পদত্যাগ করবেন লতিফ সিদ্দিকী

সংসদ সদস্য পদ থেকে পদত্যাগ করার ঘোষণা দিয়েছেন প্রাক্তন মন্ত্রী আবদুল লতিফ সিদ্দিকী। তিনি জানিয়েছেন, সংসদ সদস্য পদ রক্ষার জন্য তিনি নির্বাচন কমিশনের বিরুদ্ধে মামলা লড়বেন না। নির্বাচন কমিশন চাইলে তিনি এখনই তাদের কাছে পদত্যাগপত্র জমা দেবেন।

লতিফ সিদ্দিকী অনেকটা আবেগাপ্লুত হয়েই নির্বাচন কমিশনের কাছে সংসদ সদস্য পদ থেকে পদত্যাগের পত্র জমা দেওয়ার কথা বলেন। সংবিধান অনুসারে কোনো সংসদ সদস্য পদত্যাগ করতে চাইলে স্পিকারের কাছে পদত্যাগপত্র জমা দেবেন। পরে অবশ্য লতিফ সিদ্দিকী জাতীয় সংসদের স্পিকারের কাছে পদত্যাগপত্র জমা দেওয়ার কথা বলেন।

লতিফ সিদ্দিকী আরো জানান, তিনি শেখ হাসিনার নেতৃত্বকে সমীহ করেন। তিনি চান প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বে বাংলাদেশ সামনে এগিয়ে যাক। এ জন্য যে সহযোগিতা দরকার তিনি করবেন।

রোববার বেলা ১১টায় লতিফ সিদ্দিকীর সংসদ সদস্য পদ বাতিল বিষয়ে নির্বাচন কমিশনে শুনানি হয়। প্রধান নির্বাচন কমিশনার কাজী রকিবউদ্দীন আহমদের নেতৃত্বে চার নির্বাচন কমিশনার শুনানিতে অংশগ্রহণ করেন। নির্বাচন কমিশন সচিবও শুনানিতে উপস্থিত ছিলেন।

শুনানিতে আওয়ামী লীগের পক্ষ থেকে উপস্থিত ছিলেন অ্যাডভোকেট রিজাউল কবির কাউসার, আওয়ামী লীগের দফতর সম্পাদক আবদুস সোবহান গোলাপ।

শুনানিতে অংশ নিতে রোববার সকাল ১০টা ৫০ মিনিটে লতিফ সিদ্দিকী নির্বাচন কমিশনে উপস্থিত হন। শুনানি শেষে নির্বাচন কমিশন জানায়, দুই সপ্তাহ পর শুনানির রায় ঘোষণা করা হবে।

এর আগে আবদুল লতিফ সিদ্দিকীর সংসদ সদস্য পদ বাতিল বিষয়ে নির্বাচন কমিশনের শুনানির এখতিয়ার চ্যালেঞ্জ করে দায়ের করা রিট খারিজের আদেশ বহাল রেখেছেন আপিল বিভাগ। এর ফলে আবদুল লতিফ সিদ্দিকীকে সংসদ সদস্য পদ বাতিল বিষয়ে শুনানির জন্য নির্বাচন কমিশনে যেতেই হবে বলে জানান আইনজীবীরা। এর পরই লতিফ সিদ্দিকী নির্বাচন কমিশনে উপস্থিত হন।

রোববার সকালে প্রধান বিচারপতি সুরেন্দ্র কুমার সিনহার নেতৃত্বাধীন চার বিচারপতির আপিল বেঞ্চ লতিফ সিদ্দিকীর আবেদনের ওপর ‘নো অর্ডার’ দেন।

আদালতে লতিফ সিদ্দিকীর পক্ষে শুনানি করেন অ্যাডভোকেট কামরুল হক সিদ্দিকী। রাষ্ট্রপক্ষে ছিলেন অ্যাটর্নি জেনারেল মাহবুবে আলম।

এর আগে গত ২০ আগস্ট লতিফ সিদ্দিকীর সংসদ সদস্য পদ বাতিল বিষয়ে নির্বাচন কমিশনের শুনানির এখতিয়ার চ্যালেঞ্জ করে দায়ের করা রিট খারিজ করে দেন হাইকোর্ট। এরপর সুপ্রিম কোর্টের সংশ্লিষ্ট শাখায় আপিল করেন আবদুল লতিফ সিদ্দিকীর আইনজীবীরা।

এর আগে গত ১৬ আগস্ট সংসদ সদস্য পদ নিয়ে নির্বাচন কমিশনের শুনানির এখতিয়ার চ্যালেঞ্জ করে রিট করেন লতিফ সিদ্দিকী। রিটে নির্বাচন কমিশনের দেওয়া চিঠির কার্যকারিতা স্থগিতের আরজি জানানো হয়েছে। ওই চিঠি কেন বেআইনি ঘোষণা করা হবে না- তা জানতে রুলও চাওয়া হয়েছে। নির্বাচন কমিশন, আইনসচিব, নির্বাচন কমিশনের উপসচিব (আইন) ও জাতীয় সংসদের স্পিকারকে রিটে বিবাদী করা হয়েছে।

প্রসঙ্গত, গত বছরের সেপ্টেম্বরে যুক্তরাষ্ট্রে এক অনুষ্ঠানে পবিত্র হজ নিয়ে বিরূপ মন্তব্য করে লতিফ সিদ্দিকী মন্ত্রী পদের পাশাপাশি আওয়ামী লীগ থেকে বহিষ্কার হন। লতিফকে বহিষ্কারের আট মাস পর বিষয়টি জানিয়ে আওয়ামী লীগের পাঠানো চিঠি গত ৫ জুলাই স্পিকার শিরীন শারমিনের হাতে পৌঁছায়।

এ অবস্থায় লতিফের সংসদ সদস্য পদ থাকবে কি না, তা মীমাংসার জন্য আইন অনুযায়ী প্রধান নির্বাচন কমিশনারকে চিঠি দেন স্পিকার শিরীন শারমিন চৌধুরী। তারপর নির্বাচন কমিশনের পক্ষ থেকে লতিফকে ২৩ অগাস্ট শুনানিতে ডাকা হয়। নির্বাচন কমিশনের শুনানির এখতিয়ার চ্যালেঞ্জ করে এ রিট দায়ের করা হয়।



মন্তব্য চালু নেই