নেবেন না বলেও অনেক বাগিয়েছেন কেজরিওয়াল!

বারবারই নেবেন না বলে অনেক সুযোগ বাগিয়ে নিয়েছেন আম-আদমির নেতা অরবিন্দ কেজরিওয়াল, এমন অভিযোগে দিল্লি এখন সরগরম। অভিযোগের আঙ্গুল দিল্লির বিজেপি বিধায়কদের। কেজরিওয়ালের দলের বিধায়করা দাবি তুলেছেন বেতন বাড়ানোর, ৮৪ হাজার রুপি বেতনে নাকি তাদের হচ্ছেনা।

‘আম আদমিদের’ এই দাবি নিয়েই তুলকালাম দিল্লি। বিজেপি বিধায়করা বলছেন, এক টাকা বেতনেও আমরা কাজ করতে রাজি। মানুষের সেবা করতে নিজের পকেট ভারী করতে হবে কেন? আম আদমির বিধায়করা কি ভোটের আগে জানতেন না তাদের মাইনে কত? ভোটের পরেই কেন ভোলবদল?

দিল্লি বিধানসভায় কংগ্রেসের একজন বিধায়কও নেই। বিধায়কের মাইনে বাড়লে বা কমলে কংগ্রেসের কিছুই এসে যায় না। সেই তারাও কেজরিওয়ালের বিধায়কদের দাবির বিরুদ্ধে সোচ্চার। কংগ্রেস নেতা অজয় মাকেন আরেকটু আগ বাড়িয়ে বলেছেন, ‘শুধু কি মাইনে বাড়ানোর দাবি! দলের লোককে সরকারে ঢুকিয়ে তাদের এখন দেদার লালবাতি দেওয়া হচ্ছে। বড় মুখ করে কেজরিওয়াল বলেছিলেন, নিরাপত্তা নেবেন না। বড় বাড়ি নেবেন না। লালবাতি মিটিয়ে দেবেন। এখন কী হল?’ দিল্লির মুখ্যমন্ত্রীর প্রতি তার কটাক্ষ, ‘সব কথায় তো আগে রাস্তায় বসে জনতার রায় নিতেন। বিধায়কদের দিয়ে মাইনে বাড়ানোর দাবি তোলার সময় কি সে রায় নিচ্ছেন?’

আর আম আদমির বিধায়কদের বক্তব্য হচ্ছে, একজন বিধায়ককে অনেক সাধারণ মানুষের সঙ্গে দেখাসাক্ষাৎ করতে হয়। ব্যক্তিগত সচিব রাখতে হয়। আমজনতার অভাব-অভিযোগ শুনতে হয়। তাদের দাবিও মেটাতে হয়। বাড়ির পাশাপাশি একটি দফতর চালাতে হয়। মাইনে তো মাত্র ১২ হাজার টাকা। ভাতা মিলিয়ে ৮৪ হাজার টাকা তারা হাতে পান। সততার সঙ্গে কাজ করতে গেলে এ টাকায় কী সব দিক সামলানো সম্ভব? রোজ যে সব আম আদমি দেখা করতে আসেন, তাদের অন্তত এক কাপ চা-তো খাওয়াতে হবে।

বাড়ি ‘নেব না’, ‘নেব না’ করে কেজরিওয়ালের এখন পাঁচ হাজার বর্গমিটার জুড়ে বিশাল বাংলো। তাতে তিনটি বাগান। এসি ‘চাই না’ বলেও এখন ৩০টি ‘এসি’। সব মিলিয়ে বিদ্যুৎ বিল আসে এক লাখ রুপিরও বেশি! ছোট গাড়ি এখন বড় হয়েছে। সরকারের প্রচারের বাজেটই তৈরি হয়েছে পাঁচশো কোটি টাকার।

বিরোধীদের কটাক্ষ, এই কেজরিওয়ালই তো ক্ষমতায় এসে পূর্ত দফতরকে চিঠি লিখে জানিয়েছিলেন, তার বাড়ি থেকে এসি হটিয়ে দিতে। বলেছিলেন, মুখ্যমন্ত্রী হওয়ার আগে দিল্লির উপকন্ঠে যেখানে তিনি থাকতেন, সে বাড়িতে ছিল মাত্র একটি এসি। তা-ও বাবা-মায়ের ঘরে। আগের বার মুখ্যমন্ত্রী হওয়ার সময়েও নিয়েছিলেন একটি মাত্র এসি। এখন তারই বাড়িতে কিনা ৩০টি এসি! আম আদমিদের সেই নেতার বাড়ির বিদ্যুৎ বিলই কিনা ১ লক্ষ ৩৫ হাজার টাকা!

এ ক্ষেত্রেও আম আদমির নেতাদের যুক্তি- ১ লক্ষ ৩৫ হাজার টাকা বিল শুধু তো কেজরিওয়ালের বাড়ির বিদ্যুতের খরচ নয়। এর সঙ্গে বাড়ির লাগোয়া দফতরও রয়েছে। সেখানেও রোজ শয়ে শয়ে লোক আসেন। দলের কাজ হয়। তার পরও বিরোধীদের কটাক্ষ, বাড়িতে ব্যবহারের জন্য মিটার নেওয়া হলেও তা ব্যবসায়িক কাজে ব্যবহার হচ্ছে। কোনও বাড়িতে এত বিদ্যুৎ খরচ হতে পারে না।

তথ্যসূত্র : আনন্দবাজার পত্রিকা



মন্তব্য চালু নেই