নোট বাতিলের ফল হাতেনাতে পেল বিজেপি? মমতার দাবি কতটা যুক্তিপূর্ণ?

রাজ্যের তিন বিধানসভা উপনির্বাচনেই স্বচ্ছন্দে জয় পেল তৃণমূল কংগ্রেস। উপনির্বাচনের দশদিন আগে নোট বাতিলের ঘোষণা করেছিলেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী। যে সিদ্ধান্তের চরম বিরোধিতা করেছে রাজ্যের শাসক দল তৃণমূল কংগ্রেস। নির্বাচনের ফলাফল দেখে তৃণমূলনেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের দাবি, নোট বাতিলের সিদ্ধান্তের বিরুদ্ধেই মতামত দিয়েছেন সাধারণ মানুষ।

তমলুক কেন্দ্রে তৃণমূল প্রার্থী দিব্যেন্দু অধিকারী জয় পেয়েছেন ৪ লক্ষ ৯৭ হাজার ৫২৫ ভোটে। কোচবিহার লোকসভা কেন্দ্রে প্রায় সাড়ে তিন লক্ষ ভোটে এগিয়ে থেকে জয় অনেকটাই নিশ্চিত করে ফেলেছেন তৃণমূলের পার্থপ্রতিম রায়। আর বর্ধমানের মন্তেশ্বর বিধানসভা কেন্দ্রে ১ লক্ষ ২৭ হাজার ১২৭ ভোটে জয় পেয়েছেন তৃণমূলপ্রার্থী সৈকত পাঁজা। এই বিধানসভা কেন্দ্রে তৃণমূল প্রার্থী একাই ৭৬ শতাংশ ভোট পেয়েছেন। বাম, কংগ্রেস, বিজেপি— মন্তেশ্বরে বিরোধীদের প্রত্যেকেরই জমানত জব্দ হয়েছে। কোচবিহারে দ্বিতীয় স্থানে রয়েছে বিজেপি। আর তমলুকে সিপিএম প্রার্থী দ্বিতীয় স্থানে রয়েছেন।

ফলাফল বেরনোর পরেই প্রত্যাশিতভাবে কেন্দ্রের বিরুদ্ধে আবারও সুর চড়িয়েছেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। নবান্নে প্রতিক্রিয়া দিয়ে তিনি বলেন, ‘মানুষের এই রায় গণবিদ্রোহের রায়। নোট বাতিলের সিদ্ধান্তের বিরুদ্ধে রায়। হিটলারি কায়দায় চলা কেন্দ্রীয় সরকারের বিরুদ্ধে রায়।’ এর পরে মোদী সরকারের বিরুদ্ধে বিরোধীদের একজোট করতে দিল্লি যাত্রার আগে বিমানবন্দরে তিনি বলেন, ‘এটা মানুষের জয়, এই জয় আমাদের মানুষের হয়ে লড়তে অনুপ্রেরণা দেবে। প্রধানমন্ত্রী সবাইকে হুমকি দিচ্ছেন। তাঁর বোঝা উচিত, তিনি মানুষের প্রধানমন্ত্রী।’

ত্রিপুরার বড়জোলা এবং খোয়াই বিধানসভা কেন্দ্রের উপনির্বাচনে অবশ্য দু’টি আসনই জিতেছে সিপিএম। ত্রিপুরাতে তৃণমূলও প্রার্থী দিয়েছিল। বাংলার উপনির্বাচনে বিজেপি-যে তাক লাগানো ফল করবে না, তা বলার অপেক্ষা রাখে না। তাসত্ত্বেও উপনির্বাচনে বিপুল ব্যবধানে জয়, নোট বিতর্কের মাঝে মমতাকে অবশ্যই স্বস্তি দেবে। কলকাতা ছাড়ার আগে মমতা দাবি করেন, ‘বিজেপি একটাও ভোট পাবে না। কোথাও থাকবে না বিজেপি।’ কিন্তু সর্বভারতীয় ক্ষেত্রে নিজেদের শক্ত ঘাঁটিগুলিতে বিজেপি-র ফল ভালই হয়েছে। অসমের লখিমপুর লোকসভা, মধ্যপ্রদেশের শহদল লোকসভা এবং নেপানগর বিধানসভা আসনের উপনির্বাচনে জয় পেয়েছে বিজেপি। তামিলনাড়ুতে তিনটি বিধানসভা কেন্দ্রের মধ্যে দু’টিই দখল করেছে জয়ললিতার এআইএডিএমকে।



মন্তব্য চালু নেই