পাঁচবিবিতে কচুর লতি চাষ করে ৫০০ মানুষের কর্মসংস্থান

তোহা আলম প্রিন্স, পাঁচবিবি (জয়পুরহাট) প্রতিনিধিঃ জয়পুরহাটের পাঁচবিবি উপজেলার কচুর লতি দেশের চাহিদা মিটিয়ে, সীমানা পেরিয়ে ইউরোপ-আমেরিকার সহ অন্তত ২৫টি দেশে রফতানি হচ্ছে ।

এ লতি শুধু এ অঞ্চলের কৃষকদের ভাগ্যেরই পরিবর্তন করেনি, তৈরি করেছে স্থানীয় প্রায় ৫ শতাধিক মানুষের কর্মসংস্থানের সুযোগ। কচুর লতি বর্তমানে এ অঞ্চলের অন্যতম রফতানি পণ্য হওয়ায় প্রায় সারাদিনই পাঁচবিবির বটতলী এলাকায় লতির বাজারে থাকছে ব্যবসায়ীদের আনাগোনা।

ফলে লতি চাষ ও পরিচর্যা থেকে শুরু করে বাজারজাতকরণ, কেনা-বেচা ও গাড়িতে আনা-নেওয়াসহ নানা কাজে প্রতিদিনই প্রায় ৫ শতাধিক মানুষ এর সঙ্গে যুক্ত থাকছেন। এর মাধ্যমেই স্বল্প আয়ের এসব মানুষের সংসার ও ছেলে-মেয়েদের পড়াশোনার খরচ নির্বাহ হচ্ছে। কচুর লতি চাষে একদিকে কৃষকদের ভাগ্য পরিবর্তন, অন্যদিকে কর্মসংস্থানও সৃষ্টি হওয়ায় এ সবজি চাষে ব্যাপক খুশি পাঁচবিবি উপজেলার কৃষক ও শ্রমজীবী মানুষেরা।

তবে কচুর লতি চাষ ও বিক্রি সহ কোনো পর্যায়েই কৃষকরা কৃষি বিভাগের পরামর্শ ছাড়া অন্য কোনো ব্যাংক থেকে সহায়তা পাচ্ছেন না। এমনকি বটতলী বাজারের বিক্রয়ের হাটটিও রয়েছে অস্থায়ী। তার ওপর ওই অস্থায়ী হাটটি পাইকারদের হাতে জিম্মি থাকায় কৃষকরা বঞ্চিত হচ্ছেন তাদের ন্যায্যমূল্য থেকে।

জানা গেছে, চলতি ২০১৫-১৬ অর্থবছরে জয়পুরহাট জেলায় প্রায় ২ হাজার ৪৩৫ হেক্টর জমিতে পানি কচুর লতির আবাদ হয়েছে। যা গত অর্থবছরের চেয়ে ১১০ হেক্টর বেশি। এর মধ্যে শুধু পাঁচবিবি উপজেলায়ই ১ হাজার ৯০০ হেক্টর জমিতে এই লতির আবাদ হয়েছে।

এবার জেলায় লতি উৎপাদনের লক্ষ্যমাত্রা ধরা হয়েছে ৭৩ হাজার মেট্রিক টন। উপজেলার আ. রহমান, শহিদুল, অনিল, রেজাউল, রনি, ছানোয়ার, রবিউল, আমান, আঃ রাজ্জাক সহ শত শত মানুষ লতির বাজারে কাজ করে জীবিকা নির্বাহ করছেন।

অন্যদিকে, কচুর জমিতেও কাজ করছেন অনেকে। তারা দিনমজুর হিসেবে কচু লাগানো, নিড়ানি, সেচ, কচু কেটে ভ্যানযোগে বাজারে নিয়ে আসা, ভ্যান থেকে নামানো, আঁটি বাঁধা, ট্রাকে লোড করাসহ বিভিন্ন পর্যায়ে লতি চাষ ও প্রক্রিয়ার সঙ্গে যুক্ত রয়েছেন।

এ বাজারে দীর্ঘদিন ধরে কাজ করা রবিউল ইসলাম নামে এক শ্রমিক জানান, ২ ছেলে ও স্ত্রীকে নিয়ে তার সংসার, এ বাজারে কাজের সুবাদে যে আয় হয় তা দিয়েই চলে তার সংসার, পাশাপাশি ছেলেদের পড়াশোনাও চলছে ভালোভাবে।

স্থানীয় ব্যবসায়ী আঃ রাজ্জাক, আঃ সোবহান, আবু তালেব, আমিনুল ইসলাম, বাবু, আতিয়ার রহমান, সুমন, আমীর হোসেনসহ অনেকেই জানান, এ লতির বাজার শুধু কৃষক ও ব্যবসায়ীদের ভাগ্য পরিবর্তন করেনি, পাশাপাশি শ্রমজীবী মানুষের কর্মসংস্থানের সুযোগ তৈরি করেছে।



মন্তব্য চালু নেই