‘পাকিস্তানকে গণহত্যার দায় স্বীকার করতে হবে’

একাত্তরে বাংলাদেশে গণহত্যা চালানোর বিষয়টি অস্বীকার করে পাকিস্তান মিথ্যাচার করছে মন্তব্য করে বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য মাহবুবুর রহমান বলেছেন, ‘তাদের অবশ্যই ওই অপরাধের দায় স্বীকার করতে হবে।’

প্রাক্তন এই সেনাপ্রধান বলেন, ‘গণহত্যা নিয়ে পাকিস্তান ডাহা মিথ্যাচার করছে। এটা ঠিক হচ্ছে না। তাদেরকে অবশ্যই অপরাধের কথা স্বীকার করতে হবে। তাদের মিথ্যাচারে দেশের মানুষের মতো আমিও ক্ষুব্ধ।’

শনিবার রাজধানীর জাতীয় প্রেসক্লাবে জাতীয়তাবাদী সাংস্কৃতিক দলের উদ্যোগে ‘সন্ত্রাস, জঙ্গিবাদের বিরুদ্ধে বাংলাদেশের করণীয়’ শীর্ষক এক আলোচনা সভায় তিনি এ কথা বলেন।

মানবতাবিরোধী অপরাধের দায়ে ২২ নভেম্বর প্রথম প্রহরে বিএনপি নেতা সালাউদ্দিন কাদের চৌধুরী ও জামায়াতের সেক্রেটারি জেনারেল আলী আহসান মোহাম্মদ মুজাহিদের মৃতুদণ্ড কার্যকর করার পর এক বিবৃতিতে উদ্বেগ জানায় পাকিস্তান।

এর প্রতিক্রিয়ায় ২৩ নভেম্বর বাংলাদেশে পাকিস্তানের হাইকমিশনারকে তলব করে এবং পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের পক্ষ থেকে কড়া ভাষায় লেখা প্রতিবাদলিপি তুলে দেয়া হয়।

এরপর ৩০ নভেম্বর পাকিস্তানে বাংলাদেশের ভারপ্রাপ্ত হাইকমিশনারকে তলব করা হয়। সে দেশের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের এক বিবৃতিতে বলা হয়, ২৩ নভেম্বর ২০১৫ তারিখে দেওয়া প্রতিবাদলিপিতে বাংলাদেশ সরকারের ভিত্তিহীন ও ধারণাপ্রসূত দাবিগুলো প্রত্যাখ্যান করেছে পাকিস্তান সরকার। ওই প্রতিবাদলিটিতে একাত্তরে বাংলাদেশে গণহত্যার বিষয়টি অস্বীকার করে তারা।

২৫ বছরের শোষণ-বঞ্চনার পর বাঙালিদের স্বাধিকারের দাবিকে দমন করতে ১৯৭১ সালের ২৫ মার্চ নির্বিচার হত্যাকাণ্ড শুরু করে পাকিস্তানি সেনাবাহিনী। তখন প্রতিরোধ যুদ্ধে নামে বাঙালিরা। নয় মাসের রক্তক্ষয়ী সংগ্রামের পর স্বাধীন বাংলাদেশের অভ্যুদয় ঘটে।

১৯৭১ এর বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধে পাকিস্তানি সেনাবাহিনী এবং স্থানীয় সহযোগিরা আনুমানিক ৩০ লাখ মানুষ হত্যা করে এবং সম্ভ্রম হারায় দুই লাখ নারী। পাকিস্তানি সেনাবাহিনীর অত্যাচার থেকে বাঁচতে এক কোটি মানুষ ভারতে আশ্রয় নেয়।

আলোচনা সভায় মাহবুবুর রহমান বলেন, ‘এ ধরনের মিথ্যাচারের পর কেবল নিন্দা জানানোই যথেষ্ট নয়। আমি এর প্রতিবাদ করছি। কেননা একাত্তরে পাকিস্তানি বাহিনী এখানে গণহত্যা চালিয়েছে।’ তিনি গণহত্যা নিয়ে পাকিস্তানের মিথ্যাচারের নিন্দা জানান।

আয়োজক সংগঠনের সভাপতি হুমায়ন কবিরের সভাপতিত্বে আরো বক্তব্য রাখেন বিএনপি চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা অ্যাডভোকেট আহমেদ আজম খান, জাতীয় গণতান্ত্রিক পার্টি-জাগপার সভাপতি শফিউল আলম প্রধান, ন্যাশনাল ডেমোক্রেটিক পার্টি-এনডিপির চেয়ারম্যান খন্দকার গোলাম মুর্ত্তোজা, জাগপার সাধারণ সম্পাদক খন্দকার লুৎফর রহমান, ন্যাপের মহাসচিব এম. গোলাম মোস্তফা ভূঁইয়া, এনডিপির মহাসচিব মঞ্জুর হোসেন ঈসা প্রমুখ।



মন্তব্য চালু নেই