‘পরিস্থিতি সামলাতে’ আবারো ঢাকায় আসবেন নিশা দেশাই

পরিস্থিতি সামাল দিতে আবারো বাংলাদেশ সফরে আসছেন যুক্তরাষ্ট্রের দক্ষিণ এশিয়া বিষয়ক সহকারী পররাষ্ট্রমন্ত্রী নিশা দেশাই বিসওয়াল। টেলিফোন করে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে এমনটাই জানিয়েছেন যুক্তরাষ্ট্রের পররাষ্ট্রমন্ত্রী জন কেরি।

বৃহস্পতিবার রাত ৯টা ৪ মিনিটের দিকে হঠাৎ করেই প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে টেলিফান করেন জন কেরি। মোট ১৬ মিনিট তাদের মধ্যে কথা হয়। কুশল বিনিময়ের পর জন কেরি সম্প্রতি কলাবাগানে হত্যাকাণ্ডের বিষয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করেন। সেই সঙ্গে জুলহাজ মান্নানের হত্যাকারীদের খুঁজে বের করে বিচারের মুখোমুখি করতে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ গ্রহণ করার জন্য প্রধানমন্ত্রীকে অনুরোধ জানান।

এ সময় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাও বিচারের বিষয়ে তাকে আশ্বস্ত করেন। তিনি বলেন, ‘সন্ত্রাসবাদের বিরুদ্ধে আমাদের অবস্থান অত্যন্ত দৃঢ়। এক্ষেত্রে আমরা জিরো টলারেন্স নীতি অনুসরণ করছি। আমাদের আইন শৃঙ্খলরক্ষাকারী বাহিনী কঠোর পরিশ্রম করছে। কিছু ক্লু পাওয়া গেছে। আমরা আশা করি অপরাধীদের খুঁজে বের করে বিচারের মুখোমুখি করতে পারবো।’

প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রসহ বিশ্বের বিভিন্ন দেশের সাথে কাউন্টার টেরোরিজম বিষয়ে আমাদের পারস্পরিক সহযোগিতার সম্পর্ক রয়েছে। এই সহযোগিতার আওতায় ইতোপূর্বে এফবিআই বাংলাদেশে এসেছে। আমি আশা করি কাউন্টার টেরোরিজম বিষয়ক সহযোগিতার ক্ষেত্র অব্যাহত থাকবে। কোনো তথ্য পেলে তা শেয়ার করা হবে।’

তখন জন কেরি বলেন, ‘কাউন্টার টেরোরিজম সংক্রান্ত সহযোগিতা আরো এগিয়ে নিতে যুক্তরাষ্ট্রের দক্ষিণ এশিয়া বিষয়ক সহকারী পররাষ্ট্রমন্ত্রী নিশা দেশাই বিসওয়ালকে বাংলাদেশে পাঠানো হবে।’ তবে কবে তাকে পাঠানো হবে সে বিষয়ে কোনো কথা হয়নি।

উল্লেখ্য, ২০১৩ সালের শেষের দিকে বাংলাদেশের রাজনৈতিক অরাজকতার সময় ঢাকা সফরে আসেন মার্কিন স্টেট ডিপার্টমেন্টের পররাষ্ট্রবিষয়ক সহকারী মন্ত্রী নিশা দেশাই। তিনদিনের ওই সফরে তিনি প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা, তৎকালীন বিরোধীদলীয় নেত্রী বেগম খালেদা জিয়াসহ বিভিন্ন পেশার নেতাদের সঙ্গে বৈঠক করেন। সবার কাছ থেকে তখনকার পরিস্থিতি সম্পর্কে জানতে চান। রাজনৈতিক সঙ্কট নিয়ে বিশেষ কিছু বলেননি তিনি। তবে তার এই সফরকে ঘিরে তখন চাঞ্চল্যের সৃষ্টি হয়েছিল। এরপর তিনি আরো কয়েকবার ঢাকায় এসেছেন।

গত ২৮ ফেব্রুয়ারি বাংলাদেশ প্রসঙ্গে যুক্তরাষ্ট্রের ওয়াশিংটনে এক ব্রিফিংয়ে নিশা দেশাই বলেন, ‘বাংলাদেশের চলমান রাজনৈতিক সঙ্কট নিরসন অভ্যন্তরীণভাবেই করতে হবে। তবে এ ব্যাপারে যুক্তরাষ্ট্র সহযোগিতা করতে প্রস্তুত রয়েছে।’

তিনি বলেছিলেন, ‘সরকারের উচিত বিরোধীদলগুলোকে শান্তিপূর্ণভাবে মত প্রকাশের সুযোগ দেয়া এবং একটি অংশগ্রহণমূলক রাজনৈতিক প্রক্রিয়া গড়ে তোলা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ।’ সেই সঙ্গে তিনি বাংলাদেশে বিএনপি জোটের অবরোধ ও হরতালের নামে সহিংসতা বর্জন করতেও আহ্বান জানিয়েছিলেন।

এছাড়া সন্ত্রাসবাদের বিরুদ্ধে লড়াইয়ে এবং আঞ্চলিক ও বৈশ্বিক নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে বাংলাদেশ ও যুক্তরাষ্ট্র শক্তিশালী মিত্র হিসেবে কাজ করে যাচ্ছে বলে ২০১৫ সালের স্বাধীনতা দিবসের এক অনুষ্ঠানে জানিয়েছিলেন নিশা। ওয়াশিংটনে বাংলাদেশ দূতাবাসের বঙ্গবন্ধু মিলনায়তনে ওই অনুষ্ঠানে তিনি অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন।



মন্তব্য চালু নেই