নিয়মিত সিঁড়ি বেয়ে উঠলে মস্তিষ্ক থাকবে

সতেজমানবমস্তিষ্কের কর্মদক্ষতা অনেকাংশে এর ধূসর বস্তুর (গ্রে ম্যাটার) উপর নির্ভর করে। বয়স বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে এ ধূসর বস্তুর পরিমাণ কমতে থাকে। শিক্ষাসংশ্লিষ্ট ক্ষেত্রে দীর্ঘদিন সংযুক্ত থাকলে এ ক্ষয়ের মাত্রা কমে আসে বলে গবেষকরা আগে থেকেই বলে আসছেন। এর সঙ্গে নতুন করে যুক্ত হলো নিয়মিত সিঁড়ি ভাঙার বিষয়টি। সম্প্রতি নিয়মিত সিঁড়ি ভাঙলে মস্তিষ্কের ধূসর বস্তুর ক্ষয় কম হয় বলে জানিয়েছেন কানাডার একদল গবেষক। খবর এএফপি।

কানাডার কনকর্ডিয়া ইউনিভার্সিটির মন্ট্রিয়লভিত্তিক পারফর্ম সেন্টারে গবেষকরা ৩৩১ স্বাস্থ্যবান ব্যক্তির উপর গবেষণা চালান। গবেষক দলের নেতৃত্ব দেন জেসন স্টেফনার। এ-বিষয়ক গবেষণা নিবন্ধটি নিউরোবায়োলজি অব এজিং নামক গবেষণা পত্রিকায় প্রকাশ হয়েছে। গবেষণায় অংশগ্রহণকারীদের বয়স ছিল ১৯ থেকে ৭৯ বছরের মধ্যে। গবেষকরা এমআরআই স্ক্যানের মাধ্যমে অংশগ্রহণকারীদের মস্তিষ্কের ধূসর বস্তুর পরিমাণ পরিমাপ করেন। এর পর অংশগ্রহণকারীরা দৈনিক কী পরিমাণ সিঁড়ি ভাঙেন গবেষকরা তার তথ্য নেন। পাশাপাশি তাদের অতিবাহিত শিক্ষাজীবনের পরিসর সম্পর্কেও তথ্য সংগ্রহ করেন তারা। এতে দেখা যায়, দৈনিক যে যত বেশি সিঁড়ি ভাঙে, তার মস্তিষ্ক তত সতেজ। একই রকম ফল পাওয়া যায় শিক্ষাসংশ্লিষ্টতার ক্ষেত্রেও। এক্ষেত্রে যার শিক্ষাজীবন যত দীর্ঘ, তার মস্তিষ্কও তত সতেজ ও কর্মক্ষম বলে গবেষণায় উঠে আসে।

গবেষণায় দেখা গেছে, প্রতি এক বছর শিক্ষায় সংযুক্ত থাকলে মস্তিষ্কের বয়সও প্রায় এক বছরের (দশমিক ৯৫ বছর) মতো কম থাকে। আর দৈনিক একতলা সিঁড়ি ভাঙলে অর্ধেক বছরের (দশমিক ৫৮ বছর) মতো মস্তিষ্ক তরুণ ও সতেজ থাকে।

জেসন স্টেফনার বলেন, শিক্ষা ও শারীরিক পরিশ্রম মানসিক ও শারীরিক বয়সের পার্থক্যে প্রভাব রাখে। আমাদের গবেষণায় দেখা গেছে, মস্তিষ্ক সতেজ রাখতে মানুষের সক্রিয়তা ভূমিকা রাখে। বয়স্কদের ক্ষেত্রে অন্য শারীরিক ব্যায়ামের বদলে প্রতিদিন সিঁড়ি ভাঙা অনেক সহজ। আমাদের এ গবেষণা ফলাফল সত্যিই উৎসাহব্যঞ্জক।

এর আগে পরিচালিত বিভিন্ন গবেষণায়ও মস্তিষ্কের সুস্বাস্থ্যের জন্য শরীরচর্চার ইতিবাচক ভূমিকার কথা উঠে এসেছে। এ বিষয়ে ২০১৫ সালে পরিচালিত পৃথক এক গবেষণায় ভারোত্তোলনকে মস্তিষ্কের স্বাস্থ্যের জন্য উপকারী বলে উল্লেখ করা হয়েছে। ওই গবেষণায় বিশেষত নারীদের ক্ষেত্রে ভারোত্তোলনের উপকারিতার কথা উঠে আসে। এতে বলা হয়েছে, ভারোত্তোলনের ফলে বয়সের সঙ্গে সঙ্গে মস্তিষ্কের সাদা বস্তু (হোয়াইট ম্যাটার) ক্ষয় হওয়ার মাত্রা কমে আসে। উল্লেখ্য, মস্তিষ্কের সাদা বস্তু চিন্তা ও স্মৃতি নিয়ন্ত্রণ করে।



মন্তব্য চালু নেই