পদ্মায় তীব্র স্রোত: দৌলতদিয়ায় নতুন করে ভাঙছে দুই নম্বর ঘাট

পদ্মার স্রোতে ভাঙনের কারণে পাটুরিয়া-দৌলতদিয়া নৌরুটে ফেরি চলাচল স্বাভাবিক হয়নি তিন দিনেও। এই অবস্থায় নির্মাণাধীন দুই নং ফেরিঘাটের এপ্রোচ সড়ক ভেঙে গেছে। ফলে কবে নাগাদ গুরুত্বপূর্ণ এই নৌরুট স্বাভাবিক অবস্থায় ফিরে আসবে তা নিয়ে দেখা নিয়েছে অনিশ্চয়তা।

একটানা তিন দিন ফেরি পারাপার কার্যত বন্ধ থাকায় ঘাটের নদীর দুই তীরে আটকা পড়েছে পাঁচশতাধিক পণ্যবাহী ট্রাক।

ঘাট বিলীন হওয়ার পর রোববার থেকে দৌলতদিয়ার দুই নম্বর ও চার নম্বর ফেরিঘাট মেরামত করা হচ্ছিল। দুই নম্বর ঘাটের নির্মাণ কাজ প্রায় শেষ দিকেই ছিল। কিন্তু মঙ্গলবার দুপুরের পর এই ঘাটের প্রায় ৩০ ফুট রাস্তা র‌্যামের নীচ থেকে ভেঙে যায়। ফলে এই ঘাট কবে সচল হবে তা নিয়ে অনিশ্চয়তা দেখা দিয়েছে।

দৌলতদিয়ার তিন নম্বর ফেরিঘাটটি জোড়াতালি দিয়ে কোন রকমে সচল রাখা হয়েছে। তা দিয়ে সীমিত আকারে ছোট ফেরি দিয়ে অত্যাবশ্যকীয় অ্যাম্বুলেন্স ও ব্যক্তিগত ছোট গাড়ি পারাপার করা হচ্ছে তিন দিন ধরে।

বাংলাদেশ অভ্যন্তরীণ নৌ-পরিবহন কর্তৃপক্ষ প্রকৌশল বিভাগের নির্বাহী প্রকৌশলী নিজাম উদ্দিন পাঠান বলেন, দৌলতদিয়া দুই নম্বর ঘাটের কাছে ঘুর্ণি¯্রােতের কারণে আবার ভাঙন দেখা দিয়েছে। আর চার নম্বর ফেরিঘাট নির্মাণ শেষ হয়েছে। তবে ১৫০ ফুট সংযোগ সড়কের কাজ করছে সড়ক ও জনপথ বিভাগ। এই কাজ শেষ হলে বুধবার এই ঘাট দিয়ে যান চলাচল শুরু হতে পারে।

মঙ্গলবার দৌলতদিয়ার অপর পার পাটুরিয়া ঘাটে গিয়ে দেখা গেছে, আটটি রো রো এবং তিনটি ইউটিলিটি ফেরি অলসভাবে বসে আছে চার ও পাঁচ নম্বর ঘাটে। তিন ও পাঁচ নম্বর ঘাটের একটি পকেট দিয়ে তিনটি ইউটিলিটি এবং তিনটি কেটাইপ ফেরি দিয়ে ছোট যানবাহন ও যাত্রী পারাপার হচ্ছে।

বিআইডব্লিউটিসি আরিচা শাখার উপমহাব্যবস্থাপক শেখ মোহাম্মদ নাসিম জানান, স্বাভাবিক অবস্থায় ১৭টি ফেরি দিয়ে প্রতিদিন পাঁচ হাজার যানবাহন পারাপার হয়। এখন পার হচ্ছে পাঁচ থেকে সাতশ ছোট গাড়ি। রো রো ফেরি বন্ধ থাকায় দিনে সরকার রাজস্ব হারাচ্ছে কমপক্ষে পঞ্চাশ হাজার টাকা।

রো রো ফেরি বন্ধ থাকার কারণ জানতে এই কর্মকর্তা বলেন, দৌলতদিয়া তিন নম্বর ঘাটটির সংযোগ সড়ক দুর্বল। পন্যবাহী ট্রাক বা বড় বাস ওই সড়কে উঠলে তা নদীতে বিলীন হয়ে যেতে পারে। এ কারণে বড় গাড়ি পারাপারের ফেরিগুলো বন্ধ রাখা হয়েছে।

ঘাটে আটকা পড়া চালকদের একটি বড় অংশই গত চার আগস্ট থেকে পাটুরিয়া ঘাটে বসে আছে। চালকদের বিকল্প পথে বঙ্গবন্ধু সেতু হয়ে যেতে বলা হলেও তারা যাচ্ছে না ওই পথে। কারণ জানতে চাইলে একাধিক চালক বলেন, পাটুরিয়া ঘাটে আসতে বিভিন্ন পয়েন্টে পুলিশ ও ওজন নির্ধারণ সেতুতে টাকা দিতে হয়েছে। আবার যদি বঙ্গবন্ধু সেতু বা মাওয়া দিয়ে যায় তবে আবারও পুলিশ এবং ওজন সেতুতে টাকা দিতে হবে। আবার বঙ্গবন্ধু সেতু দিয়ে নির্ধারিত ওজনের বেশি মালামাল নেয়া যায় না। ঘুরে গেলে অতিরিক্ত জ্বালানি খরচের বিষয়টিও আছে। তবে খরচ বাঁচাতে ঘাটে বসে থাকা ট্রাক চালকদের পুঁজি শেষ হয়ে গেছে কারও কারও। অনেকের কাছেই খাওয়া কেনার মত টাকাও আর নেই।



মন্তব্য চালু নেই