অতীত সৃষ্টিকর্মগুলোকে আর সহ্য হয়না। সেগুলোকে নষ্ট করে দিতে ইচ্ছে করে। ক্যামোও এই কারণে ধ্বংস করে দিয়েছিলেন নিজের সৃষ্টিগুলোকে। প্রায় ৮০ টি চিত্রকর্ম ছিড়ে ফেলেন তিনি। তবে এই পর্যায়ে এগিয়ে আসেন ফ্রান্সিস কারো আর বাঁচান এই চিত্রকর্মগুলোকে। পরবর্তীতে কারো চিত্রকর্মগুলোর নিলাম আয়োজন করলে ক্যামো মামলা ঠুকে দেন কারোর বিরুদ্ধে এবং জিতে যান। আর তারপর? নিজের চিত্কর্মগুলোকে নিয়ে আবার ধ্বংস করেন তিনি।



মন্তব্য চালু নেই