পাওনা পরিশোধে ১৫ দিন সময় পেল সিটিসেল ও বাংলালায়ন

বকেয়া পরিশোধে মোবাইল ফোন অপারেটর সিটিসেল প্যাসিফিক বাংলাদেশ টেলিকম লিমিটেড ও ওয়াইম্যাক্স সেবাদাতা প্রতিষ্ঠান বাংলালায়ন কমিউনিকেশন্স লিমিটেডকে ১৫ দিনের সময় বেঁধে দিয়েছে বাংলাদেশ টেলিযোগাযোগ নিয়ন্ত্রক সংস্থা (বিটিআরসি)। অন্যথায় ওই দুই কোম্পানীর স্পেকট্রাম ও ব্যান্ডউইথ বন্ধ করে দেয়ার মতো সিদ্ধান্তও নিয়ন্ত্রক সংস্থা নিতে পারে বলে জানিয়েছে এক ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা। সিটিসেল ও বাংলা লায়নের কাছে রাজস্ব বকেয়া রয়েছে ২৯২ কোটি টাকা। এর মধ্যে সিটিসেলের কাছে ২৫২ কোটি এবং বাংলা লায়নের কাছে ৪০ কোটি।

বিটিআরসির বরাত দিয়ে পত্রিকাটি বলছে, দীর্ঘদিন ধরে সিটিসেল ও বাংলা লায়নের রাজস্ব অপরিশোধিত রয়েছে। বকেয়া রাজস্ব পরিশোধের জন্য এর আগে সিটিসেলকে ৫ থেকে ৬টি এবং বাংলা লায়নকেও ৫ থেকে ৬টি চিঠি দেয়া হয়েছে। তাদের বিষয়ে রেজুলেশনও হয়েছে ৬টি। বকেয়া পরিশোধের জন্য সময় বেঁধে দেয়া হয়েছে বারবার। তবে কোন সময়সীমার মধ্যেই বকেয়া পরিশোধ করতে পারেনি কোম্পানী দুটি। বরং প্রতিবারই তাদের বকেয়ার পরিমাণ বেড়েছে। তাই বিষয়টি নিয়ে বিটিআরসি’র ১৭৫তম কমিশন সভায় আলোচনা হয়। সংস্থাটির পক্ষ থেকে জানানো হয়, ওই সভায় উল্লেখ করা হয়েছে সিটিসেল ও বাংলা লায়নকে বকেয়া পরিশোধের জন্য ৫ থেকে ৬ টি চিঠি দেয়া হয়েছে। ৬টি রেজুলেশন আছে তাদের বিষয়ে। তাই এই দুই অপারেটরের বিষয়ে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নেয়ার কথা ভাবছে বিটিআরসি। তবে এর আগে বকেয়া পরিশোধের জন্য পুনরায় তাদেরকে সময় দেয়ার সিদ্ধান্ত হয়। সিদ্ধান্ত অনুযায়ী ১৫ দিনের সময় বেঁধে দিয়ে সিটিসেল ও বাংলা লায়নকে বকেয়া পরিশোধের জন্য চিঠি দিয়েছে বিটিআরসি’র লিগ্যাল ও লাইসেন্স বিভাগ থেকে। বেঁধে দেয়া সেই ১৫ দিনের সময় শেষ হচ্ছে আগামী ১৮ ডিসেম্বর।

বিটিআরসি’র এক ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা জানান, ওয়াইম্যাক্স সেবাদাতা প্রতিষ্ঠান বাংলা লায়নের বকেয়া আদায়ের জন্য ইতোপূর্বে বেশ কয়েকবার তাগাদা দেয়া হয়েছে। চিঠিও দেয়া হয়েছে বেশ কয়েকবার। তবে প্রতিষ্ঠানটি তাদের বকেয়া পরিশোধ করেনি। তাই গত কমিশন সভায় বাংলা লায়নের বকেয়া পরিশোধের জন্য চূড়ান্ত সময় দেয়ার সিদ্ধান্ত হয়। সেই সিদ্ধান্ত অনুযায়ী তাদের নোটিশ দিয়ে বকেয়া টাকা চাওয়া হয়েছে। এবার তারা টাকা দিতে ব্যর্থ হলে কঠোর অবস্থানে যাবে বিটিআরসি। কঠোর অবস্থানের বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি বলেন, প্রয়োজনে তাদের ব্যান্ডউইথ বন্ধ করে দেয়া হবে। এর আগে যারা বাংলা লায়নের গ্রাহক রয়েছে তাদেরকে অন্য অপারেটরে শিফট করার জন্য গণবিজ্ঞপ্তি দিয়ে জানিয়ে দেয়া হবে। একই অবস্থার কথা বলা হয়েছে সিটিসেলের ক্ষেত্রে। সিটিসেল নির্ধারিত সময়ে টাকা দিতে ব্যর্থ হলে তাদের স্পেকট্রাম বন্ধ করার মতো সিদ্ধান্ত বিটিআরসি নিবে বলে জানান ওই কর্মকর্তা। জানতে চাইলে সিটিসেলের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা (সিইও) মেহবুব চৌধুরী বলেন, বিটিআরসি থেকে আমাদেরকে একটি চিঠি দেয়া হয়েছে। আমরা ওই চিঠির জবাব দেবো। তবে স্পেকট্রাম বাতিলের বিষয়টি ঠিক নয় বলে তিনি জানান।

এদিকে বাংলালায়নের চীফ অপারেটিং অফিসার (সিওও) শফিকুল ইসলাম বলেন, বিটিআরসি’র চিঠিটি আমরা এখনো হাতে পায়নি। তবে বিষয়টি শুনেছি। তিনি আরও জানান, কিছুদিন আগে বিটিআরসি চেয়ারম্যান ও আমাদের চেয়ারম্যানের মধ্যে বৈঠক হয়েছিলো সেখানে অনেক বিষয় সমাধান হয়েছিল। তবে চিঠি পাওয়ার পর আমরা প্রয়োজনে আবার বিটিআরসি’র সাথে বসবো।



মন্তব্য চালু নেই