পদত্যাগ করতে চেয়েছিলেন সুষমা

পদত্যাগ করতে চেয়েছিলেন ভারতের পররাষ্ট্রমন্ত্রী সুষমা স্বরাজ।

ইন্ডিয়ান প্রিমিয়ার লিগে (আইপিএল) দুর্নীতির দায়ে অভিযুক্ত ও পলাতক ললিত মোদিকে ‘মানবিক দিক’ বিবেচনা করে যুক্তরাজ্য থেকে পর্তুগালে যাওয়ার ভিসা পাইয়ে দিতে সাহায্য করার খবর প্রকাশের এক সপ্তাহ আগেই তিনি পদত্যাগের প্রস্তাব দেন।

সূত্রের বরাত দিয়ে এ খবর জানিয়েছে টাইমস অব ইন্ডিয়া অনলাইন।

রাষ্ট্রীয় স্বয়ংসেবক সংঘের (আরএসএস) হস্তপেক্ষে ও মধ্যস্থতায় সুষমার পদত্যাগের প্রস্তাব গৃহীত হয়নি।

সূত্র জানায়, সপ্তাহখানেক আগে একজন ব্রিটিশ এমপি ললিত মোদির ভ্রমণ ডকুমেন্টসহ ই-মেইল করেন সুষমা স্বরাজকে। এ বিষয়ে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি অবগত কি না, তা জানতে চাওয়া হয় ওই ই-মেইলে।

ই-মেইল পাওয়ার পরে প্রধানমন্ত্রী মোদির সঙ্গে দ্রুত যোগাযোগ করেন সুষমা এবং প্রধানমন্ত্রীকে ঘটনার বিস্তারিত জানান।

এরপর ভারতীয় জনতা পার্টির (বিজেপি) নেতৃবৃন্দ ও আরএসএসের প্রতিনিধিদের নিয়ে বৈঠক করেন মোদি। উদ্ভূত পরিস্থিতিতে ভবিষ্যৎ রাজনৈতিক কৌশল নিয়ে আলোচনা হয় বৈঠকে।

এই বৈঠকে অংশ নেন সুষমা। তিনি তার অবস্থান পরিষ্কার করেন। বলেন, ‘আমি পদত্যাগে প্রস্তুত আছি। আমার কোনো কর্মকাণ্ডে সরকার বিব্রতকর অবস্থায় পড়ুক, তা আমি চাই না।’ কিন্তু আরএসএসের প্রতিনিধিরা তাকে আশ্বস্ত করেন, তিনি এমন কোনো ভুল করেননি, যার জন্য পদত্যাগ করতে হবে।

আরএসএসের প্রতিনিধিরা যুক্তি দেন, সুষমা তার অবস্থান পরিষ্কার করেছেন। যুক্তরাজ্য সরকারকে তাদের নিয়মনীতি বজায় রেখে ললিত মোদিকে ভিসা দেওয়ার কথা বলেছেন তিনি। সূত্র জানায়, ওই বৈঠকে সুষমার পক্ষে সরকারের অবস্থান নেওয়ার সিদ্ধান্ত হয়।

রোববার ই-মেইল ফাঁস হয়ে যাওয়ার পর সিদ্ধান্তমতো সুষমা স্বরাজের পক্ষে কথা বলেছেন বিজেপির সভাপতি অমিত শাহ, স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী রাজনাথ সিং এবং আরএসএস নেতা ইন্দ্রেশ কুমার।

সুষমা ও ললিত মোদিকে নিয়ে বিতর্কের সৃষ্টি হয় ব্রিটিশ গণমাধ্যমে প্রকাশিত একটি খবরকে কেন্দ্র করে। পরে ভারতীয় গণমাধ্যমে তা আলোড়ন তোলে।

এরপর ফাঁস হওয়া ডকুমেন্টের জোরে বিরোধী দল কংগ্রেস সুষমার পতদ্যাগের দাবি করে।

মঙ্গলবার কংগ্রেসের পক্ষ থেকে সুষমা ও ললিত মোদির বিষয়ে প্রধানমন্ত্রী মোদির ব্যাখ্যা চাওয়া হয়েছে। কংগ্রেসের অভিযোগ, ললিত মোদিকে প্রধানমন্ত্রী রক্ষার চেষ্টা করছেন, যে কারণে এ বিষয়ে চুপ রয়েছেন।

উল্লেখ্য, ২০১৩ সালে ভারতে আইপিএলে দুর্নীতির দায়ে অভিযুক্ত হন ললিত মোদি। তার বিরুদ্ধে গ্রেফতারি পরোয়ানা জারি রয়েছে এবং ভারতে খাতা-কলমে তিনি পলাতক। এখন যুক্তরাজ্যের লন্ডনে আছেন। স্ত্রীর অস্ত্রোপচারের জন্য পর্তুগালে যাওয়ার ভিসা দরকার হয় তার এবং সেই ভিসা পেতে তিনি পররাষ্ট্রমন্ত্রী সুষমার সাহায্য নেন।



মন্তব্য চালু নেই