নৌকার সমর্থক হওয়ায় দেড় হাজার মানুষ গ্রাম ছাড়া

পঞ্চম ধাপের ইউপি নির্বাচনে নৌকা প্রতীকের নিবাচর্ন করায় মুন্সীগঞ্জের সদর উপজেলার মোল্লাকান্দি ইউনিয়নের দেড় হাজার সমর্থক ঘর ছাড়া হয়ে পড়েছে। নির্বাচন পরবর্তী সহিংসতায় মোল্লাকান্দি ইউনিয়নের বিভিন্ন গ্রামে সরকার দলীয় নৌকা মার্কা সমর্থকদের বাড়ীতে ব্যাপক ভাংচুর করেছে স্বতন্ত্রপ্রার্থীর সমর্থকরা অভিযোগ করেন সদ্য অনিুষ্ঠিত নির্বাচনে নৌকা প্রতীক পাওয়া চেয়ারম্যান মো: রিপন পাটোয়ারী।

এতে মোল্লাকান্দি ইউনিয়নের বিভিন্ন গ্রামের নৌকা সর্মথকের দেড় হাজার পুরুষ-মহিলা ও শিশু গ্রাম ছাড়া হয়ে মুন্সীগঞ্জ শহরের বিভিন্ন জায়গায় অবস্থান নিয়েছে।

মোল্লাকান্দি ইউনিয়নের নিবার্চনের তফসিল ঘোষণার পর থেকে ইউনিয়নের প্রার্থীদের মধ্যে চলে শক্তির মহড়া, সাথে চলে হামালা, সংর্ঘষ ককটেল হামলা, গুলি বিনিময়ের ঘটনা। আহত হয়েছে শতাধিক। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক পুলিশ সূত্র জানা যায় নিবাচর্নকে ঘিরে এক হাজারের বেশি ককটেল বিস্ফোরণ হয়েছে আর পুলিশ উদ্বার করেছে শতাধিক। আর পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে গুলি করেছে প্রায় দুই শতাধিক রাউন্ড।

এ ইউনিয়নে বিদ্রোহী প্রার্থী মহসিনা হক কল্পনা আনারস প্রতীকে বিপুল ভোটের ব্যবধানে বেসরকারীভাবে বিজয়ী হন। নির্বাচনে জয়ী হওয়ার পর থেকে বিদ্রোহী প্রার্থী আনারস প্রতীক কল্পনা সমর্থকরা মোল্লাকান্দি ইউনিয়নের বিভিন্ন গ্রামে হামলা করছেন বলে অভিযোগ করেন গ্রামবাসী। নির্বাচনে বিদ্রোহী প্রার্থী কল্পনা পাশ করায় আতংকিত হয়ে নির্বাচনী গ্রামগুলোতে পুরুষ শুন্য হয়ে পড়েছে।

২৮ মে বিকাল থেকে হাজার হাজার নৌকা সমর্থক পুরুষ শহরের পুরাতন কাচারীতে এসে অবস্থান নেয়। থেমে থেমে তারা পূনরায় নির্বাচনের দাবী জানিয়ে বিক্ষোভ মিছিল করেন। তাৎক্ষনিক পুলিশ এসে তাদের যার যার গ্রামে নিয়ে উঠিয়ে দিয়ে আসবে বলে প্রতিশ্রতি দেন। বিক্ষোভকারী আসলাম পুলিশকে উদ্দেশ করে বলেন,আপনারা আমাদের এখন বাড়ীতে দিয়ে আসবেন সেটা ঠিক কিন্তু কিছুক্ষন পর আবার তাড়িয়ে দিবে। আমরা গ্রামে থাকলে আমাদের নিরাপত্তা দিবে কে?

নির্বাচন পরবর্তী মোল্লাকান্দি ইউনিয়নের রাজারচর, মুন্সীকান্দি, মোল্লাকান্দি, নতুন আমঘাটা, বড় আমঘাটা, চরডুমুরিয়া, সামারচর, কংশপুড়া, চৈতারচর, মহেষপুর, মাকহাটী, আনন্দপুর, নোয়াদ্দা, ঢালীকান্দি, বেহারকান্দি, সরকার দলীয় নৌকা সমর্থক পুরুষ সহ অনেক মহিলা শিশু এখন ঘর ছাড়া। আর যে ঘরে মহিলা আছে পুরুষ শুন্য থাকায় মহিলারা নানা ভয় আর আতংক আর উৎকন্ঠায় দিন-রাত পার করছেন।

সদ্য অনুষ্ঠিত নিবাচর্নে ভোট বর্জনকারী সরকার দলীয় নৌকা প্রতীক চেয়ারম্যান প্রার্থী রিপন পাটোয়ারী বলেন মহসিনা হক কল্পনার সমর্থকরা পুরো ইউনিয়নে শোডাউন, ককটেল হামলার ভয় দেখায়। অনেক নৌকার সর্মথকের বাড়ীতে হামলা ও হামলা হয়েছে, এমনকি আমার গ্রামের বাড়ীটাও বাদ পরেনি। এসব গ্রাম গুলোতে ছোট ছোট বাচ্চা,মহিলা আর বৃদ্ধরা বসবাস করছেন। রাত হলেই আতংকিত হয়ে পরে গ্রামে থাকা মহিলা ও শিশুরা। আবার অনেক গ্রামে মহিলারও বাড়ীতে নাই। আপনারা ভাই গ্রামে যান নিজ চোখে দেখে আসুন। গ্রামের লোক জন মুন্সীগঞ্জ শহরের কাচাড়ী, মানিকপুর, মুক্তারপুর, মাঠপাড়া বিভিন্ন আত্মীয়-সজন ও আমার বাড়ীতে অবস্থান নিয়েছে। পুলিশ প্রশাসনও নিরাপত্তা দিচ্ছেনা। আমার বাড়ীতে নঙ্গোরখানা খোলা হয়েছে। অন্তত অল্প কিছু খেয়ে বেচে থাকুক।

সদ্য নিবাচির্ত চেয়ারম্যান মহসিনা হক কল্পনা বলেন, তাদেরকে বের করে দেওয়া হয়নি তারা এমনিতে চলে গেছে। পরিস্থতি ঘোলাটে করার জন্য রিপন পাটোয়ারি এমন করছে। আমি কল্পনা বলছি গ্রামের কোন লোক বাহিরে থাকবে না,আমি গ্রামে আসতে বলছি, আমার লোক কেউ কিছু বললে আমি তাদের আইনের কাছে তুলে দিবো। প্রশাসন,আমি রিপন সাথে থাকলেও কোন সমস্যা নাই সবাই মিলে গ্রামের লোক গ্রামে নিয়ে আসবো। আর রিপনের ঘর বাড়ী কে ভাঙ্গছে আমি জানি না।

মুন্সীগঞ্জ পুলিশ সুপার বিপ্লব বিজয় তালুকদার জানান, বাড়ী ছাড়া কত জন হবে তা সঠিক সংখ্যা জানা নেই। তফসিল ঘোষনার পর খেকেই আমাদের পুলিশ এখানে আছে। পক্ষ বিপক্ষ অভিযোগ আছে,বিশেষ করে মোল্লা কান্দি আমাদের পুলিশি ব্যবস্থা নিয়েছি এবং নিব।



মন্তব্য চালু নেই