নোয়াখালী বেগমগঞ্জ নিহত ২, গুলিবিদ্ধসহ আহত শতাধিক, ৮১ কেন্দ্রে স্থগিত

এম.এ আয়াত উল্যা, স্টাফ রিপোর্টার, নোয়াখালী : নোয়াখালীতে ইউপি নির্বাচনকে কেন্দ্রে করে হামলা-সংঘর্ষে গুলিবিদ্ধ হয়ে আওয়ামী মনোনীত প্রার্থীর দুই সমর্থক নিহত হয়েছে। গুলিবিদ্ধসহ আহত হয়েছেন শতাধিক কর্মী-সমর্থক। শনিবার (২৮ মে) বেগমগঞ্জ উপজেলা রাজগঞ্জ ইউনিয়নের রাজগঞ্জ সিনিয়র ফাজিল মাদরাসা কেন্দ্রে ও জিরতলী ইউনিয়নের কেবি ইউনিয়ন উচ্চ বিদ্যালয় কেন্দ্রে এ নিহতের ঘটনা ঘটে। নিহতরা হলেন, বেগমগঞ্জ উপজেলার রাজগঞ্জ ইউনিয়নের স্থানীয় বাসিন্দা ও আওয়ামী প্রার্থীর সমর্থক সৈয়দ আহম্মদ (৬৪) এবং একই উপজেলার জিরতলী ইউনিয়নের মো. মিলনের ছেলে ও ছাত্রলীগ কর্মী শাকিল আহম্মদ (২২)।

গুলিবিদ্ধরা হলেন, রাজগঞ্জ ইউনিয়নের আলাদী নগর সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয়ে দু’পক্ষের সংঘর্ষে শাহজাজলাল (৬৫) সহ দুই জন, গোপালপুর ইউনিয়নের বসন্তেরবাগ সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয় কেন্দ্রে সংঘর্ষে জাফর মিয়া (৪৫) সহ দুই জন। গুলিবিদ্ধদের উদ্ধার করে নোয়াখালী জেনারেল হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। এছাড়া ৫ম দফার ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচনে নোয়াখালীর বেগমগঞ্জ ও সেনবাগ উপজেলার ২২৫টি কেন্দ্রের মধ্যে বিভিন্ন ভোট কেন্দ্রে বিশৃঙ্খলা, ব্যালট বক্স, ব্যালট পেপার ছিনতাইয়ের ঘটনায় ৮১টি কেন্দ্রের ভোটগ্রহণ স্থগিত করেছেন প্রিজাইডিং অফিসারগণ। শনিবার সকাল ৮টা থেকে বিকেল ৪টা পর্যন্ত বেগমগঞ্জ ও সেনবাগ উপজেলার বিভিন্ন ইউনিয়নে কেন্দ্রের দায়িত্বপ্রাপ্ত স্ব স্ব প্রিজাইডিং অফিসারগণ ভোট স্থগিতের ঘোষণা দেন। এরমধ্যে বেগমগঞ্জ উপজেলায় ৫৫টি ও সেনবাগ উপজেলায় ২৬ কেন্দ্রের ভোট স্থগিত করা হয়।

স্থানীয়রা জানায়, সকাল ৮টা থেকে জেলার বেগমগঞ্জ উপজেলার ১৬টি ও সেনবাগ উপজেলার ৯টি ইউনিয়নের মোট ২২৫টি কেন্দ্রে একযোগে ভোটগ্রহণ শুরু হয়। শান্তিপূর্ণভাবে ভোটগ্রহণ শুরু হলেও বেলা বাড়ার সাথে সাথে অনেকগুলো কেন্দ্রে বিভিন্ন প্রার্থীর সমর্থকরা বিশৃঙ্খলা শুরু করে। এসময় বিভিন্ন কেন্দ্রে ব্যালট বক্স ও ব্যালট পেপার ছিনতাই এবং ধাওয়া পাল্টা ধাওয়ার ঘটনা ঘটে। পরে এসব ঘটনায় বেগমগঞ্জ উপজেলার ৫৫টি ও সেনবাগ উপজেলার ২৬টি কেন্দ্রের ভোটগ্রহণ স্থগিত করেন স্ব-স্ব কেন্দ্রের প্রিজাইডিং অফিসারগণ। এরআগে, সকাল সাড়ে ১০টার দিকে একদল দূর্বৃত্ত বেগমগঞ্জ উপজেলার রাজগঞ্জ ইউনিয়নের রাজগঞ্জ সিনিয়র ফাজিল মাদরাসা কেন্দ্রে হামলা চালিয়ে ব্যালট বক্স ছিনতাই করে নেওয়ার চেষ্টা করে। পরে পুলিশের একটি মোবাইল টিম ঘটনাস্থলে পৌঁছে তাদের ধাওয়া করে। এসময় ভোট দিয়ে কেন্দ্র থেকে বের হয়ে যাওয়ার সময় ভয়ে দৌঁড়ে যাওয়ার সময় দেওয়ালের সাথে মাথায় আঘাত লেগে ও গুলিবিদ্ধ সৈয়দ আহমদ নামের আওয়ামী লীগ প্রার্থী এক সমর্থক আহত হন। পরে তাকে উদ্ধার করে হাসপাতালে নেওয়ার পথে তার মৃত্যু হয়।

অপরদিকে, দুপুর ১২টায় বেগমগঞ্জের জিরতলী ইউনিয়নের কেবি উচ্চ বিদ্যালয় কেন্দ্রে সংঘর্ষে ছাত্রলীগ কর্মী শাকিল আহম্মদ (২২) গুলিবিদ্ধ হয়। তাকে উদ্ধার করে নোয়াখালী জেনারেল হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। পরে তাকে উন্নত চিকিৎসার জন্য ঢাকা নেওয়ার পথে কুমিল্লায় মারা যায়। বেগমগঞ্জ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা সাজিদুর রহমান সাজিদ বেগমগঞ্জ উপজেলার রাজগঞ্জ ও জিরতলী ইউনিয়নে দুইজন নিহত হওয়ার বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন। নিহতদের মৃতদেহ উদ্ধার নোয়াখালী জেনারেল হাসপাতালের মর্গে রাখা হয়েছে বলেও জানান।



মন্তব্য চালু নেই