পদ্মা সেতুর মাটি পরীক্ষার কাজ শুরু

পদ্মা সেতুর মাটি পরীক্ষার কাজ শনিবার শুরু হচ্ছে। পদ্মা সেতুর মোট ২৬৬টি পিলারের মধ্যে ৬৬টি পিলারের স্থান নির্ধারণ করা হয়েছে। এর মধ্যে পাঁচটি পিলারের পয়েন্ট নিয়ে কিছুটা সমস্যা হওয়ায় কাজে সাময়িক বিলম্ব হচ্ছে। তবে দুএকদিনের মধ্যে এ সমস্যার সমাধান হবে বলে জানিয়েছে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ।

এর আগে নির্দিষ্ট থাকলেও নানা কারণে পদ্মা সেতুর মাটি পরীক্ষার কাজ বৃহস্পতিবার শুরু সম্ভব হয়নি। বুধবার সেতু ভবনের সংশ্লিষ্ট প্রকৌশলী, ঠিকাদার ও সেতু কর্তৃপক্ষের সঙ্গে বৈঠকের পর শনিবার মাটি পরীক্ষা শুরুর সিদ্ধান্ত নেয়া হয়েছে।

পদ্মা সেতুর নির্বাহী প্রকৌশলী (মূলসেতু) দেওয়ান আব্দুল কাদের জানান, বৃহস্পতিবার মাটি পরীক্ষার কাজ শুরু করার কথা থাকলেও বিভিন্ন কারণে তা সম্ভব হয়নি। শনিবার থেকে এই কাজ শুরু হবে।
তিনি জানান, সেতুর মোট ২৬৬টি পিলারের মধ্যে মাওয়া প্রান্তের ৬৬টি পিলারের পয়েন্ট নির্ধারণ করা হয়েছে। তবে ৫টি পিলারের স্থানে দোকানঘর থাকায় এখানে মাটি পরীক্ষার কাজে সাময়িক অসুবিধা হচ্ছে। পদ্মা সেতুর জন্য অধিগ্রহণকৃত এসব জমির মালিককে পিলারের স্থান থেকে দোকানঘরসহ বিভিন্ন স্থাপনা সরিয়ে নিতে বলা হয়েছে। দুএকদিনের মধ্যে এসব স্থাপনা সরিয়ে নেয়া হবে। এসব স্থাপনা সরিয়ে নেয়া হলে পিলারের জন্য মাটি পরীক্ষার কাজে কোন প্রকার সমস্যা হবে না।

দেওয়ান আব্দুল কাদের জানান, চীনে পদ্মা সেতুর পাইল নির্মাণের কাজ চলছে। ৯০ মিটার করে ১০টি পাইল নির্মিত হচ্ছে চীনের নানটোং-এর স্ট্রিল কাটার ফেব্রিকেট ওয়ার্কশপে। এগুলো টেস্টিংপাইল হিসেবে নির্মাণ করা হচ্ছে। পাইলগুলো সঠিক ধারণ ক্ষমতা নিতে পারে কী-না এগুলো পিলারস্থলে পাইলিং করে বসিয়ে পরীক্ষার পর প্রয়োজনীয় চাহিদামতো আরো পাইল নির্মাণ করা হবে। খুব শিগগিরই এসব পাইল দেশে আসবে বলে আশা করা হচ্ছে।

এদিকে প্রি-ফ্রেকেটেট স্থাপনাবাহী চতুর্থ শিপমেন্টের জাহাজ গত শুক্রবার চট্টগ্রাম বন্দরে পৌঁছার পর এখন তা কাস্টমসের আনুষ্ঠানিকতা সম্পন্ন করে ছাড়ের অপেক্ষায় রয়েছে। শিগগিরই মালামাল মাওয়া নিয়ে আসা হবে।

তিনি জানান, চতুর্থ শিপমেন্টের মালামাল গত ১৩ অক্টোবর চীনের সাংহাই বন্দর থেকে বাংলাদেশের উদ্দেশ্যে রওনা হয়।

চীন থেকে আসা পাইলিং ডিজাইন ইঞ্জিনিয়ার, টেকনিক্যাল ইঞ্জিনিয়ার, মাটি পরীক্ষার প্রকৌশলীসহ উচ্চপর্যায়ের প্রকৌশলীরা দেশে পৌঁছার পর ইতিমধ্যেই সেতু স্থল পরিদর্শন করেছেন। তারা প্রতিদিনই সেতুর বিভিন্ন দিক নিয়ে পদ্মা সেতু কর্তৃপক্ষের সঙ্গে কাজ করছেন।

পদ্মা সেতুর ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠান চায়না মেজর ব্রিজের নিয়োগকৃত পদ্মা সেতুর মালামালের লজিস্টিক ক্লিয়ারিং অ্যান্ড ফরওয়ার্ডিংয়ের এজেন্ট এসআই চৌধুরী অ্যান্ড কোম্পানী লিমিটেডের (সিকো গ্রুপ) নির্বাহী পরিচালক আলী আহমেদ জানান, বড় আকারের দুটি ফ্লোটিং ক্রেন, দুটি টাগবোট, একটি অ্যাংকর বোট এবং তিনটি বিশাল আকারের কাটিং ড্রেজার মাওয়ায় পৌঁছার আগে এসব ভারি যন্ত্রপাতির সঙ্গে প্রয়োজনীয় ড্রেজিং পাইপসহ আনুষঙ্গিক যন্ত্রপাতিও মাওয়ায় পৌঁছেছে। এ ছাড়া মাটি পরীক্ষার ছোট আকারের চারসেট গুরুত্বপূর্ণ যন্ত্রপাতি এবং কেমিক্যাল বিমানযোগে চীন থেকে হযরত শাহজালাল বিমানবন্দর হয়ে মাওয়ায় পৌঁছেছে। এতে মূল সেতুর কাজ শুরু হওয়া এখন সময়ের ব্যাপার। সূত্র: বাসস



মন্তব্য চালু নেই